ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিনোদন

কর্মক্ষেত্রে নারীশিল্পী কতোটা স্বাধীন?

সোমেশ্বর অলি, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪০৫ ঘণ্টা, মার্চ ২৫, ২০১৭
কর্মক্ষেত্রে নারীশিল্পী কতোটা স্বাধীন? চম্পা, নিপুন ও ন্যানসি (ছবি: সংগৃহীত)

‘জগতে যা কিছু সৃষ্টি চির কল্যাণকর/অর্ধেক তাহার করিয়াছে নারী অর্ধেক তাহার নর’— বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের এমন বক্তব্য সমাজের বাস্তবচিত্র থেকেই নেওয়া। নারীর এতো এতো অবদানের পেছনে লুকিয়ে আছে নানারকম বঞ্চনা। একটি কাজ সফল করতে নারীকে খাটতে পুরুষের বেশি। কারণ তার পদে পদে বাঁধা। শোবিজের নারীদের সবসময় ঝলমলে পোশাকে দেখা গেলেও কর্মক্ষেত্রে তারাও পুরোপুরি স্বাধীন নন। হাজারও বঞ্চনার গল্প আছে একেকজন নারীশিল্পীর জীবনে। মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে তাই সামনে চলে আসে একটি যৌক্তিক প্রশ্ন, ‘কর্মক্ষেত্রে নারীশিল্পী কতোটা স্বাধীন?’ 

স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হয় শোবিজের সফল নারীশিল্পীদের সঙ্গে। অভিনেত্রী চম্পা, চিত্রনায়িকা নিপুন আর কণ্ঠশিল্পী ন্যানসির বক্তব্য তুলে ধরা হলো বাংলানিউজের পাঠকের জন্য—  

চম্পা, অভিনেত্রী
বাংলদেশ নয়, যে কোনো দেশেই কর্মক্ষেত্রে নারীকে সাবধানে পা ফেলতে হয়।

চলার পথটা কেমন হবে, সেটা নির্ভর করে সেই নারীর ওপর। একজন সাধারণ নারী ঘণ্টা ধরে অফিসে কাজ করেন, এটা তার প্রাত্যহিক রুটি বা ঘর-সংসারের কাজ করেন। কিন্তু শোবিজের নারীদের বিষয়টি অন্য। তাদের নির্দিষ্ট কর্মঘণ্টা বলে কিছু নেই। রাত-বিরাতেও তাকে বাইরে থাকতে হয়। আমার অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, কর্মক্ষেত্রে নারী মোটামুটি স্বাধীনই। যেমন, আমার মনে হয়না, কাজ করতে গিয়ে আমি নিগ্রহের স্বীকার হয়েছি। তবে তিক্ত অভিজ্ঞতা আছে। এটা সবার জীবনেই থাকে কমবেশি। নারীর প্রতি অবহেলা, নিগ্রহ যুগে যুগে ছিলো। এসবকে পাশ কাটিয়েই এগিয়ে যেতে হয়। তবে স্বাধীনতার প্রশ্নে বলতে পারি, নারী যদি মনে করেন, তবে তিনি স্বাধীন…

নিপুন, চিত্রনায়িকা
কর্মক্ষেত্রে নারীর ওপর কর্তৃত্ব ফলানোর বিষয়টি এখনো রয়ে গেছে। পুরুষতান্ত্রিক সমাজের চিত্রটি এমনই থাকবে। চলচ্চিত্রে কাজ করতে গিয়ে এমন অনেকবারই হয়েছে যে, নারী হওয়ার কারণে হয়তো ঠিকঠাক সম্মানিটা সময় মতো পেলাম না। একজন পুরুষ যতো সহজে তার অধিকার আদায় করে নিতে পারে, নারীর ক্ষেত্রে সেটা একটু কঠিনই। তবে সব ক্ষেত্রে নারীদের অংশগ্রহন বেড়েছে এটা অাশার কথা। নারী স্বাধীন, এটা মোটাদাগে বলা যাবে না।  

একটা বিষয় স্বীকার করি, অভিনয়ের সুবাদে যে পরিচিতি পেয়েছি সেটা ব্যবসার ক্ষেত্রে বেশ কাজে লাগছে। আমার মিটিং বা কাজ অধিকাংশ ক্ষেত্রে পুরুষের সঙ্গেই। চলচ্চিত্র বা ব্যবসা— দুই ক্ষেত্রেই পুরুষের বন্ধুত্বপূর্ণ সহযোগিতার কথা আমি অস্বীকার করতে পারি না। আমি স্বাধীন বলেই, অভিনয়, ব্যবসা, সংসার দু’হাতে সামলে চলেছি।  

ন্যানসি, কণ্ঠশিল্পী
আমি মনে করি, কর্মক্ষেত্রে আমি পুরোপুরি স্বাধীন। সংসারেও তাই। আমার দাদিকে দেখেছি, মাকে দেখেছি। তারাও স্বাধীন ছিলেন। মা হয়তো কামাই রোজগার করতেন না, কিন্তু বাবা সময় তাকে গুরুত্ব দিয়েছেন, স্বাধীনতা দিয়েছেন। কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা দিয়ে বিষয়টি বিচার করিনা আমি। একজন স্বামী তার স্ত্রীকে পুড়িয়ে মেরে ফেললেন— অন্যদের স্বামী তো এটা করছেন না। আমাদের দেশের নারীরা বেশ স্বাধীন। কী সংসার কী কর্মক্ষেত্র নারী স্বাধীনতা চোখে পড়ে। আর এটা তো খুব ইতিবাচক দিক যে, আমার দেশের প্রধানমন্ত্রী একজন নারী।  

বাংলাদেশ সময়: ২০০৬ ঘণ্টা, মার্চ ২৫, ২০১৭
এসও 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।