আর্ন্তজাতিক খ্যাতিসম্পন্ন অভিনেত্রী ববিতা ক্যারিয়ারে প্রায় তিনশ’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। পেয়েছেন দেশি-বিদেশি পুরস্কার।
বাংলানিউজ : দেশে দেশে এখন বিশ্ব নারী দিবস উদযাপন হচ্ছে...
ববিতা : এটা আমাদের জন্য ইতিবাচক। বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমাদের দেশের নারীরা এগিয়ে গেছে। নারী দিবসে এ দিকটির ওপর পর্যালোচনা হয়। সব দেখে মনে হয়, আমাদের দেশের নারীরা আর পিছিয়ে নেই।
বাংলানিউজ : চলচ্চিত্রে নারীর অবস্থান এখন কোথায়?
ববিতা : ভালোই তো! আমরা যে সময়ে চলচ্চিত্রে এসেছিলাম তখন অনেক প্রতিবন্ধকতা ছিলো। তারপরও তখন পড়াশোনার পাশাপাশি বেশকিছু মেয়ে প্রমাণ করেছে, তারা ভালো অভিনয়শিল্পী। তাদের অনেকে বিভিন্ন ছবিতে লম্বা সময় ধরে কাজ করেছেন। তখন চারপাশের মানুষজন অনেক ধরনের কথা বলেছে। কিন্তু সেগুলো তোয়াক্কা না করে আমরা কাজ করেছি। আমার মা ও নানা-নানীরা সংস্কৃতিমনা ছিলেন। তবে বাবা বা দাদা খুব একটা চাইতেন না আমি অভিনয় করি, তারপরও নিজের চেষ্টায় কাজ করেছি। আমার বোন সুচন্দা আর চম্পাও কাজ করেছে।
বাংলানিউজ : চলচ্চিত্রের নারীকে এখন যেভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে তাতে আপনি সন্তুষ্ট?
ববিতা : কিছু ছবিতে তো ভিন্নভাবে উপস্থাপন করছেই। তবে আমি এটাকে খারাপ বলতে চাই না। কারণ অন্য যে কোনো দেশের তুলনায় আমরা একটা ভালো অবস্থানের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করছি। আর খারাপ সময়ের পর ভালো সময় আসে, চলচ্চিত্রেও সে সুময় শিগগিরই ফিরে আসবে বলে আশা করছি।
বাংলানিউজ : আমাদের এখানে নারী নির্মাতার সংখ্যা সেই অর্থে বাড়েনি। এর কী কী কারণ?
ববিতা : এটা ঠিক আমাদের এখানে তুলনামূলকভাবে নারী নির্মাতার সংখ্যা একটু কম। আসলে বিশ্বের সব দেশেই এ সংখ্যা কম। আমাদের দেশে সুচন্দা ‘হাজার বছর ধরে’র সুবাদে নারী নির্মাতা হিসেবে সুনাম কুড়িয়েছেন। আমার বড় বোন বলে বলছি না। বেশ কিছু পুরস্কারও পেয়েছেন তিনি। এ ছাড়া নারগিস আক্তার, শাহনেওয়াজ কাকলীও কাজ করছেন। তাদেরও সুনাম রয়েছে। সামনে হয়তো আরও অনেক নারী নির্মাতা কাজ করবেন। তারাও দেশের জন্য সুনাম বয়ে আনবে বলে আমি আশাবাদী।
বাংলানিউজ : মেয়েরা এখন কতোটা সুরক্ষিত আর নিরাপদ এ দেশে?
ববিতা : নিরাপত্তা আছে। তা না হলে দেশের বিভিন্ন অফিস-আদালতে কাজ করছে কীভাবে? তবে এ অবস্থার উন্নতির জন্য শিক্ষিত হওয়ার পাশাপাশি নারীদেরকে আরও বেশি চৌকস হতে হবে।
বাংলানিউজ : দৈনন্দিন জীবনযাপনে আমরা নারীকে আলাদা মর্যাদা দিতে পারছি?
ববিতা : আমি তো বলবো পারছি। কারণ সমাজে নারীদের এখন একটা বড় অবস্থান তৈরি হয়েছে। আর অবস্থান তৈরি হওয়ায় নারীদেরকে আলাদাভাবে মর্যাদাও দিতে হচ্ছে। নারীরা শিক্ষা ও কর্মক্ষেত্রে যে পিছিয়ে নেই সেটা প্রমাণ করেছে। আমি তো দেখছি ব্যাংক থেকে শুরু করে বিমানের আসনেও এখন নারীরা সাফল্যের সঙ্গে কাজ করছেন।
বাংলানিউজ : ডিস্ট্রেসড চিলড্রেন অ্যান্ড ইনফ্যান্ট ইন্টারন্যাশনালের (ডিসিআই) রাইট অ্যান্ড সাইট কর্মসূচির আওতায় আপনি শুভেচ্ছাদূত হিসেবে কাজ করছেন...
ববিতা : শুভেচ্ছাদূতের কাজটা বেশ উপভোগ করছি। বিভিন্ন দেশের সেমিনারে আমন্ত্রিত হয়ে কথা বললে আমার বেশ ভালো লাগে। বাংলাদেশের একজন শিল্পীকে ডিসিআই যে মর্যাদা দিয়েছে, এটাও তো আমাদের অর্জন। কারণ তারা খোঁজ-খবর নিয়ে আমাকে এ দায়িত্বের জন্য নির্বাচন করেছেন। এটা বাংলাদেশি নারী হিসেবে গর্বের বিষয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৫১৫ ঘণ্টা, মার্চ ৭, ২০১৫