স্ত্রী প্রিয়া রহমানের মৃত্যুর মাত্র একদিন ব্যবধানেই না ফেরার দেশে পাড়ি দিলেন সোহানুর রহমান সোহান। বুধবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় মারা যান ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’খ্যাত এই নির্মাতা।
তার অকস্মাৎ মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ গোটা শোবিজ ইন্ডাস্ট্রি। সেই দুঃসংবাদটি পৌঁছে গেছে সুদূর অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে, একসময়ের তুমুল জনপ্রিয় নায়িকা শাবনূরের কানেও।
খবর পেয়েই শোকপ্রকাশ করেছেন তিনি। তবে সেই শোকবার্তায় রয়েছে ক্ষোভ ও আক্ষেপের বার্তাও!
শাবনূরের কথায়, আহা জীবন! অত্যন্ত ভারাক্রান্ত হৃদয়ে বলতে হচ্ছে যে, বরেণ্য চলচ্চিত্র নির্মাতা সোহানুর রহমান সোহান আর আমাদের মাঝে নেই (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। বলা দরকার, গতকাল সোহানুর রহমান সোহানের স্ত্রীও স্ট্রোক করে মারা গেছেন।
ক্ষোভ প্রকাশ করে এই নায়িকা বলেন, সোহান আঙ্কেল যাবার আগে আমার বিরুদ্ধে মিডিয়াতে কিছু উল্টাপাল্টা ও মিথ্যা অপবাদ দিয়ে গেলেন। আমাকে সমাজে হেয় প্রতিপন্ন ও আমার সম্মানহানি করে গেলেন। অনেকেই তার কটু কথার বিরুদ্ধে পাল্টা জবাব দিতে বলেছিলেন। আমি চাইলেই মিডিয়াতে তার এই মিথ্যা অপবাদের প্রতিবাদ করতে পারতাম। এর আগেও উনি কোনো এক সাক্ষাৎকারে আমার বিরুদ্ধে এ রকম বাজে মন্তব্য করেছিলেন। তখনও আমি তার অপবাদের বিরুদ্ধে কোনো পাল্টা জবাব দেইনি।
শাবনূর আরও বলেন, সোহান আঙ্কেল অনেক বয়োজ্যেষ্ঠ, আমার পিতৃতুল্য। আমি কোনো অন্যায় করলে উনি আমাকে শাসন করতে পারতেন। এই তো, কিছুদিন আগেও তার সঙ্গে আমার ফোনে আলাপ হয়েছিল। তখন তাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, আঙ্কেল আপনি কি কোনো কারণে আমার ওপর রাগ করে আছেন? আপনি যে আমার বিরুদ্ধে মিডিয়াতে উল্টাপাল্টা কথা বলতেছেন। তিনি তখন বললেন, তুই আমাদের ইন্ডাস্ট্রির মেয়ে, আমার মেয়ের মতো, তোর ওপর কেন রাগ করতে যাব। আর আমিতো তোর বিরুদ্ধে কোনো বাজে কথা বলিনি। এরপরে আমার বিরুদ্ধে গত সপ্তাহে তিনি আবারও মিথ্যা অপবাদ দিয়ে গেলেন।
বলা দরকার, কদিন আগেই অমর নায়ক সালমান শাহর মৃত্যুবার্ষিকী ছিল। ওই উপলক্ষে একটি টিভি চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে শাবনূরকে জড়িয়ে কিছু মন্তব্য করেন সোহান। সেটাকেই ‘মিথ্যা’ দাবি করেছেন নায়িকা।
সবশেষ শাবনূর বলেন, আমার একটাই দুঃখ, আমি জানতে পারলাম না উনি কেন বা কার চক্রান্তে প্রভাবিত হয়ে আমার পেছনে উঠে পড়ে লেগেছিলেন। যাইহোক, আমি সবার উদ্দেশে একটা কথা বলতে চাই, ভাই জীবনটা খুবই ছোট্ট। এতো দাঙ্গা-ফ্যাসাদ করে কী লাভ? একে অন্যের বিরুদ্ধে না লেগে আসুন আমরা সবাই মিলে মিশে থাকি। গন্তব্যতো একটাই, সবাইকে এই পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করতে হবে। যেহেতু ক্ষমা একটি মহৎ গুণ, তাই উনাকে মাফ করে দিলাম আমি। আমি আঙ্কেল ও তার স্ত্রীর রুহের মাগফিরাত কামনা করছি।
সোহানুর রহমান সোহান বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারে দুই ডজনের বেশি সিনেমা নির্মাণ করেছিলেন। এর মধ্যে রয়েছে ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ (১৯৯৩), ‘স্বজন’ (১৯৯৬), ‘আমার ঘর আমার বেহেশত’, ‘অনন্ত ভালবাসা’ (১৯৯৯)-এর মতো সফল সিনেমা।
বাংলাদেশ সময়: ১৪২৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২৩
এনএটি