‘জীবনানন্দ হয় সংসারে আজও আমি’ আর ‘আজ এই বৃষ্টি কান্না দেখে’-এর মতো চিরায়ত ক্ল্যাসিক গানের শিল্পী নিয়াজ মোহাম্মদ চৌধুরী। নিভৃতচারী এই শিল্পী দীর্ঘদিন পর আসছেন টিভি পর্দায়।
শাস্ত্রীয় সঙ্গীত অথবা উচ্চাঙ্গ সঙ্গীত থেকে শ্রোতাদেরকে একধরনের দূরেই রাখা হয়। শ্রোতাদেরকে সেই ধরনের গান শোনানোর সুযোগ পেয়ে আমি আনন্দিত। আশা করি আমার এবারের গান শ্রোতাদের ভালো লাগবে। চার বছর পর টেলিভিশনে আবারো গান গাওয়া প্রসঙ্গে এমনই বললেন উপমহাদেশের প্রখ্যাত রাগ সঙ্গীত শিল্পী ওস্তাদ নিয়াজ মোহাম্মদ চৌধুরী। ২০০৬ সালে বাংলাদেশ টেলিভিশনের ইত্যাদি ম্যাগাজিন অনুষ্ঠানে সর্বশেষ গান গেয়েছিলেন তিনি। এরপর আর কোনো টিভি অনুষ্ঠানেই তাকে দেখা যায়নি।
দীর্ঘ চার বছর পর ইসমাইল খন্দকারের উপস্থাপনায় ‘আড্ডা’ নামে বিটিভির একটি সঙ্গীতানুষ্ঠানে গান গাওয়ার মধ্য দিয়ে আবারো দর্শকের সামনে হাজির হচ্ছেন গুণী এই সঙ্গীত শিল্পী। তবে এবার ওস্তাদ নিয়াজ মোহাম্মদ চৌধূরী একা নন, তার সঙ্গে একই মঞ্চে গান গেয়েছেন শিল্পীর যোগ্য উত্তরসূরী ফাইয়াজ মোহাম্মদ চৌধুরী। এবার ধ্রুপদ, খেয়ালের বান্দিশ, ঠুমরি, তারানা আর রাগ প্রধান আধুনিক গান পরিবেশন করছেন পিতাপুত্র ।
গত ১৪ অক্টোবর বৃহস্পতিবার রাত ৮টায় জাতীয় শিশু একাডেমি মিলনায়তনে পুরো অনুষ্ঠানটি ধারণ করা হয়। অনুষ্ঠানটির প্রযোজক রফিক হাজরা শেখ জানান, অনুষ্ঠানটি ঈদ উল ফিতরে প্রচারের ল্েযই মূলত নির্মিত হয়েছে। অনুষ্ঠানের শুরুতেই ওস্তাদ নিয়াজ মোহাম্মদ চৌধুরী ও তার ছেলে ফাইয়াজ মোহাম্মদ চৌধুরী একটি খেয়াল বান্দিশ পরিবেশন করেন। এরপর ‘মোরা সাইয়া মোসে বলে না’ ঠুমরীর আঙ্গিকে আবর্তিত যে ধরনের গান উপমহাদেশের প্রতিথযশা শিল্পীরা গেয়েছেন সেইসব গানের মধ্য থেকে কিছু কিছু গানের মুখ ও কিছু কিছু গানের অন্তরা গেয়েছেন ফাইয়াজ মোহাম্মদ চৌধুরী। এরপর নিয়াজ মোহাম্মদ চৌধুর আবারো দুটো গান পরিবেশন করেন। সবশেষে পাটিয়ালা ঘরানার পূর্ব পুরুষদের ওস্তাদ তানরস খান ধ্রুপদের যে বান্দিশটি সম্রাট জাহাঙ্গীরের নামে সম্রাট আকবরকে তথা পুরো মোগল সাম্রাজ্যকে উপহার দিয়েছিলেন সেই বান্দিশটিই পরিবেশন করেন ওস্তাদ নিয়াজ মোহাম্মদ চৌধুরী ও তার ছেলে। আর এরই মধ্যদিয়ে শেষ হয় আড্ডা নামক এই অনুষ্ঠানটি।
অনুষ্ঠানটি দর্শকরা দেখতে পাবেন বিটিভির ঈদ অনুষ্ঠানমালায়।