ঢাকা, শনিবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

বিনোদন

‘যুবতী রাধে’ বির্তকে যা বললেন চঞ্চল চৌধুরী

নিউজরুম এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৩৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৪, ২০২০
‘যুবতী রাধে’ বির্তকে যা বললেন চঞ্চল চৌধুরী চঞ্চল চৌধুরী

সম্প্রতি ‘আইপিডিসি’ নামের ইউটিউব চ্যানেল পার্থ বড়ুয়ার নতুন সংগীতায়োজনে চঞ্চল চৌধুরী ও মেহের আফরোজ শাওনের কণ্ঠে প্রকাশ পায় ‘যুবতী রাধে’ শীর্ষক গানটি। প্রকাশের পরই গানটি চারদিকে ছড়িয়ে পড়ছিল দ্রুতই।

এর মধ্যে দেখা দিলো বিপত্তি। আপত্তি সরলপুর ব্যান্ডের। তাদের অভিযোগ-আপত্তির কারণেই ইউটিউব গান-ভিডিওটি কপিরাইট ক্লেইমের আওতায় ‘টেকডাউন’ করে। বুধবার (২১ অক্টোবর) সন্ধ্যায় সরলপুর ব্যান্ড গণমাধ্যমের কাছে একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি ও কপিরাইটের কাগজপত্র পাঠিয়েছে। যেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, গানটির মালিক সরলপুর ব্যান্ড।

এবার ‘যুবতী রাধে’ গানটিকে প্রচলিত গান দাবি করে উল্টো সরলপুর ব্যান্ডের মালিকানা নিয়েই সামাজিক মাধ্যমে অনেকেই নেতিবাচক মন্তব্য করেছেন। মুখ খুলছেন গানটির গায়ক ও নন্দিত অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী।  

তিনি বলেন, ‘আমি সত্যিই খুব অবাক হয়েছি পুরো ঘটনাটিতে। ‘যুবতী রাধে’ গানটিকে আমরা সবাই প্রচলিত গান বলেই জানতাম। বহু বছর আগের গান এটা। সরলপুরের নতুন সংযোজনে কিছু কথার সামান্য পরিবর্তন হয়েছে মাত্র। তার মানে গানটা তাদের হয়ে যাওয়া?- অবাক ব্যাপার! এটা বহু আগের গান। তখনকার সাধকেরা রাধাকৃষ্ণের প্রেম নিয়ে পালা-পুঁথি লিখতেন, নানা পদ রচনা করতেন। এমন প্রচলিত গানের জন্য অনুমতি লাগবে, সেটা কেউ ভাবেনি।  

‘ইউটিউবেও এই গানের অনেকগুলো ভার্সন দেখা যাচ্ছে। কোথাও কোনো ব্যান্ডের নাম ক্রেডিট হিসেবে দেওয়া নাই। যদি জানা যেত গানটির মালিক সরলপুর ব্যান্ড তাহলে আইপিডিসি বা পার্থ বড়ুয়া অবশ্যই তাদের অনুমতি নিতেন। আমরা সবাই দীর্ঘদিন ধরেই শিল্পচর্চার সঙ্গে জড়িত। কোনো নেতিবাচক মানসিকতা এখানে কারোর নেই। ’

চঞ্চল চৌধুরী আরও বলেন, ‘গান আমার পেশা না, শখের বসেই গান করি। আমার কণ্ঠে বেশ কিছু গান প্রকাশ পেয়েছে। সেগুলোর প্রায় সবই লোগান। গানের কথা একটু এদিক-সেদিক করে নেন অনেকেই, অনেক সময়। বকুল ফুল বকুল ফুল গানটি খুব জনপ্রিয় এখন। এটা কিন্তু সর্বপ্রথম আমার কণ্ঠেই রেকর্ড হয়েছে। এরপর জলের গান গেয়েছে, দিনাত জাহান মুন্নী গেয়েছেন। এখন আমি কি বলবো যে এই গান তারা আমার অনুমতি ছাড়া কেন গাইলো? আমি এই গানের মালিক বা আমি এই গানের কপিরাইট আমার নামে করে নেবো? একদমই না।  

‘কারণ, গানটি অনেক আগে থেকেই মানুষের মুখে মুখে বেজে চলেছে। আমি সেটাকে রেকর্ড করে সবার কাছে তুলে ধরেছি। তাই বলে এই গান আমার হয়ে গেলো না। আমার কণ্ঠে আরেকটি জনপ্রিয় গান আছে ‘ফুল গাছটি লাগাইছিলাম ধুলা মাটি দিয়া রে’। এটি পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুরা অঞ্চলের গান। আমি গাওয়ার পর খুব জনপ্রিয়তা পেয়েছে। অনেকেই মুখে মুখে বলেন, এটা চঞ্চলের গান। তাই বলে এটা তো আমার হয়ে গেল না। এর পদ রচনাকারী আমি নই’

তিনি আরও বলেন, ‘জনপ্রিয় সিনেমা ‘মনপুরা’য় ‘নিথুয়া পাথারে’ গানটির সবগুলো লাইনই ছিলো সংগৃহিত। কিন্তু শেষের অন্তরাটি গিয়াসউদ্দিন সেলিম লিখেছেন। তাই বলে গানটিকে কিন্তু তিনি তার দাবি করেননি। এটা সংগৃহিত গান হিসেবেই পরিচিত। কোনো গানে কেউ খানিকটা এদিক সেদিক পরিবর্তন করে যদি সেটা তার নিজের বলে দাবি করে তখন তো আসলে বলার কিছু থাকে না। শুনছি সরলপুর ব্যান্ড দাবি করেছে তাদের নামে কপিরাইট আছে ‘যুবতী রাধে’ গানটি তাদের। যদি এমনটা হয় তাহলে আইন তাদের পক্ষে। সেটা মানতেই হবে। তবে আমার কিছু প্রশ্ন আছে। ’

খানিক বিস্ময়ে চঞ্চল বলেন, ‘সরলপুর ব্যান্ড তাদের বক্তব্যে বলছে গানটির ৩০ ভাগ তারা সংগ্রহ করেছেন আর ৭০ ভাগ তাদের লেখা। জানতেই চাই যে ৩০ ভাগ তারা সংগ্রহ করেছেন সেটা কার কার থেকে? তাদের কপিরাইটের বেলায় বিষয়টা কি হবে? আর যে ৭০ ভাগ তারা লিখেছেন সেখানে কোন কোন লাইনগুলো তাদের লেখা? কারণ বেশিরভাগই লাইন মধ্যযুগের কবি দ্বিজ কানাইয়ের লেখা মৈমনসিংহ গীতিকার মহুয়া গানের পদের মতো। প্রায় হুবহু। জানি না কপিরাইট আইনের ব্যাখ্যা বা নিয়মটা কেমন। সেটাই জানতে চাই তাদের কাছে। কীভাবে গানটি তাদের মালিকানায় এলো?’

বাংলাদেশ সময়: ১৩৩৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৪, ২০২০
ওএফবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।