ঢাকা, রবিবার, ২ ফাল্গুন ১৪৩১, ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৬ শাবান ১৪৪৬

বিনোদন

দেহদান করে গেছেন প্রতুল মুখোপাধ্যায়

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৪৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০২৫
দেহদান করে গেছেন প্রতুল মুখোপাধ্যায়

বাংলা গানের অন্যতম জনপ্রিয় সুরস্রষ্টা ও গীতিকার প্রতুল মুখোপাধ্যায় আর নেই। শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) সকালে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।

মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮২ বছর।

মৃত্যুর আগে দেহদান করার ইচ্ছা করেছিলেন এই গুণী শিল্পী। তার শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে দেহদান করা হবে।

এর আগে পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন প্রতুলের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া নিয়ে সিদ্ধান্ত হবে।

রাজ্য সরকার বলেছে, গীতিকার প্রতুল মুখোপাধ্যায়ের মরদেহ বিকেল চারটা পর্যন্ত রবীন্দ্র সদনের শায়িত থাকবে। সেখানেই শেষ শ্রদ্ধা জানাতে পারবেন সবাই।

অন্ত্রের অস্ত্রোপচারের পর হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন ‘আমি বাংলায় গান গাই’ গানের স্রষ্টা প্রতুল মুখোপাধ্যায়। গত সোমবার রাতে তার শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি হওয়ায় আইসিইউতে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল।

১৯৪২ সালের ২৫ জুন বরিশালে জন্ম গ্রহণ করেন প্রতুল মুখোপাধ্যায়। বাবা প্রভাতচন্দ্র মুখোপাধ্যায় ছিলেন সরকারি স্কুলের শিক্ষক। মা বাণী মুখোপাধ্যায় ও প্রতুলকে নিয়ে দেশভাগের পরে কলকাতায় চলে যান। থাকতে শুরু করে চুঁচুড়ায়। অল্প বয়স থেকেই কবিতায় সুর দিতেন প্রতুল।

কবি মঙ্গলচরণ চট্টোপাধ্যায়ের ‘আমি ধান কাটার গান গাই’ কবিতা দিয়ে শুরু। নিজেও গান লিখতেন। অথচ প্রথাগত কোনও সঙ্গীতশিক্ষা তিনি নেননি। নিজের হৃদয় নিঃসৃত আবেগকেই সুর ও কথার মেলবন্ধনে বেঁধে ফেলতে শিখেছিলেন।

প্রতুলের প্রথম অ্যালবাম ‘পাথরে পাথরে নাচে আগুন’ (১৯৮৮)। তবে সেটি একক অ্যালবাম নয়। অন্য শিল্পীদের সঙ্গে মিলে কাজ করতে হয়েছিল। এরপর ১৯৯৪ সালে ‘যেতে হবে’ প্রতুলের প্রথম একক অ্যালবাম। শেষ অ্যালবাম ‘ভোর’ (২০২২)। সেখানে সংকলিত হয়েছিল শিল্পীর অপ্রকাশিত গানগুলি। তার জনপ্রিয় গানের মধ্যে ‘আমি বাংলায় গান গাই’ ছাড়াও ‘আলু বেচো’, ‘ছোকরা চাঁদ’, ‘তোমার কি কোনও তুলনা হয়’, ‘সেই মেয়েটি’, ‘ফেব্রুয়ারির একুশ তারিখ’-এর মতো গানও শ্রোতার মন জিতেছে বারবার।

তবু কিছু সৃষ্টি তার স্রষ্টার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে মিশে যায়। প্রতুলের জীবনের ‘ম্যাগনাম ওপাস’ এই গান। বাংলা ও বাঙালির আত্মা যেন ওই গানে জলছাপের মতোই থেকে গিয়েছে। নিজের গানে বাদ্যযন্ত্র ব্যবহার কখনওই পছন্দ করেননি। কিন্তু অন্যান্য গানের মতোই ‘আমি বাংলায় গান গাই’ গাওয়ার সময় তার কণ্ঠনিঃসৃত জাদুতে গানের কথার সুরেলা চলন মগ্ন করে রাখত শ্রোতাকে। যতদিন বাঙালি শ্রোতা থাকবে এই পৃথিবীতে বেজে চলবে গানটি। থেকে যাবে সেই গানের অমোঘ অনুরণন।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০২৫
ভিএস/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।