ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিনোদন

জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে খালিদ হোসেন

বিনোদন ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১৫৪ ঘণ্টা, মে ২০, ২০১৯
জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে খালিদ হোসেন খালিদ হোসেন

বিশিষ্ট নজরুলসঙ্গীতশিল্পী, গবেষক, স্বরলিপিকার, সঙ্গীতপ্রশিক্ষণ ও একুশে পদকপ্রাপ্ত সঙ্গীতশিল্পী খালিদ হোসেনের অবস্থা খুবই গুরুতর। 

খালিদ হোসেনের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে তার সিনিয়র ছাত্র নজরুল সঙ্গীতশিল্পী পরদেশী সিদ্দীক বাংলানিউজকে বলেন, এখন আর তিনি কথা বলতে পারছে না। কারো ডাকে সাড়া দিতে পারছে না।

ডাক্তার আমাদের মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকতে বলেছেন। বাকীটা উপরওয়ালাই জানেন।

তিনি আরও বলেন, ওনাকে তো লাইফ সাপোর্টে নেওয়া যাচ্ছে না। কারণ সুস্থ থাকা অবস্থায় তিনি বলেছেন, তাকে যেনো লাইফ সাপোর্টে না নেওয়া হয়।

গুণী এই শিল্পী বর্তমানে রাজধানীর জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে করোনারি কেয়ার ইউনিটের (সিসিইউ) ৯ নম্বর কেবিনে ডা. উত্তম কুমার বড়ুয়ার অধীনে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে খালিদ হোসেনের চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছেন এই ডাক্তার।

দীর্ঘদিন ধরে হার্ড, কিডনি ও ফুসফুসের সমস্যা পাশাপাশি বার্ধক্যজনিত নানা রোগে ভুগছেন খালিদ হোসেন।  

এর আগে পরদেশী সিদ্দীক বাংলানিউজকে জানান, এক বছর আগে ভারত থেকে চিকিৎসা নিয়েছিলেন তিনি। সেখানের ডাক্তার ওনাকে প্রতি মাসে একটি করে ইনজেকশন নেওয়ার নির্দেশ দেন। গত ৭ মাস ধরে টানা ইনজেকশন দিয়ে আসছেন তিনি। অষ্টমবার ইনজেকশন দেওয়ার জন্যে গত ৪ মে ওনাকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। এরপর থেকে তার অবস্থার অবনতি হলে হাসপাতালেই থেকে যেতে হয়। যদিও সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে অনিচ্ছুক ছিলেন গুণী এই শিল্পী। এর আগে তিনি শ্যামলীর স্পেশালাইজড হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।  

৮৪ বয়সী এই সঙ্গীতশিল্পীর চিকিৎসার জন্য এর আগেও প্রধানমন্ত্রীর তরফ থেকে আর্থিক অনুদান দেওয়া হয়। এখন ওনাকে প্রতি মাসে একটা ইনজেকশন দেওয়া হচ্ছে, যার খরচ ৫৮ হাজার টাকা। সঙ্গে অন্যান্য খরব তো আছেই।

১৯৩৫ সালের ৪ ডিসেম্বর পশ্চিবঙ্গে জন্মগ্রহণ করেন খালিদ হোসেন। কিন্তু দেশ বিভাগের পরে পরিবারসহ বাংলাদেশে স্থায়ী হন তিনি।

খালিদ হোসেন সঙ্গীত প্রশিক্ষক ও নিরীক্ষক হিসেবে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়, দেশের সকল মাধ্যমিক-উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড ও বাংলাদেশ টেক্সট বুক বোর্ড এ দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়া তিনি নজরুল ইনস্টিটিউটে নজরুলগীতির আদি সুরভিত্তিক নজরুল স্বরলিপি প্রমাণীকরণ পরিষদের সদস্য।

এখনো পর্যন্ত খালিদ হোসেনের গাওয়া ছয়টি নজরুলসঙ্গীতের অ্যালবাম প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া আধুনিক গানের একটি ও ইসলামি গানের ১২টি অ্যালবাম প্রকাশ পেয়েছে গুণী এই শিল্পীর কণ্ঠে।  

সঙ্গীতে অসামান্য অবদানের জন্য ২০০০ সালে একুশে পদক পান খালিদ হোসেন। এছাড়া পেয়েছেন নজরুল একাডেমি পদক, শিল্পকলা একাডেমি পদক, কলকাতা থেকে চুরুলিয়া পদকসহ আরও অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননা।

বাংলাদেশ সময়: ২১৫৩ ঘণ্টা, মে ১৯, ২০১৯
ওএফবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।