রাজধানীর সেগুনবাগিচার মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘরে মঙ্গলবার (১০ জানুয়ারি) বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথা জানান উৎসব পরিচালক মোহাম্মদ আবীর ফেরদৌস। এ সময় উপস্থিত ছিলেন চলচ্চিত্র নির্মাতা মোরশেদুল ইসলাম, মুনিরা মোরশেদ মুন্নি প্রমুখ।
এ সময় লিখিত বক্তব্যে উৎসব পরিচালক জানান, ঢাকায় মূল উৎসব কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হবে কেন্দ্রীয় পাবলিক লাইব্রেরির শওকত ওসমান মিলনায়তন। উদ্বোধনী দিন ছাড়া প্রতিদিন সকাল ১১ টা, দুপুর ২ টা, বিকেল ৪ টা ও সন্ধ্যে ৬ টায় মোট ৪টি করে চলচ্চিত্র দেখানো হবে। এবারের উৎসবে সারাদেশের মোট ১১ টি ভেন্যুতে ৫৪টি দেশের দুই শতাধিক শিশুতোষ চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হবে। উৎসবের সকল প্রদর্শনী অভিভাবকসহ শিশু-কিশোরদের জন্য উন্মুক্ত।
কেন্দ্রীয় পাবলিক লাইব্রেরি চত্বর ও শওকত ওসমান মিলনায়তনে ২৪ জানুয়ারি (শনিবার) বিকেল ৪টায় উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হবে। এবারের উৎসব উদ্বোধন করবেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি থাকবেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু ও সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। সভাপতিত্ব করবেন উৎসব উপদেষ্টা পরিষদের চেয়ারম্যান মুস্তাফা মনোয়ার। শিক্ষার্থীদের উপস্থিত থাকার জন্য উৎসব কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন স্কুল ও কলেজ কর্তৃপক্ষকে বিশেষভাবে আমন্ত্রণ জানিয়েছে।
উৎসব পরিচালক মোহাম্মদ আবীর ফেরদৌস লিখিত বক্তব্যে আরো জানান, উৎসবের অন্যতম আকর্ষণীয় বিভাগ হিসেবে থাকছে বাংলাদেশী শিশুদের নির্মিত প্রতিযোগিতা বিভাগ। এই বিভাগে এবার ৬০টি চলচ্চিত্র জমা পড়েছিলো, যার মধ্যে নির্বাচিত ২১টি চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত হচ্ছে। এই ২১টি চলচ্চিত্রের মধ্যে ৫টি চলচ্চিত্র পুরস্কার পাবে। পুরস্কার হিসেবে থাকছে ক্রেস্ট, সার্টিফিকেট ও আর্থিক প্রণোদনা। পুরস্কারের জন্য গঠিত ৫ সদস্যের জুরি বোর্ডের সবাইও শিশু-কিশোর অর্থাৎ ছোটরাই বাছাই করবে ছোটদের নির্মিত শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্রগুলো।
প্রতিযোগিতা বিভাগে যাদের ছবি দেখানো হবে তাদেরকে উৎসব কমিটির পক্ষ থেকে প্রতিনিধি হিসেবে উৎসবে অংশ নেয়ার আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এছাড়াও সুবিধাবঞ্চিত এবং শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী শিশুদেরও উৎসব প্রতিনিধি হিসেবে উৎসবে অংশ নেয়ার আমন্ত্রন জানানো হবে।
এবারও ইয়াং বাংলাদেশী ট্যালেন্ট শীর্ষক বিভাগটি রয়েছে যেখানে ১৯ থেকে ২৫ বছর বয়সী তরুণ নির্মাতারা অংশ নেবেন। এছাড়া রয়েছে সোস্যাল ফিল্ম বিভাগ, যেখানে আবহাওয়া ও জলবায়ু নিয়ে নির্মিত চলচ্চিত্রগুলোকে নিয়ে একটি প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে। একই সাথে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা বিভাগে উৎসব কমিটির দ্বারা মনোনীত বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশের মোট ২০টি চলচ্চিত্র অংশ নিবে। এই চলচ্চিত্রগুলো বিচার করার জন্য ভারতের ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অফ ডিজাইনের শিক্ষক শেখর মুখার্জী, চলচ্চিত্রকার অমিতাভ রেজা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গনমাধ্যম এবং সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষিকা সাবরিনা সুলতানাকে সদস্য করে একটি জুরি বোর্ড গঠন করা হয়েছে।
এছাড়া প্রথমবারের মতো বিভিন্ন দেশের শিশুদের বানানো চলচ্চিত্র নিয়ে একটি প্রতিযোগিতা বিভাগ থাকছে, যেখান থেকে একটি চলচ্চিত্রকে পুরষ্কার দেয়া হবে। এবার উৎসবে বিভিন্ন দেশ থেকে প্রায় ১৫জন বিদেশী অতিথি উৎসবে প্রতিনিধি হিসেবে অংশগ্রহণ করবে। রয়েছে বিভিন্ন ইন্টারেক্টিভ সেশন যেখানে প্রতিনিধিরা বিভিন্ন বিখ্যাত ব্যক্তিবর্গের সাথে আলাপচারিতার সুযোগ পাবে।
উৎসবের সমাপনী ও পুরস্কার বিতরনী অনুষ্ঠান হবে ৩০ জানুয়ারি বিকেল ৫টায় কেন্দ্রীয় পাবলিক লাইব্রেরির শওকত ওসমান মিলনায়তনে। সমাপনীতে সব প্রতিযোগিতা বিভাগে অংশ নেয়া চলচ্চিত্রগুলোর মধ্যে পুরস্কারপ্রাপ্তদের নাম ঘোষণা ও পুরস্কার প্রদান করা হবে। সমাপনী অনুষ্ঠানে উৎসব উপদেষ্টা পরিষদের চেয়ারম্যান মুস্তাফা মনোয়ার এবং সিএফএস বাংলাদেশের সভাপতি ড. মুহম্মদ জাফর ইকবালসহ দেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনের গুণী ব্যক্তিবর্গ ও বিভিন্ন দূতাবাসের রাষ্ট্রদূতগণ উপস্থিত থাকবেন।
উৎসব উপলক্ষে একটি লোগো ফিল্ম নির্মিত হয়েছে যা বিভিন্ন চ্যানেলে উৎসবের আগেই প্রদর্শিত হবে। এছাড়াও উৎসব উপলক্ষে প্রকাশিত হবে স্যুভিনির, পোস্টার, টিশার্ট, ব্যাগ ইত্যাদি। এই উৎসবে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে ১০ লক্ষ টাকার আর্থিক অনুদান দেয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১০, ২০১৭
এসও