ঢাকা: ভারতের রাজস্থানে ধু ধু মরুভূমিতে হেঁটে চলেছে মডেল ইমন ও আলিশা প্রধান। প্রচন্ড গরমে ক্লান্ত তারা।

কিন্তু আলিশার মিডিয়ার যাত্রা শুরুর গল্পটা কি আমরা জানি? আলিশা নিজেই বললেন, ‘আমার ছোটবেলা থেকে কখনই অভিনয়ের ইচ্ছে মাথায় চাপেনি। ২০০৮ সালে পরিবারের সাথে এক বিয়ের অনুষ্ঠানে যাবার পর সেখানেই আমি ‘কোভা’ চকলেটের বিজ্ঞাপনের প্রস্তাব পাই। পরিবারের আপন লোক বলে আমি কাজটি করতে রাজি হই। বিজ্ঞাপনটি প্রচারের পর বেশ সাড়া পাই। এরপর পরিবারের সাথে ২০১০ সালে একবার মুম্বাইয়ে গিয়ে বলিউডের আমির খান এবং কারিনার সরাসরি শুটিং দেখার সৌভাগ্য হয়। তখন দেখলাম তারা কতটা পরিশ্রম করেন। মূলত তাদের এই শ্রম দেখে আমার মনে অভিনয়ের ইচ্ছের ডানা মেলে। সেই থেকেই আমার অভিনয়ের প্রতি নেশা ও শ্রদ্ধাবোধ বেড়ে যায়। ’
এরপর তার ইচ্ছে পূরণের পালা। সাজ্জাদ সুমনের পরিচালনায় এনটিভিতে `দখিনায়নের দিন`, সৈয়দ শাকিলের `স্ক্যান্ডাল`, ফজলুর রহমানের ‘স্বপ্নচোরা’, ফেরদৌস হাসান রানার ডেইলি সোপ ‘দহন’সহ বেশ কিছু টিভি নাটকে অভিনয় করতে দেখা যায়।

আলিশা প্রধান বাংলানিউজকে এ বিষয়ে বললেন, ‘এই স্মৃতি আমি কখনই ভুলব না। চাষী স্যার ফোন করবে আমাকে, আমি এটা ভাবতেই পারিনি। ফোন করে আমাকে বলল আমি চাষী বলছি। কিন্তু প্রথমে আমি চিনতে পারি নাই। যখন বুঝতে পারলাম, তখন আমি বেশ ভয় পেয়েছিলাম। এরপর অভিনয়ের প্রস্তাব এবং চলচ্চিত্রের শুটিং শুরু। বলা যায় আমার স্বপ্নপূরণের দরজা খুলে দেন চাষী স্যার। ’’
বর্তমানে ছবিটির গানের দৃশ্যের চিত্রায়ণ হচ্ছে রাঙামাটিতে। আলিশা বললেন, ‘ছবিটির বেশ কিছু অংশের কাজ শেষ হয়েছে। আমরা ৩মে রাঙামাটিতে এসেছি। ১৩ মে ঢাকায় ফিরে আসার ইচ্ছে আছে। এখানে মোট ৩টি গানের দৃশ্যায়ন সম্পন্ন হয়েছে। আমার নিজেকে এখন অনেক বেশি সৌভাগ্যবান মনে হয়। কারণ আমি চাষী স্যারের কাছে অভিনয়সহ অনেক কিছু শিখতে পেরেছি। হয়তো এটা অনেক শিল্পীর ভাগ্যেই ঘটেনি। ’
অভিনয়ের পাশাপাশি আলিশা ও এবং ‘এ’ লেভেল সম্পন্ন করেছে। দেশের বাইরে উচ্চতর ডিগ্রী সম্পন্ন করার ইচ্ছে আছে তার। চাষী নজরুল ইসলামের ছবিতে চুক্তিবদ্ধ হওয়ার পরপরই আলিশা আরও একটি ছবিতে চুক্তিবদ্ধ হবার কথা ছিল। ইসমত আরা চৌধুরী শান্তি পরিচালিত `মায়া নগর` ছবিটির শুটিং শুরুর কথা ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা আর হয়ে ওঠে নি।
এ বিষয়ে আলিশা বলেন, ‘আমার কোন অভিযোগ নেই। শিডিউল ও চিত্রনাট্য নিয়ে একটু ঝামেলা থাকার কারণে শেষ পর্যন্ত ছবিটিতে আমার অভিনয় করা হয়ে ওঠেনি। ’
বাবা, মা ও তিন ভাইবোন নিয়েই আলিশাদের পরিবার। ভাইবোনের মধ্যে আলিশা মেঝো। বাবা মনির প্রধান ও মা হোসনা প্রধান দুজনই ব্যবসায়ী। প্রায়ই মাসেই এজন্য কখনো বাবা, আবার কখনো মার সাথে দেশের বাইরে বেড়াতে যান আলিশা। বড় বোন ফাইজা প্রধানও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িত এবং ছোট ভাই রায়ানের বয়স ১০ বছর। গ্রামের বাড়ী কুমিল্লাতে হলেও আলিশার বেড়ে ওঠেন ঢাকাতেই।
সবশেষে চলচ্চিত্রে অভিনয় নিয়ে তার ভবিষ্যত পরিকল্পনা জানতে চাইলে আলিশা বললেন, ‘আমি মিডিয়াতে কোন রং ঢং করতে আসি নাই। আমি চলচ্চিত্রে পরিশ্রম দিয়ে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। আর বেছে বেছে ভালো কিছু কাজ করে যেতে চাই। আমার স্বপ্ন অনেক। আমি সেই স্বপ্নপূরণের পথে হাঁটতে চাই। ’
বাংলাদেশ সময়: ১৯২৫ ঘন্টা, ০৯মে, ২০১৩
এমকে/একেএ