ছবি দেখে কে বলবে, ঢালিউডের এই অভিনেত্রী বয়স ৭০-এর ঘরে! মনে হচ্ছে নিজের রূপ-লাবণ্যে দিনকে দিন মোহনীয় হয়ে উঠছেন তিনি। বয়সকে আড়াল করে রীতিমতো মুগ্ধতা ছড়াচ্ছেন কিংবদন্তি এই অভিনেত্রী।
বলা হচ্ছে আশির দশকের তুমুল জনপ্রিয় নায়িকা রোজিনার কথা। সামাজিকমাধ্যমে যিনি বেশ সরব। নিত্য নতুন ছবি শেয়ার করে যিনি ভক্তদের প্রশংসায় ভাসেন।
বুধবার (১৪ মে) নিজের ফেসবুকে বেশ কয়েকটি ছবি শেয়ার করেন রোজিনা। যেখানে সাগর পাড়ে তিনি মেরুন রঙের গাউনে হাজির হয়েছেন। সঙ্গে পরেছেন সাদা পুতির চোকার ও ম্যাচিং পুতির কানের দুল। ঠোঁটে হালকা লিপিস্টিক আর চোখে মাসকারা দিয়ে সেজেছেন। চুলগুলো মাথার মাঝে ফুলিয়ে পেছনের দিকে টেনে বাধা।
ছবির সঙ্গে কোনো ক্যাপশন জুড়ে না দেননি রোজিনা। তবে এতেই তার অনুরাগীরা তার রূপের প্রশংসায় পঞ্চমুখ। কেউ আবার কমেন্ট বক্সে জানিয়েছেন শুভ কামনাও।
১৯৭৬ সালে ‘জানোয়ার’ চলচ্চিত্রের সহনায়িকা হিসেবে সিনেমায় নাম লেখান রোজিনা। তবে এফ কবীর পরিচালিত ‘রাজমহল’ সিনেমায় নায়িকা হিসেবে কাজ শুরু করেন। এরপর আর রোজিনাকে পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। একের পর এক ব্যবসা সফল সিনেমা উপহার দিয়েছেন। শাবানা, ববিতা, সুচরিতার পাশাপাশি তিনিও হয়ে ওঠেন একজন সুপারহিট তারকা।
রোজিনা অভিনীত কিছু উল্লেখযোগ্য সিনেমার মধ্যে রয়েছে ‘চোখের মণি’, ‘সুখের সংসার’, ‘সাহেব’, ‘তাসের ঘর’, ‘হাসু আমার হাসু’, ‘হিসাব চাই’, ‘বন্ধু আমার’, ‘কসাই’, ‘জীবনধারা’, ‘সুলতানা ডাকু’, ‘মানসী’, ‘দোলনা’, ‘দিনকাল’, ‘রসের বাইদানী’, ‘জীবনধারা’, ‘রূপবান’, ‘আলোমতি প্রেমকুমার’, ‘হামসে হায় জামানা’সহ প্রায় তিনশত সিনেমা।
চিত্রনায়িকা হিসেবে রোজিনা দেশ-বিদেশে সমাদৃত হন। ১৯৮০ সালে আমজাদ হোসেন পরিচালিত ‘কসাই’ সিনেমায় পতিতা আঙুরীর চরিত্রে অভিনয় করে পান বছরের শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। ১৯৮৮ খ্রিস্টাব্দে মতিন রহমান পরিচালিত ‘জীবন ধারা’ সিনেমায় অভিনয়ের জন্য দ্বিতীয়বারের মত জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে ভূষিত হন রোজিনা।
এ ছাড়া ১৯৮৬ সালে পাকিস্তানে ‘হাম দো হায়’ সিনেমায় অভিনয়ের জন্য পাকিস্তানের ‘নিগার এ্যাওয়ার্ড’ লাভ করে ভারতীয় উপ-মহাদেশে চমক সৃষ্টি করেন এবং বাংলাদেশের জন্য সুনাম বয়ে নিয়ে আসেন। রোজিনা তৎকালীন ভারতের জনপ্রিয় নায়ক মিঠুন, পাকিস্তানের জনপ্রিয় নায়ক নাদিমসহ ভারতীয় উপমহাদেশের বিখ্যাতবহু অভিনেতার বিপরীতে নায়িকা হিসাবে অভিনয় করেছেন।
অভিনয়ের জন্য চিত্রনায়িকা রোজিনা ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কাসহ বিভিন্ন দেশ হতে ছোট বড় প্রায় ১৫ টি অন্তর্জাতিক পুরষ্কার লাভ করে নজির সৃষ্টি করেন। ১৯৯০ সাল পর্যন্ত তার অভিনীত সিনেমার সংখ্যা দাঁড়ায় ২৫৫টি। ১৯৯০ সালের পর তিনি কলকাতায় পাড়ি জমান এবং সেখানে প্রায় ২০টি সফল সিনেমায় নায়িকা হিসাবে অভিনয় করেন। ২০০৫ সালে ‘রাক্ষুসী’ সিনেমার পর আর সিনেমায় কাজ করেননি।
তবে বিরতি ভেঙে ২০২৩ সালে নিজের পরিচালিত সিনেমা ‘ফিরে দেখা’তে হাজির হন রোজিনা। সরকারি অনুদানের সিনেমাটিতে জুটি বাঁধেন এই সময়ের নায়ক নিরব ও নায়িকা স্পর্শিয়া। এছাড়াও ইলিয়াস কাঞ্চনকেও সিনেমাটির গুরুত্বপূর্ণ একটি চরিত্রে দেখা যায়।
এনএটি