ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিনোদন

রাজ্জাক-সুচন্দার আবেগী দুপুর

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৫১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২১, ২০১৭
রাজ্জাক-সুচন্দার আবেগী দুপুর রাজ্জাক ও সুচন্দা, ছবি: রাজীন চৌধুরী-বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

সম্মাননা আনতে গিয়ে আবেগের বন্যায় ভেসেছেন কিংবদন্তি অভিনয়শিল্পী নায়করাজ রাজ্জাক ও সুচন্দা। তাদের কথায় মঙ্গলবারের (২১ ফেব্রুয়ারি) দুপরটি হয়ে উঠলো উজ্জ্বল, স্তব্ধ ও নস্টলাজিক। আন্তর্জাতিক ভাষা দিবসের এই আয়োজনে এফডিসিতে স্মরণ করা হলো ‘জীবন থেকে নেয়া’ ছবির কারিগর জহির রায়হানকে। পাশাপাশি সম্মাননা নিলেন রাজ্জাক ও সুচন্দা।   

১৯৬৯ সালে জহির রায়হানের ‘জীবন থেকে নেয়া’ ছবিটি মুক্তি পায়। মুক্তির এতো বছর পর এবার সেই ছবির জীবিত তিন শিল্পীকে নিয়ে পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান করেছে চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতি।

 

এদিন দুপুরে এফডিসির জহির রায়হান কালারল্যাব মিলনায়তনে ছবিটির ওপর আলোচনা অনুষ্ঠান হয়। রাজ্জাক, সুচন্দা, আমজাদ হোসেনের পাশাপাশি বক্তৃতায় অংশ নেন অনেকে। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু।  

রাজ্জাক তার বক্তব্যে দুঃখপ্রকাশ করে বলেন, ‘আমাদের সময় ২১ ফেব্রুয়ারির আগের দিন এফডিসির রাস্তাগুলো পানি দিয়ে ধোয়া হতো। আজ এফডিসিতে ঢুকতে গিয়ে দেখলাম ঝরাপাতা, ময়লা-আবর্জনা। ’

তিনি জহির রায়হান সম্পর্কে স্মৃতিচারখ করে বলেন, ‘তিনি নায়করাজ রাজ্জাককে সৃষ্টি করেছেন। তিনি আমার ওস্তাদ ছিলেন। একদিন জহির রায়হানের মা (চাচী) আমাকে বলেছিলেন, তুমি ওর একটু উপকার করো। কী সেটা? আমার কাজ ছিলো প্রতিটি ঈদের সময় নামাজটা শেষ ওস্তাদের পায়ে ধরে সালাম করা। জহির সাহেব ধর্মকর্ম তেমন করতেন না। পরিবারও কিছু ছিলো না তার কাছে। পকেটে সিগারেট না থাকলে হতাশ হতেন। হঠাৎ সেই লোক আজমীর শরীফ যাওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করলেন। এর আগে কিন্তু এমন ছিলেন না তিনি। ’

সুচন্দা বলেন, “জহির রায়হান মানে সাহস, জহির রায়হান মানে প্রতিবাদ। জহির রায়হান একজন মুক্তিযোদ্ধা। তিনি অস্ত্র নিয়ে যুদ্ধ করেননি। তার অস্ত্র ছিলো কলম ও ক্যামেরা। তার ‘স্টপ জেনোসাইড’ দেখেছেন বিশ্ববাসী। আমি তাকে নিয়ে গর্ব করি। ”

ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম‘জীবন থেকে নেয়া’ ছবি সম্পর্কে সুচন্দা বলেন, ‘ছবিটিতে ব্যবহৃত চাবির গোছাটি কিন্তু আমার সংসারের চারিব গোছা। ’

অনুষ্ঠানে ‘জীবন থেকে নেয়া’ ছবির সহ-রচয়িতা আমজাদ হোসেনকেও সম্মাননা জানানো হয়। জহির রায়হানকে জাতীয় চলচ্চিত্রকার হিসেবে স্বীকৃতি প্রদানের জন্য তার বক্তব্যে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন আমজাদ হোসেন।  

অনুষ্ঠানের শুরুতে অতিথিদের ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান চলচ্চিত্র নির্মাতা মেহের আফরোজ শাওন। এরপর এই ছবির অভিনয়শিল্পী ও কলাকুশলীদের উত্তরীয় পরিয়ে দেন তথ্যমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে আলোচনা পর্বের মাঝে আবৃত্তি করেন শিমুল মোস্তফা ও চিত্রনায়ক অমিত হাসান। ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি’ গানটি পরিবেশন করেন মেহের আফরোজ শাওন।  উপস্থাপনা করেছেন মুশফিকুর রহমান গুলজার।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২১, ২০১৭
এসও  

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।