গৃহবন্দি জাফর পানাহির ‘ট্যাক্সি’ বার্লিন আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের সর্বোচ্চ পুরস্কার স্বর্ণভল্লুক (গোল্ডেন বিয়ার) জিতে নিয়েছে। ১৪ ফেব্রুয়ারি জার্মানির বার্লিনে এই উৎসবের ৬৫তম আসরের পর্দা নামে।
ভিন্নমতাবলন্বী মনোভাবের কারণে ২০১০ সাল থেকে ইরান সরকার গৃহবন্দি করে রেখেছে পানাহিকে। এ কারণে পুরস্কারমঞ্চে দেখা যায়নি তাকে। সোনার ভালুকটি গ্রহণ করেন তার ভাতিজি হানা সায়েদি। ছবিটিতে তাকেও দেখা গেছে। বার্লিনে অশ্রুসিক্ত অনুভূতিতে সে বলেছে, ‘কিছু বলতে পারছি না। খুব আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছি। ’
গৃহবন্দি হওয়ার পর ‘ট্যাক্সি’ হলো জাফর পানাহির তৃতীয় ছবি। এতে ইরানের সমকালীন অবস্থার প্রতি নিজের ভাবনা তুলে ধরেছেন তিনি। এটি নির্মাণের জন্য একটি হলুদ রঙা ট্যাক্সি নিজেই চালিয়েছেন পানাহি, ইরান সরকারের নজরদারি কৌশলে এড়িয়ে যাওয়ার জন্য ব্যবহার করেছেন মাউন্ট ড্যাশবোর্ড ক্যামেরা।
এবারের উৎসবে মর্যাদাজনক পুরস্কার স্বর্ণভল্লুকের জন্য লড়াই করেছে মোট ১৯টি ছবি। ওয়ার্নার হারজগের ‘কুইন অব দ্য ডেজার্ট’ (নিকোল কিডম্যান) ছিলো হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে।
মার্কিন নির্মাতা ড্যারেস অ্যারোনফস্কির নেতৃত্বে কাজ করেছে বিচারক প্যানেল। ‘ট্যাক্সি’র পুরস্কারজয় প্রসঙ্গে ড্যারেন বলেছেন, ‘গল্প বলা ও ভালো কাজ করার ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতা বা প্রতিকূলতা প্রায়ই চলচ্চিত্র নির্মাতাদের উদ্বুদ্ধ করে। আবার কখনও সেসব সীমাবদ্ধতাই কাজকে নষ্ট করে দিতে পারে। এমনকি শিল্পীর মনকে ভেঙে দেয়। মন ভেঙে যাওয়ার পরও এবং ক্ষোভ ও হতাশায় ডুবে থাকা সত্ত্বেও ‘ট্যাক্সি’র মাধ্যমে জাফর পানাহি চলচ্চিত্রের জন্য তৈরি করে দিলেন প্রেমপত্র। চলচ্চিত্র, কমি উনিটি, দেশ ও দর্শকের জন্য তার ভালোবাসায় পরিপূর্ণ এই ছবি। ’
* ট্যাক্সি চালকের আসনে জাফর পানাহি
অন্যান্য শাখায় রৌপ্য ভল্লুক বিজয়ী
সেরা অভিনেত্রী : চার্লোট র্যাম্পলিং (ফোর্টি ফাইভ ইয়ারস)
আন্তর্জাতিক স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র : না ইয়াং-কিল পরিচালিত ‘হোসানা’
সেরা চিত্রনাট্য : এল বোতন ডি নাকার (প্যাট্রিসিও গাজম্যান)
অডি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র : প্লানেট সিগমা (মোমোকো সেতো)
চিত্রগ্রহণ, সম্পাদনা, সংগীত, পোশাক, শিল্প নির্দেশনা : ভিক্টোরিয়া (চিত্রগ্রাহক স্টার্লা ব্র্যান্ড গ্লোভলেন)
বাংলাদেশ সময় : ১১৫৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০১৫