ভারতের জি বাংলা চ্যানেলের ২০১৪ সালের 'সারেগামাপা-গানে গানে তোমার মনে' সঙ্গীত প্রতিযোগিতার কথা নিশ্চয় শ্রোতা-দর্শকের মনে আছে। এ অনুষ্ঠানের চ্যাম্পিয়নের তালিকায় ছিলেন অন্বেষা দত্ত, রানার আপ রিক বসু, তৃতীয় হন আরফিন রানা।
নন্দন পার্কে হাজার হাজার দর্শককে ছন্দের তালে মাতাতে ৪ মার্চ ঢাকায় এসেছেন এ দলটি। সঙ্গে আরো আছে ২০০৬ সালের চ্যাম্পিয়ন অলিভা চক্রবর্তী।
অনুষ্ঠান উপলক্ষে রাজধানীর গুলশানে অবস্থিত ওরিয়েন্টাল হোটেলে তাদেরকে নিয়ে এক সংবাদ সন্মেলনেরও আয়োজন করা হয়। সেখানে বাংলাদেশের জনপ্রিয় ব্যান্ড আর্ক এর ভোকাল হাসানও উপস্থিত ছিলেন। আগামী ৬ মার্চ বিকেল থেকেই শুরু হবে ‘সিমসিম বিস্কুট সারেগামাপা ধামাক্কা লাইভ পাওয়ার্ড বাই ডেকো মিল্ক রিচ বিস্কুট’ শীর্ষক কনসার্ট।
সংবাদ সন্মেলন শেষে কথা হয় কলকাতা থেকে আসা চার অতিথি শিল্পীর সঙ্গে। প্রথমেই ২০১৪ সালের সারেগামাপা চ্যাম্পিয়ন অন্বেষা দত্ত বাংলানিউজকে বলেন, ‘বাংলাদেশ বিমানে এসেছি। প্রথমবার ঢাকা আসা হলো। আমরা সকলে একসঙ্গে এলাম। ভালোই লাগছে। এ অনুষ্ঠানে সফট মেলোডি গান করার ইচ্ছে আছে। ’
অন্বেষার বাবা অজয় দত্ত ও মা নন্দিতা দত্ত। পরিবারে এক বড় ভাই আছে, যার নাম অভিষেক দত্ত। অন্বেষা কলকাতায় ইংরেজীতে পড়াশুনা করছেন। বাংলাদেশে আসার পর গান নিয়ে বলেন, ‘বাংলাদেশের অনেকেরই গান শোনা হয়। রুনা লায়লা আপা ও জেমস ভাইয়ের গান পছন্দ আমার। আর বাবার কাছ থেকেই গানের তালিম নেয়া। বাংলাদেশের ছবিতে প্রস্তাব পেলে গান করার ইচ্ছে আছে। ’
এরপর হোটেলের এক রুমে কথা হলো সারেগামাপার প্রথম রানার আপ রিক বসুর সঙ্গে। সেইন্ট জেভিয়ারস কলেজে রিক ইংরেজী বিষয়ে তৃতীয় বর্ষে পড়াশুনা করছেন। গান শিখেছেন বাবা স্বর্গীয় গৌতম বসুর কাছে। বাংলাদেশে প্রথমবার গান করতে আসা নিয়ে রিক বসু বলেন, ‘বেশ ভালো লাগছে। এখানে সময় পেলে নানা জায়গা ঘুরে দেখার ইচ্ছে আছে। বর্তমানে শুভদীপ মুখার্জীর কাছে ক্ল্যাসিকাল সংগীতের তালিম নিচ্ছি। অনুষ্ঠানে লাগা চুনারী মে দাগ, নীল রং এর দিন এবং বাংলাদেশের আমার ভেতরে বাহিরে শিরোনামের গানগুলো করার ইচ্ছে আছে। দেখা যাক অনুষ্ঠানে কতটুকু সময় পাওয়া যায়। ’
