ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিনোদন

এই শহর আমার পুত্রের জন্য না: আবদুন নূর তুষার

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৩৫ ঘণ্টা, মার্চ ৫, ২০১৬
এই শহর আমার পুত্রের জন্য না: আবদুন নূর তুষার পুত্রের সঙ্গে আবদুন নূর তুষার

জনপ্রিয় উপস্থাপক আবদুন নূর তুষার। বিটিভির ‘শুভেচ্ছা’ ছাড়াও অনেক অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করে খ্যাতি পেয়েছেন।

সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তাৎক্ষণিক বিশ্লেষণমূলক লেখার জন্যও আলোচিত তিনি। পত্র-পত্রিকার পাশাপাশি আজকাল ফেসবুকে নিয়মিত লিখছেন। সাধারণত সমাজের বিভিন্ন অসঙ্গতি নিয়েই লেখেন তুষার।

ভক্তদের সঙ্গে ব্যক্তিগত কথা খুব বেশি ভাগাভাগি করেন না। শনিবার (৫ মার্চ) দুপুরে নিজের পুত্রকে নিয়ে দেওয়া স্ট্যাটাসে কিছু অসঙ্গতির কথা তুলে ধরেছেন সদলাপী এই শিল্পী। মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে আবদুন নূর তুষারের এই বক্তব্য বেশ প্রাসঙ্গিক ও সময়োপযোগী।

তুষার স্ট্যাটাসে লিখেছেন, “…আমার পুত্র বিশেষ শিশু। সে ক্রিকেটের ভীষণ ভক্ত। তার কল্পিত পৃথিবীতে সে সাকিব, মাশরাফি, ধোনি, শচীনকে তার বন্ধু মনে করে। নিজে নিজে খেলার কমেন্ট্রি দেয়। নিজের পরিচয় দেয় ..আই অ্যাম .....ফ্রেন্ড অব সাকিব, মাশরাফি, মুশফিক অ্যান্ড এমএস ধোনি। ’ আমি তাকে নিয়ে ফতুল্লাতেও খেলা দেখতে গেছি। তার মন ভালো করার জন্য মাঝে মাঝে আমি তাকে যখন খেলা চলে না, তখন স্টেডিয়ামে বেড়াতে নিয়ে যাই। কিন্তু এই স্টেডিয়াম বড় নির্দয় এক স্থাপত্যকর্ম। ”

তুষারের এই মন্তব্যের কারণ স্টেডিয়ামগুলোতে প্রতিবন্ধীদের জন্য আলাদা কোনো সুযোগ-সুবিধা নেই। তার দাবি, এই স্টেডিয়াম শারীরিক প্রতিবন্ধী অথবা অটিস্টিকদের জন্য খেলা দেখার সুযোগ দিতে চায় না! তিনি লিখেছেন, ‘এখানে বিশেষ মানুষদের জন্য কোনো আলাদা ব্যবস্থা নাই। যাদের ক্রাচ বা হুইল চেয়ার লাগে, তাদের জন্য কোনো এস্কেলেটর, লিফ্ট বা আলাদা গ্যালারি নাই। হুইলচেয়ার নিয়ে যাওয়ার মতো আলাদা কোনো বাথরুম নাই। হুইলচেয়ার নিয়ে ওঠা নামার জন্য কোন স্লোপ বা র‌্যাম্পও নাই।

ক্রিকেট খেলা দেখতে আমার ছেলে যেতে পারে, কারণ সে হাই ফাংশনিং। তাকে নিয়ে সেই ছোটবেলা থেকে আমি ও আমার পরিবারের সবাই সবখানে যাই। বিদেশে গেলে সে বাসে চড়ে। নিজে নিজে শপিং মল বা স্টেডিয়ামের ওয়াশরুম ব্যবহার করে। ভেন্ডিং মেশিন থেকে কয়েন দিয়ে কোক পেপসি চিপস কিনে অানে। ফুটপাথ ধরে হেঁটে যায়। কিন্তু এই স্টেডিয়ামে এলে তার কষ্ট হয়। ’

মনোক্ষুণ্ন তুষার এ ব্যাপারে আরও লিখেছেন, ‘…দেশ ডিজিটাল হয়। মধ্য আয় হয়। বিদ্যুৎ দিয়ে আলোকিত হয়। ডলার পাউন্ডের গল্প হয়। ফ্লাইওভার দিয়ে শহর অন্ধকার হয়ে যায়। আমি এক অক্ষম পিতা, আমার মতো অারও পিতাদের দুঃখ বুকে নিয়ে রাস্তার দিকে তাকিয়ে ভাবি, এই শহর আমার পুত্রের জন্য না। এই রাস্তা আমার পুত্রের জন্য না। এই ক্রিকেট স্টেডিয়াম, আমাদের বিশেষভাবে জন্মপ্রাপ্ত পুত্র কন্যাদের জন্য না। এই অমানবিক নির্দয় নির্মম স্থাপত্যকর্মকে আমি অভিশাপ দেই। …’

তুষার লেখাটির ইতি টেনেছেন এভাবে- ‘…কিন্তু মানুষ বড় মমতাময়। আমার ছেলে প্রতিটি আউট আর চার ছক্কায় অপরিচিত আংকেল আর আন্টিদের সঙ্গে হাইফাইভ করেছে, মেক্সিকান ওয়েভ দিয়েছে। তাকে একজনও অন্য চোখে দেখে নাই। তার আসনটি দখল করে ছিলো যে যুবক, সে তার দলবল নিয়ে আসন ছেড়ে গেছে। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৩৩০ ঘন্টা, মার্চ ০৫, ২০১৬
এসও/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।