ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিনোদন

পর্দা নামলো অষ্টাদশ ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০২৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২০, ২০২০
পর্দা নামলো অষ্টাদশ ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের

‘নান্দনিক চলচ্চিত্র, মননশীল দর্শক, আলোকিত সমাজ’ স্লোগান নিয়ে গত ১১ জানুয়ারি শুরু হয়েছিল অষ্টাদশ ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব। সোমবার (১৯ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় রাজধানীর জাতীয় জাদুঘরে নয় দিনব্যাপী এই উৎসবের পর্দা নামলো। 

সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ।  

উৎসবের সমাপনী ঘোষণা করে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, মানুষ এখন আত্মকেন্দ্রিক হয়ে গেছেন।

জীবন যান্ত্রিক হয়ে গেছে। তাই মানুষকে সুস্থ বিনোদন দিতে সুন্দর চলচ্চিত্রের বিকল্প নেই। চলচ্চিত্র সমসাময়িক কালকে সংরক্ষণ করে। একশ’ বছর আগের চলচ্চিত্র পরিস্ফুটন করে সেই সময়কার সমাজের চিত্র। আজকের পৃথিবীতে ক্রমাগত যন্ত্রের ব্যবহারের সঙ্গে সঙ্গে মানুষগুলোও যন্ত্র হয়ে যাচ্ছে। মানুষ যাতে ক্রমাগত যন্ত্রের ব্যবহারের সঙ্গে  যন্ত্র হয়ে না যায়, মানুষ যেন মানুষ থাকে, মানুষের মানবিকতা যেন লোপ না পায়, মানুষের মধ্যে যে মমত্ববোধ সেটি যেন হারিয়ে না যায়, সেক্ষেত্রে চলচ্চিত্র বিরাট ভূমিকা পালন করতে পারে।  

তিনি আরও বলেন, আমরা আমাদের দেশকে উন্নত রাষ্ট্রে রূপান্তরিত করতে চাই ২০৪১ সাল নাগাদ। শুধুমাত্র প্রযুক্তিগত উন্নয়ন দিয়ে উন্নত রাষ্ট্র গঠন করা যায় না। এজন্য জাতীয় সংস্কৃতিকে লালন করা প্রয়োজন। আর এজন্য চলচ্চিত্রের ভূমিকা অনেক।

সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বলেন, বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের সুদিন ফিরিয়ে আনতে যা যা করণীয় তা আমরা করবো। বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ ও মৌলবাদের উত্থানের ফলে চলচ্চিত্র অনেক বড় ধাক্কা খেয়েছে। প্রত্যেক উপজেলায় কালচারাল কমপ্লেক্স নির্মাণ করা হবে। সেখানে ডিজিটাল সিনেপ্লেক্স থাকবে।

উৎসবের পরিচালক আহমেদ মোস্তফা জামাল অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিল্ম স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ও সহযোগিতার জন্য তাদের ধন্যবাদ জানান তিনি।  

সমাপনী অনুষ্ঠানে উৎসবের বিভিন্ন বিভাগে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন অতিথিরা।  

এবার সেরা শিশুতোষ চলচ্চিত্র বিভাগে বাদল রহমান পুরস্কার জিতেছে ইরানের চলচ্চিত্র ‘লোকনাথ’। সিনেমা অব দ্য ওয়ার্ল্ড সেকশনে সেরা দর্শক জনপ্রিয়তা পুরস্কার পেয়েছে অঞ্জন দত্ত পরিচালিত ভারতীয় চলচ্চিত্র ‘ফাইনালি ভালোবাসা’।  

ওমেন ফিল্ম মেকার সেকশনের বিভিন্ন বিভাগে পুরস্কার পেয়েছে ‘মাই নেম ইজ পেটিয়া’, ‘ভিডিও টেপ’, ‘দ্য হুয়াল অ্যান্ড দ্য রাবেন টিনি সোলস’র মতো চলচ্চিত্র। বাংলাদেশ প্যানোরোমায় সেরা হয়েছে ‘ন’ ডরাই’। স্পিরিচুয়াল বিভাগে শর্ট ফিকশনে সেরা ‘দ্য ফিস্ট অব দ্য গড’, শর্ট ফিল্মে সেরা ‘দ্যা স্ট্যাম্প’  এবং সেরা প্রামাণ্যচিত্র ‘বিলাভড’।  

এশিয়ান প্রতিযোগিতায় সেরা চিত্রনাট্যকার হোসেন কারাবে। সিনেমাটোগ্রাফিতে সেরা হয়েছেন ভারতের রেডিয়াস চলচ্চিত্রের সপ্নিল সেতে ও অক্ষয় ইন্ডিকর।

একই সেকশনে সেরা অভিনেত্রী হয়েছেন আফগানিস্তান- ইরান- ফ্রান্সের প্রযোজনার চলচ্চিত্র অারিজো এরিয়াপোর, ফেরেশতা অাফসার ও হাসিবা ইব্রাহিমী।

সেরা অভিনেতা ফিলিপিনসের লুইস অ্যাবইউয়েল (অ্যাডওয়ার্ড), সেরা পরিচালক ইরানের মিরকারিমী রেজা (ক্যাস্টেল অব ড্রিমস), সেরা চলচ্চিত্রের তকমাটিও গিয়েছে ‘ক্যাস্টেল অব ড্রিমস’ সিনেমার ঘরেই।  

এছাড়া স্পেশাল জুড়ি মেনশনে পুরস্কার পায় শ্রীলঙ্কার চলচ্চিত্র ‘চিলড্রেন অব দ্য সান’।

রেইনবো চলচ্চিত্র সংসদ আয়োজিত এবারের উৎসবে এশিয়ান প্রতিযোগিতা বিভাগ, রেট্রোস্পেকটিভ বিভাগ, বাংলাদেশ প্যানারোমা, সিনেমা অফ দ্য ওয়ার্ল্ড, চিল্ড্রেন্স ফিল্ম, স্পিরিচুয়াল ফিল্মস, ইন্ডিপেনডেন্ট ফিল্ম এবং উইমেনস ফিল্ম সেশনে বাংলাদেশসহ ৭৪টি দেশের মোট ২২০টি চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হয়। মোট পাঁচটি ভেন্যুতে চলচ্চিত্রগুলো দেখানো হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৯২৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৯, ২০২০
এমকেআর/এইচএমএস/জেআইএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।