নব্বইয়ের দশকের দাপুটে নায়িকা শাবনূর। এক যুগের বেশি সময় ধরে অস্ট্রেলিয়া বসবাস করেন এই অভিনেত্রী।
প্রায় অর্ধযুগ পর গত বছর আরাফাত হোসাইনের ‘রঙ্গনা’ ও ‘এখনো ভালোবাসি’ নামের দুটি চলচ্চিত্রে যুক্ত হয়েছেন শাবনূর। এম এস ফিল্মসের ব্যানারে চলচ্চিত্র দুটির মহরত অনুষ্ঠিত হয়েছিল রাজধানীর ঢাকা ক্লাবে।
‘রঙ্গনা’র প্রথম লটের শুটিংও হয়েছিল সে সময়। এক বছরের বেশি সময় পার হলেও আর চলচ্চিত্র দুটির আপডেট পাওয়া যাচ্ছিল না। প্রযোজক শাহীন খান গণমাধ্যমকে বলেন, কী হবে বলতে পারছি না। এখন তো শুটিং করাটাও কঠিন। দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। বেশ আগে একবার শাবনূর ম্যাডামের সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছিল। তবে শুটিংয়ের বিষয়ে আলাপ হয়নি। ঈদের পরেও শুটিং হওয়ার সম্ভাবনা নেই। আরো অপেক্ষা করতে চাই।
এদিকে তরুণ নির্মাতা আরাফাত বলেন, গল্পে খানিকটা পরিবর্তন আনতে হয়েছে। গল্পের প্রয়োজনে শাবনূর আপুকে আরো ওজন কমাতে হবে। আপু সেটাই করছেন। এখনো আমরা কোনো শিডিউল ঠিক করিনি। দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক মনে হলে তখন আপুর সঙ্গে যোগাযোগ করব।
এই নির্মাতা আরও বলেন, সিনেমা হবে কি হবে না সেটা এখনই বলা যাবে না। অনেকে বলছেন- আর হবে না, এসব মনগড়া কথা। আমরা কিছু দিন সময় নিচ্ছি শুধু।
এদিকে নির্মাতা চয়নিকা চৌধুরীর পরিচালনায় ‘মাতাল হাওয়া’ সিনেমাতে শাবনূরের অভিনয়ের কথাও উঠেছিল। তবে শেষ পর্যন্ত সিনেমাটির কোনো আপডেট পাওয়া যায়নি।
নব্বইয়ের দশকে শাবনূরের চলচ্চিত্রে যাত্রা শুরু হয়। ১৯৯৩ সালে প্রয়াত নির্মাতা এহতেশামের ‘চাঁদনী রাতে’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে বড় পর্দায় অভিষেক ঘটে তার। এই চলচ্চিত্রে শাবনূরের বিপরীতে অভিনয় করেন সাব্বির।
১৯৯৪ সালে জহিরুল হকের ‘তুমি আমার’ চলচ্চিত্রে সালমান শাহ’র বিপরীতে প্রথম অভিনয় করেন শাবনূর। এই চলচ্চিত্রটির পর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি এই অভিনেত্রীকে। একের পর এক সুপারহিট চলচ্চিত্র উপহার দিয়েছেন ঢালিউডের এই ‘স্বপ্নের নায়িকা’।
সালমান শাহ’র ২৭টি চলচ্চিত্রের মধ্যে ১৪টিতেই জুটি বেঁধে অভিনয় করেছেন শাবনূর। তাদের জুটি ঢাকাই চলচ্চিত্রের অন্যতম সফল জুটি। তাদের বেশিরভাগ চলচ্চিত্রই দর্শক নন্দিত ও ব্যবসাসফল। সালমান শাহ’র মৃত্যুর পর নায়ক রিয়াজ, ফেরদৌস, মান্না ও শাকিব খানের সঙ্গে জুটি বেঁধে পর্দায় হাজির হয়েছেন শাবনূর।
দীর্ঘ ক্যারিয়ারে শাবনূর ১৫০টিরও বেশি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। তার উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রগুলোর মধ্যে রয়েছে- ‘ভালোবেসে বউ আনবো’, ‘বিক্ষোভ’, ‘স্বপ্নের ঠিকানা’, ‘মহামিলন’, ‘তোমাকে চাই’, ‘পৃথিবী তোমার আমার’, ‘বিয়ের ফুল’, ‘আমি তোমারি’, ‘ভালোবাসি তোমাকে’, ‘নারীর মন’, ‘এ বাঁধন যাবে না ছিঁড়ে’, ‘নিঃশ্বাসে তুমি বিশ্বাসে তুমি’, ‘এ মন চায় যে’, ‘ফুল নেবো না অশ্রু নেব’, ‘দিল তো পাগল’, ‘প্রেমের তাজমহল’, ‘শ্বশুর বাড়ি জিন্দাবাদ’, ‘স্বামী স্ত্রীর যুদ্ধ’, ‘ও প্রিয়া তুমি কোথায়’, ‘ভালোবাসা কারে কয়’, ‘সুন্দরী বধু’, ‘দুই বধূ এক স্বামী’, ‘নসিমন’, ‘ব্যাচেলর’, ‘ফুলের মত বউ’, ‘চার সতীনের ঘর’, ‘দুই নয়নের আলো’, ‘মোল্লা বাড়ির বউ’, ‘নিরন্তর, ‘আমার প্রাণের স্বামী’ ইত্যাদি।
২০০৫ সালে মোস্তাফিজুর রহমান মানিক পরিচালিত ‘দুই নয়নের আলো’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান শাবনূর। এছাড়া ‘বউ শাশুড়ির যুদ্ধ’ চলচ্চিত্রের জন্য ২০০৩ সালে সেরা অভিনেত্রী হিসেবে বাচসাস পুরস্কার অর্জন করেন এই অভিনেত্রী।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৩ ঘণ্টা, মার্চ ১৫, ২০২৫
এনএটি