ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

বিনোদন

অর্ধনারীশ্বরে শুরু, বাঁশির সুরে হবে শেষ

ফিচার রিপোর্টার | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩০, ২০১৭
অর্ধনারীশ্বরে শুরু, বাঁশির সুরে হবে শেষ ওড়িশি নৃত্য। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: মোহন বীণার পরিবেশনা নিয়ে মঞ্চে এলেন পণ্ডিত বিশ্বমোহন ভট্ট। বললেন, পৃথিবীর সব থেকে বড় উচ্চাঙ্গসংগীত উৎসবে এসে অনেক ভালো লাগছে। মুগ্ধ হচ্ছি বাঙালিদের সংগীত প্রেম দেখে।

মোহন বীণার দারুণ সে সুরে মোহাচ্ছন্ন হলেন গ্যালারির সমস্ত দর্শক। পাঁচ দিনব্যাপী বেঙ্গল উচ্চাঙ্গসংগীত উৎসবের ৫ম ও শেষ দিনের আয়োজনে রাতের প্রথম ভাগে এই পরিবেশনাই ছিলো আবাহনী মাঠে সবার পছন্দের শীর্ষে।

উৎসবের শেষদিন বলে শনিবার (৩০ ডিসেম্বর) রাতে এসেছেন অনেকেই। আবার অনেকেই এসেছেন পণ্ডিত হরিপ্রসাদ চৌরাসিয়ার বাঁশির সুরে মুগ্ধ হতে।

শেষ দিনের অনুষ্ঠান শুরু হয় নৃত্য দিয়ে। বিদুষী সুজাতা মহাপাত্র মঞ্চ আলোকিত করেন ওড়িশি নৃত্য দিয়ে। পরিবেশনাটি ছিলো অর্ধনারীশ্বর ও রামায়ণ-লঙ-এ দুই পর্বে বিভক্ত।

নৃত্য শেষে শুরু হয় বেঙ্গল উচ্চাঙ্গসংগীত উৎসবের সমাপনী অধিবেশন। এ অংশে অ্যামিরেটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের সভাপতিত্বে মঞ্চে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ব্র্যাকের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক স্যার ফজলে হাসান আবেদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও ছায়ানটের সভাপতি ড. সনজীদা খাতুন, ইমপ্রেস টেলিফিল্ম ও চ্যানেল আই-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফরিদুর রেজা সাগর এবং আবাহনী লিমিটেডের ভাইস প্রেসিডেন্ট কাজী নাবিল আহমেদের পক্ষে তার মা আমিনা আহমেদ।
বেঙ্গল উচ্চাঙ্গসংগীত উৎসবের পঞ্চম দিন।  ছবি: রাজীন চৌধুরী
সভাপতির বক্তব্যে ড. আনিসুজ্জামান বলেন, বাংলাদেশের হারিয়ে যাওয়া উচ্চাঙ্গসংগীতের ঐতিহ্যকে পুনরুদ্ধারে কাজ করছে বেঙ্গল ফাউন্ডেশন। এই প্রতিষ্ঠানের চেষ্টায় প্রতি বছর এ উৎসব নিজেকে ছাড়িয়ে যাচ্ছে এটাও গর্বের ব্যাপার। যতদিন বেঁচে আছি ততদিন এই অনুষ্ঠান উপভোগ করতে পারলে আরও ভালো লাগবে।

প্রধান অতিথি স্যার ফজলে হাসান আবেদ বলেন, শিল্প-সাহিত্যে বিনিয়োগ সবচেয়ে লাভজনক বিনিয়োগ। তাই অনেক আশংকা কাটিয়ে এই উৎসব আয়োজন করতে পারা অনেক ইতিবাচক ব্যাপার।

ছায়ানট বিদ্যায়তনের সভাপতি ড. সনজীদা খাতুন বলেন, উৎসব আমাদের জন্য খুব জরুরি। কিন্তু শুধুমাত্র ঢাকায় উৎসব আয়োজন করলে হবে না। সংগীত ও সংস্কৃতির উৎসব সারা দেশে নিয়ে যেতে হবে। এধরনের অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আমাদের পল্লি গানের সুর তুলে ধরতে হবে এবং মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দিতে হবে। তবেই আমাদের মধ্যে মমত্ববোধ জেগে উঠবে। কারণ, মানুষকে ভালোবাসতে পারাই মানুষের সবচেয়ে বড় গুণ।

ফরিদুর রেজা সাগর আয়োজকসহ সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, যে দেশের প্রধানমন্ত্রী এতো বড় একজন সংগীত অনুরাগী সে দেশের সংগীত উৎসব পৃথিবীর সবচেয়ে বড় উৎসব না হয়ে পারে না। বেঙ্গল উচ্চাঙ্গসংগীত উৎসব এখন বিশ্বের বৃহত্তম সংগীতের আসর।

জেমকন গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান এবং আবাহনী ক্লাবের ভাইস প্রেসিডেন্ট কাজী নাবিল আহমেদের পক্ষে মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন তার মা আমিনা আহমেদ। সবাইকে অভিবাদন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এই উৎসবে সহযোগী হতে পেরে আবাহনী ক্লাবও গর্বিত। এই উৎসবের জন্য আবাহনী মাঠের দরজা পুনরায় খুলে দিতে আবাহনী ক্লাব প্রস্তুত। আমরা আশা করবো সামনে বছর উচ্চাঙ্গসংগীত উৎসব এখানেই আয়োজিত হবে। ’

সমাপনী অধিবেশনের স্বাগত বক্তব্য দেন বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আবুল খায়ের। তিনি অনুষ্ঠান আয়োজনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানান এবং আয়োজনের সহযোগী সব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।  

তিনি বলেন, আমি শুধু পরিকল্পনার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকি। কিন্তু এই উৎসব বাস্তবায়ন করেন বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক লুভা নাহিদ চৌধুরী।

সবশেষে তিনি বিশেষভাবে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে।

পঞ্চম দিনে আরও থাকছে ব্রজেশ্বর মুখার্জির খেয়াল, পণ্ডিত কুশল দাস ও কল্যাণজিত দাসের সেতার, পণ্ডিত কৈবল্যকুমারের খেয়াল। উৎসবের সমাপ্তি হওয়ার কথা আছে পণ্ডিত হরিপ্রসাদ চৌরাসিয়ার বাঁশির সুরে।

বাংলাদেশ সময়: ০১০৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩১, ২০১৭
এইচএমএস/জেআইএম/জিপি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।