লাল পেড়ে সাদা শাড়িতে, দু’হাত ভর্তি লাল চুড়িতে মৌ যখন মঞ্চে আসলেন, চারিদিকে হাজার তারের বীণা বেজে উঠলো যেন! তিনি মঞ্চের মাঝামাঝি ছুটে এলেন, পায়ে রিনিঝিনি করে উঠলো ঘুঙুর। সে সুর কাঁপন তুললো সামনে বসে থাকা হল ভর্তি দর্শকের মনে-প্রাণে।
পাঁচদিন ধরে চলবে এ উৎসব। জাতীয় নাট্যশালার মূল মিলনায়তনের কাঁচের গেট পেরুলেই ফুলে-ফুলে, মোমবাতিতে সজ্জিত অদ্ভুত সন্ধ্যা। ভেতরে চলছিলো ‘হাজার তারের বীণা’। উৎসবের প্রথম নৃত্যনাট্য এটি। সে হিসেবে প্রযোজনাটির প্রতি আলাদা মনোযোগ আছে দর্শকদের।
মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন সাদিয়া ইসলাম মৌ-ও। তবে নৃত্য ভালোবাসে, চর্চা করে এমন মানুষদের ‘হাজার তারের বীণা’র প্রতি আগ্রহের আরও অনেক কারণ রয়েছে।
নৃত্যগুরুমাতা বেগম রাহিজা খানম ঝুনুর নৃত্য পরিচালনা এটি। লেখা ড. এনামুল হকের। সুরারোপ শহীদ আলতাফ মাহমুদের।
মাহমুদুন্নবী, শাহনাজ রহমতউল্লাহ, নাজমুন হুদা ও লীনা নাজমুলের গান জড়িয়ে রয়েছে ‘হাজার তারের বীণা’য়। ১৯৬৭ সালের দিকে প্রথম মঞ্চস্থ হয়েছিলো এ নৃত্যনাট্যটি।
সময়ের পরিক্রমায় যে এর আবেদন এতটুকু কমেনি তার প্রমাণ মিললো ২৭ জানুয়ারির সন্ধ্যায়।
বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের জীবনের বিভিন্ন ঘটনার প্রতীকী উপস্থাপন ‘হাজার তারের বীণা’। কবির প্রেমিকা মন্দিরা হয়ে পুরোটা সময়ই মুগ্ধ করে গেলেন মৌ। কখনও আবেগী, বিরহী, কখনও আবার রুদ্র মূর্তি।
তার সঙ্গে কবি চরিত্র নিয়ে মঞ্চে ছিলেন আব্দুর রশিদ স্বপন। ছিলেন আব্দুল মতিন, ওয়াহিদ উদ্দিন নঈম এবং বাংলাদেশ একাডেমী অব ফাইন আর্টসের একদল নৃত্যশিল্পী।
নতুনভাবে নৃত্য পরিচালনা করেছেন ফারজানা চৌধুরী বেবী।
‘হাজার তারের বীণা’র পর একইমঞ্চে, একইদিনে আরও পরিবেশিত হয় ‘মহুয়া’ ও ‘মায়ার খেলা’। এ নৃত্যনাট্য উৎসব চলবে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত।
বাংলাদেশ সময় : ০০২৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৮, ২০১৫