তৃতীয় রানার আপ আরফিন রানা একটু চুপচাপ। পাশ থেকে আমাদের কথা শুনছিলেন। আলোকচিত্রী নূর সবার ছবি ওঠানোর পর রানাকে ইশারা করলেন। এরপর কথা বলার জন্য আসলেন রানা। বললেন, ‘এখানে এসে ইলিশ মাছ খেয়েছি। কিন্তু শুটকি মাছ আমার ভীষণ পছন্দ। বাংলাদেশের আসার আগে পরিকল্পনা করেছি ২১ ফেব্রুয়ারীকে নিয়ে অনুষ্ঠানে একটি গান করব। আর সারেগামাপাতে বিচারক হিসেবে জেমস ভাই এসেছিলেন। তার গাওয়া ভিগি ভিগি ও আলবিদা শিরোনামের গান করার ইচ্ছে আছে। এর বাইরেও নিজের পছন্দের কিছু গান শ্রোতাদের উপহার দিতে চাই। ’
রানা কলকাতা সিটি কলেজে হিসাব বিজ্ঞানে তৃতীয় বর্ষে পড়াশুনা করছেন। বাবা মীর শামসুল আলম ও রাজশ্রী মুখার্জী মীরকে নিয়েই পরিবার। কারণ তার কোনো ভাই বোন নেই। বাংলাদেশী ফোক গানের ভক্ত এই ক্ষুদে তারকা।
সবশেষে কথা হলো ২০০৬ এর সারেগামাপা এর চ্যাম্পিয়ন অলিভা চক্রবর্তীর সঙ্গে। কথার শুরুতেই বললেন, ‘আমি এর আগেও ঢাকা এসেছি। ২০১৩ সালে চট্রগ্রামের একটি অনুষ্ঠানে গান করেছি। বাংলাদেশের মানুষকে আমি ভীষণ পছন্দ করি। আর এখানের আনুশেহর সঙ্গেও আমি একটা অ্যালবামে গান করেছি। আর জেমস, হাবিব ওয়াহিদ ও আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল সাহেবের সুর ও গান পছন্দ আমার। আমি এ অনুষ্ঠানে লতাজি, আশাজি, আরিজিৎসহ নিজের পছন্দের কিছু গান করার ইচ্ছে আছে। ’
পন্ডিত দেননাথ মিশ্র, আচার্য জয়ন্ত ও নেহা রঞ্জনের নিকট তালিম নেন। কলকাতার ছবি ‘সব চরিত্র কাল্পনিক’, ‘আবহমান’, ‘নৌকাডুবি’, ‘নটবর নটআউট’, ‘লাট্টু’, ‘লাভ লাভ লাভ’সহ বেশকিছু ছবিতে প্লেব্যাক করেছেন।
ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি সাস এবং নন্দন পার্ক যৌথভাবে কনসার্টের আয়োজন করেছে। শুধুমাত্র নন্দন পার্কের দর্শনার্থীরা ৬ মার্চ বিকেলে এ অনুষ্ঠান উপভোগ করতে পারবেন।
নন্দন পার্কের হেড অব মার্কেটিং জুবায়েদ আল হাফিজ বলেন, ‘জি বাংলা সারেগামাপা’র শিল্পীরা প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে লাইভ কনসার্টে অংশগ্রহণ করছেন। এরই মধ্যে দর্শকদের মধ্যে যে তারকা এই শিল্পীদের নিয়ে যে উচ্ছাস দেখা যাচ্ছে, এজন্য নন্দন কর্তৃপক্ষ সবার প্রতি কৃতজ্ঞ। ’
অনুষ্ঠানটির অনলাইন মিডিয়া পার্টনার দেশের সর্ববৃহৎ অনলাইন নিউজপোর্টাল বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম।
বাংলাদেশ সময়: ১২৪৬ ঘণ্টা, মার্চ ৫, ২০১৫