‘সন্ধ্যাবাড়ির বারান্দায়’ (২০০৮), ‘মাটির পুতুল’ (২০১০) এবং ‘পুতুল গান’ (২০১২) অ্যালবামের পর সংগীতশিল্পী পুতুল এবার শ্রোতাদের কাছে নিয়ে এলেন ‘পুতুলগান দ্বিতীয় অধ্যায়’। ইংরেজি নববর্ষকে সামনে রেখে সিডি চয়েস থেকে প্রকাশ হলো তার চতুর্থ একক অ্যালবামটি।
বাংলানিউজ : পুরনো ইংরেজি বছরের বিদায়লগ্নে বের হলো আপনার নতুন অ্যালবাম। এটা কি পূর্বপরিকল্পিত?
পুতুল : ‘ক্লোজআপ ওয়ান’ প্রতিযোগিতার মাধ্যমে সংগীতাঙ্গনে আসার পর থেকে প্রতি দুই বছরে একটি করে একক অ্যালবাম বের করে আসছি। তবে ২০১৪ সালে ‘পুতুল গান দ্বিতীয় অধ্যায়’ বের হবে কি-না তা নিয়ে শঙ্কা ছিলো। দুশ্চিন্তা হচ্ছিলো বছরটা না শেষ হয়ে যায়! শেষ পর্যন্ত পুরনো বছর শেষ হওয়ার ক’দিন আগে হলেও অ্যালবামটি বের হওয়ায় আমি খুশি।
বাংলানিউজ : অ্যালবামটির প্রচ্ছদে আপনি পুতুলনাচের পুতুল সেজেছেন। এই পরিকল্পনা কার?
পুতুল : ভাবনাটা আমারই। প্রচ্ছদ নিয়ে আমি বরাবরই ভাবি। ‘মাটির পুতুল’ অ্যালবামরে প্রচ্ছদে মাটির পুতুল সেজেছিলাম। সিটিসেল-চ্যানেল আই মিউজিক অ্যাওয়ার্ডসে ওটা সেরা কাভারের পুরস্কার জিতেছিলো। পুতুলকে মাথায় রেখে পুতুলনাচের আদলে আমরা ভাবনায় এবারের প্রচ্ছদ ডিজাইন করেছেন খালেদ আসিফ।
বাংলানিউজ : নামটা ‘পুতুলগান দ্বিতীয় অধ্যায়’ কেনো?
পুতুল : ‘পুতুলগান’ অ্যালবামের সব গানের কথা, সুর ও সংগীত করেছিলাম আমি নিজে । এর মাধ্যমে আমার সংগীত জীবনে নতুন বাঁক এসেছে। এবারের অ্যালবামেরও সব গানের কথা, সুর-সংগীত আমারই। তাই এবারের অ্যালবামটির নামে ‘দ্বিতীয় অধ্যায়’ কথাটি যুক্ত করেছি। জীবনে যত বছর গাইতে পারবো একের পর এক অধ্যায় নিয়ে শ্রোতাদের সামনে হাজির হবো।
বাংলানিউজ : নতুন গানগুলো নিয়ে কিছু শুনি।
পুতুল : এতে গান রয়েছে মোট ১৩টি। এর মধ্যে ‘না-হাঁটা পথ’ গানের সংস্করণ আছে দুটি। একটি বাংলায়, অন্যটি এবং ‘দ্য পাথ নট ওয়াকড এভার’ শিরোনামে ইংরেজিতে। গানটির ইংরেজি সংস্করণ তৈরি করেছি মিউজিক নিয়ে পড়াশোনার অ্যাসাইনমেন্টের অংশ হিসেবে। এ ছাড়া অ্যালবামে ‘প্রোষিতভর্তৃকার বিলাপ’ শিরোনামে আমার গ্রাম ফেনীর আঞ্চলিক ভাষায় একটি গান গেয়েছি। বাকি গানগুলোর মধ্যে ‘রঙ্গমঞ্চের পুঁথি’ গানে পুঁথির সুরে মঞ্চের আত্মকথা বলার চেষ্টা করেছি। আর ‘গম্ভীরা ৭১’ শিরোনামের গানে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে আমার উপলব্ধি তুলে ধরেছি গম্ভীরার সুরে।
বাংলানিউজ : ইতোমধ্যেই বিভিন্ন মঞ্চে এ গানগুলো পরিবেশন করেছেন। এগুলো নিয়ে শ্রোতামহলে কেমন সাড়া পেলেন?
পুতুল : ইতিবাচক সাড়া পেয়েছি। বিশেষ করে ‘প্রোষিতভর্তৃকার বিলাপ’ গানটি আলাপচারিতার বিভিন্ন অনুষ্ঠানে খালি গলায় শুনিয়েছিলাম। পরে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়েছে এমন গানের অনুষ্ঠানে অনেক দর্শক-শ্রোতার টেলিফোনে এটি শোনার জন্য অনুরোধ করেছেন।
বাংলানিউজ : আপনার সঙ্গে সংগীতায়োজনে যন্ত্রশিল্পী ছিলেন কারা?
পুতুল : সিক্স ব্যান্ডের রেজওয়ান (গিটার ও বেজ) ও সোহাগ (কিবোর্ড), ওয়ারিয়রস ব্যান্ডের ওয়াসিম (ড্রামস) এবং বাংলাদেশ মিলিটারি অর্কেস্ট্রার স্মরণ (একতারা ও ঢোল)। হারমোনিয়াম আমিই বাজিয়েছি। আমি অ্যাকুস্টিক আমেজে কাজ করি, কম্পিউটারে রেডিমেড সংগীতায়োজন করি না। আমার সংগীতায়োজনে রক ব্যাপারটাকে প্রাধান্য দেই। তাই আন্ডারগ্রাউন্ড ব্যান্ডর শিল্পীদের নিয়ে কাজ করি।
বাংলাদেশ সময় : ১৭১৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৯, ২০১৪