তার পাঁচ আঙুলের জাদুতে ছন্দের স্পন্দন ওঠে হারমোনিয়ামে। ডানা পায় সুর।
বলছিলাম সৈয়দ আল মোহতাসিন রাফিনের কথা। ১১ বছর বয়সী রাফিন ধানমণ্ডি বয়েজ হাইস্কুলের চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্র। তবে এবয়সেই সঙ্গীতে তার দখল ঈর্ষণীয়। জিতেছে শরীয়তপুর শিল্পকলা একাডেমির একাধিক পুরস্কারসহ বাংলাদেশ শিশু একাডেমির পুরস্কারও।
পুরস্কার শুধু নয়, বেসরকারী বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলে গান করে রাফিন। এছাড়া নিয়মিতভাবে গান করে বাংলাদেশ বেতারে। হারমোনিয়ামের সুর আর তবলার তালে গান তার কণ্ঠে যেন পেয়ে যায় ডানা। খুবই মিষ্টি ওর গানের গলা। সেইসঙ্গে সুর, স্বর আর তালজ্ঞানে পরিশীলিত।
নিজের ইচ্ছেটা সন্তানের মধ্য দিয়ে পূরণের আগ্রহ থেকেই রাফিনের গানে আসা বলে জানালেন রাফিনের বাবা ব্যবসায়ী সৈয়দ শওকত আলী। কথা হলে বাংলানিউজকে তিনি বলেন, ‘রাফিন যখন বড় বড় জায়গাগুলোতে গান গায়, বিভিন্ন পুরস্কার জেতে, তখন ভীষণ ভালো লাগে। ওর মধ্যেই আমি তখন আমার ছেলেবেলাটা খুঁজে পাই। ’
রাফিনের মা সালেহা বেগমও বললেন প্রায় একই কথা: ‘চাকরির ফাঁকে ফাঁকে যখনই সময় পাই, সেটা ওকে দিই। ও যখন ভালো করে, অন্যরা যখন ওর প্রশংসা করে, গর্ব হয় ভীষণ’।
আর বড় বোন তিথি মনির মতে, ‘ভীষণ দুষ্টু হলেও খুব মিষ্টি একটা ভাই রাফিন। ’
চার সদস্যের পরিবারে সবার ছোট্ট সদস্য এ গান পাগল ছেলেটি। তবে এ ছোট্ট সদস্যের অর্জনগুলো নেহাত ছোট নয়। আর শুধু কি গান, ভীষণ লাজুক এ ছেলেটার জোর দখল আছে কথক নৃত্য আর কোরআন তেলাওয়াতেও। এ বিষয়েও রয়েছে তার বিস্তর অর্জন।
শরীয়তপুর কালেক্টরেট কিশলয় কেজি স্কুলে পাঠ শুরু করা এ শিক্ষার্থীর গানের হাতেখড়ি নার্সারি থেকেই। হাতের লেখা আর চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায়ও একবার প্রথম হয়েছে জেলা পর্যায়ে। তবে ভূতের গল্প আর ফুটবল-ভালোবাসা ছেলেটির লক্ষ্য যেন ফুটবলের মতোই নির্দিষ্ট।
নজরুলগীতি আর আধুনিক গানে পারদর্শী রাফিন শুধু গান নয়, থাকতে চায় মানবসেবাতেও। সে লক্ষ্যে বাবা-মায়ের স্বপ্ন পূরণে ডাক্তার হতে চাইলেও জোর দখল রাখতে চায় গানের জগতে। তাই তো এক বাক্যেই বলতে পারে, ‘মানবসেবা তো অবশ্যই, তবে পাশাপাশি গানের জগতেও নক্ষত্র হতে চাই’।
বাংলাদেশ সময়: ১২৩৮ ঘন্টা, ডিসেম্বর ০৫, ২০১৭
এইচএমএস/জেএম