বুধবার (১৭ এপ্রিল) সন্ধ্যায় সংবাদমাধ্যমে একটি বিবৃতি পাঠিয়ে এই ক্ষমাপ্রার্থনা করেন একাধিকবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারজয়ী এ অভিনেতা।
গত সোমবার (১৫ এপ্রিল) পশ্চিমবঙ্গের রায়গঞ্জে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের দল তৃণমূল কংগ্রেসের হয়ে ফেরদৌস প্রচারণায় অংশ নিলে কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন বিজেপি অভিযোগ দেয় নির্বাচন কমিশনে।
এই বিতর্কের মুখে মঙ্গলবারই দেশে ফেরেন ফেরদৌস। তবে তারপর থেকে এই অভিনেতার মোবাইলে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়।
শেষমেষ বিষয়টি নিয়ে নিজেই বিবৃতি দিয়ে ফেরদৌস বলেন, ‘অভিনয়শিল্প আমার একমাত্র নেশা ও পেশা। অভিনয়শিল্পের মাধ্যমে বাংলা ভাষাভাষী সকলের মধ্যে মেলবন্ধন তৈরিতে সর্বদা কাজ করার চেষ্টা করেছি। আমার ভাবতে ভালো লাগে আমি দুই বাংলায় সমানভাবে জনপ্রিয়। দুই বঙ্গের মানুষের সংস্কৃতি ও জীবনাচারে অনেক সাদৃশ্য রয়েছে। আবার ভারত বহু কৃষ্টি-কালচারের সমন্বয়ে সমৃদ্ধ একটি দেশ। ১৯৭১ সালে আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে প্রতিবেশী দেশ হিসাবে ভারতের অবদান আমরা কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করি। পাশাপাশি ভারতের জনগণের ত্যাগ-তিতিক্ষা আমাদের চিরঋণী করে রেখেছে। পশ্চিমবঙ্গের সাংস্কৃতিক অঙ্গনের সাথে আমার সম্পর্ক বহুদিনের। এখানের সাংস্কৃতিক অঙ্গনের অনেক শিল্পী, সাহিত্যিক আমার বন্ধু। যাদের সঙ্গে আমি সবসময়ে হৃদ্যতা অনুভব করি। এজন্য বিভিন্ন সময় কারণে-অকারণে আমি এখানে চলে আসি। ’
নির্বাচনী প্রচারণায় নামা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ভারতে জাতীয় নির্বাচন হচ্ছে। বিশ্বের সর্ববৃহৎ গণতান্ত্রিক দেশের এই নির্বাচন পূর্বের মতো সারাবিশ্বে সাড়া ফেলেছে। এই সময়ে আমি ভারতে অবস্থান করছিলাম। সবার মতো আমারও আগ্রহের জায়গায় ছিল এই নির্বাচন। ফলে ভাবাবেগে তাড়িত হয়ে পশ্চিমবঙ্গের একটি নির্বাচনী প্রচারণায় আমি আমার সহকর্মীদের সঙ্গে অংশগ্রহণ করি। এটা পূর্বপরিকল্পনার কোনো অংশ ছিল না। কেবল আবেগের বশবর্তী হয়ে আমি অংশগ্রহণ করেছি। কারও প্রতি বিশেষ আনুগত্য প্রদর্শন বা কোনো বিশেষ দলের প্রচারণার লক্ষ্যে নয়, আবার কারও প্রতি অসম্মান প্রদর্শন করাও আমার উদ্দেশ্য নয়। ভারতের সকল রাজনৈতিক দল এবং নেতার প্রতি আমার সম্মান রয়েছে। আমি ভারতের আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। ’
ক্ষমা চেয়ে ফেরদৌস বলেন, ‘আমি আগেও বলেছি পশ্চিমবঙ্গের মানুষের প্রতি আমার ভালোবাসা অগাধ। সেই ভালোবাসা আমাকে আবেগতাড়িত করেছে। আমি বুঝতে পেরেছি, আবেগের বশবর্তী হয়ে সহকর্মীদের সাথে এই নির্বাচনী প্রচারণায় অংশগ্রহণ করাটা আমার ভুল ছিল। যেটা থেকে অনেক ভ্রান্তি তৈরি হয়েছে এবং অনেকে ভুলভাবে নিয়েছেন। আমি স্বাধীন বাংলাদেশের একজন নাগরিক। একটি স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসাবে অন্য একটি দেশের নির্বাচনী প্রচারণায় অংশগ্রহণ কোনোভাবেই ঔচিত্য নয়। আমার অনিচ্ছাকৃত ভুলের জন্য আমি ক্ষমা প্রার্থনা করছি। আশা করি, সংশ্লিষ্ট সকলে আমার অনিচ্ছাকৃত ভুলকে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। ’
বাংলাদেশ সময়: ২০৫৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৭, ২০১৯
জেআইএম/এইচএ/