ঢাকা, রবিবার, ২৭ বৈশাখ ১৪৩২, ১১ মে ২০২৫, ১৩ জিলকদ ১৪৪৬

বিনোদন

আজিমপুরে চিরনিদ্রায় শায়িত হবেন মুস্তাফা জামান আব্বাসী

বিনোদন ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫:১৫, মে ১০, ২০২৫
আজিমপুরে চিরনিদ্রায় শায়িত হবেন মুস্তাফা জামান আব্বাসী

বরেণ্য সংগীতশিল্পী, গবেষক, লেখক মুস্তাফা জামান আব্বাসী (৮৭) আর নেই (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। শনিবার (১০ মে) সকালে বনানীর একটি হাসপাতালে মারা যান তিনি।

তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন তার মেয়ে শারমিন আব্বাসী। মৃত্যুকালে তিনি দুই কন্যা এবং বহু ভক্ত, অনুরাগী রেখে গেছেন।

পরিবারের পক্ষ থেকে মুস্তাফা জামান আব্বাসীর নাতি আলভী আশরাফ জানান, ঢাকার আজিমপুরে কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত হবেন মুস্তাফা জামান আব্বাসী। সেখানে বাবা-মায়ের কবরে দাফন করা হবে দেশ বরেণ্য এই সংগীতশিল্পী, গবেষক ও লেখককে। তার আগে বাদ জোহর গুলশান আজাদ মসজিদে মুস্তাফা জামান আব্বাসীর জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় স্বজন ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা উপস্থিত ছিলেন।  

মুস্তাফা জামান আব্বাসী উপমহাদেশের খ্যাতনামা সংগীত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৩৬ সালের ৮ ডিসেম্বর ভারতের কোচবিহার জেলার বলরামপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। তার পিতা ছিলেন পল্লীগীতির কিংবদন্তি শিল্পী আব্বাস উদ্দীন আহমেদ, যিনি এদেশের লোকসংগীতকে বিশ্বের দরবারে তুলে ধরেন।

সংগীতনির্ভর পারিবারিক পরিমণ্ডলেই তার বেড়ে ওঠা। চাচা আব্দুল করিম ছিলেন জনপ্রিয় ভাওয়াইয়া ও ভাটিয়ালি গানের শিল্পী। বড় ভাই বিচারপতি মোস্তফা কামাল ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি ও বিশিষ্ট আইনবিদ। ভাতিজি নাশিদ কামাল এবং ছোট বোন ফেরদৌসী রহমান দুজনেই দেশের বরেণ্য সংগীতশিল্পী হিসেবে সমাদৃত।

পাঁচ দশকেরও বেশি সময় তিনি ফোক মিউজিক রিসার্চ গ্রুপের পরিচালক ও সংগৃহীত গান সংগ্রাহক হিসেবে কাজ করেছেন। তার সংগ্রহে ছিল কয়েক হাজার দুর্লভ লোকগান।

মুস্তাফা জামান আব্বাসী দীর্ঘদিন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক ও শিল্পগোষ্ঠীর মহাব্যবস্থাপক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। বিশ্বের ২৫টি দেশে ভাটিয়ালি, ভাওয়াইয়া, চটকা, বিচ্ছেদি, নজরুলসংগীত পরিবেশন করেছেন। দক্ষিণ কোরিয়ায় আন্তর্জাতিক লোকসংগীত সম্মেলনে অংশ নিয়েছিলেন বাংলাদেশের প্রতিনিধি হয়ে।

একাধারে লেখক, গবেষক, কবি ও সংগীতজ্ঞ মুস্তাফা জামান আব্বাসীর রচিত গ্রন্থের সংখ্যা ২১টি। তার উল্লেখযোগ্য গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে মহানবী (সা.)-কে নিবেদিত ‘মুহাম্মদের না’। ইউনেস্কোর ছত্রচ্ছায়ায় ১১ বছর তিনি বাংলাদেশ ন্যাশনাল কমিটি অব মিউজিকের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন এবং একাধিকবার আন্তর্জাতিক সংগীত সম্মেলনে বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করেছেন।

জীবদ্দশায় নানা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সম্মাননা ও পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন তিনি, যার মধ্যে অন্যতম একুশে পদক।

এনএটি 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।