ঢাকা, সোমবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিনোদন

‘অপারেশন সুন্দরবন’ কোন লাভজনক চলচ্চিত্র নয়: আশিক বিল্লাহ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০১৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩১, ২০২০
‘অপারেশন সুন্দরবন’ কোন লাভজনক চলচ্চিত্র নয়: আশিক বিল্লাহ

ঢাকা: সুন্দরবনের জলদস্যুদের গল্প নিয়ে নির্মিত পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘অপারেশন সুন্দরবন’ কোন লাভজনক চলচ্চিত্র নয়, বরং এটি একটি সমাজ সংস্কারমূলক চলচ্চিত্র। সুন্দরবনের যেসব দস্যুরা স্বাভাবিক জীবনে ফেরত এসেছে, তাদের জীবন যাপনের মান উন্নয়নে চলচ্চিত্র থেকে উপার্জিত মুনাফা ব্যয় করা হবে।

শনিবার (৩১ অক্টোবর) বিকেলে র‍্যাব সদর দপ্তরে ওয়েলফেয়ার কো-অপারেটিভ সোসাইটি নির্মিত পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘অপারেশন সুন্দরবন’-এর নির্মাণ অগ্রগতি ও সার্বিক বিষয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিক বিল্লাহ এসব তথ্য জানান।

আশিক বিল্লাহ বলেন, ২০১২ সালে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে র‌্যাব পরিচালককে প্রধান সমন্বয়কারী করে সুন্দরবনের জলদস্যু দমনের টাস্ক-ফোর্স গঠনের মাধ্যমে জলদস্যুমুক্তকরণ প্রক্রিয়া শুরু হয়। লিড অ্যাজেন্সি  হিসেবে র‌্যাব ২০১২ সাল থেকে সুন্দরবনে জোরালো অভিযান পরিচালনা করে আসছে। অভিযানে গ্রেপ্তার হয় ২৬২ জন জলদস্যু। একের পর এক অভিযানে ফেরারী জীবনের অবসান ঘটিয়ে আত্মসমর্পণের পথ বেছে নেয় জলদস্যুরা। প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনক্রমে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে ও র‌্যাবের কর্মতৎপরতায় ২০১৬ সালের ৩১ মে থেকে ১ নভেম্বর ২০১৮ পর্যন্ত সুন্দরবনের ৩২ দস্যু বাহিনীর ৩২৮ জন সদস্য ৪৬২টি অস্ত্র ও বিপুল পরিমাণ গোলাবারুদসহ আত্মসমর্পণ করে।

সুন্দরবন জলদস্যুমুক্ত হওয়া নিয়ে তিনি বলেন, ২০১৮ সালে ১ নভেম্বর বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী সুন্দরবনকে জলদস্যুমুক্ত ঘোষণা করেন। সুন্দরবনে এখন শান্তির সুবাতাস বইছে। অপহরণ ও হত্যা এখন বন্ধ হয়েছে। জেলেদের উপার্জিত অর্থের ভাগ কাউকে দিতে হচ্ছে না। মাওয়ালী, বাওয়ালী, বনজীবী, বন্যপ্রাণী এখন সবাই নিরাপদ। নির্ভয়ে নির্বিঘ্নে আসছে দর্শনার্থী, পর্যবেক্ষক ও জাহাজ বণিকেরা। সুন্দরবন কেন্দ্রিক অর্থনৈতিক গতিশীলতার ব্যাপক সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হয়েছে।  

চলচ্চিত্র পরিচালক দীপঙ্কর দীপন বলেন, ২০১৮ সালের ৫ জানুয়ারি তৎকালীন র‍্যাব প্রধান ড. বেনজীর আহমেদ আমাকে বলেন, সুন্দরবন জলদস্যুমুক্ত হওয়ার ঘটনা নিয়ে সিনেমা তৈরি করতে চাই। এজন্য তিনি আমাকে সরেজমিন পরিদর্শনে পাঠান। দীর্ঘদিন সেখানে থাকার সময় তৎকালীন র‍্যাবে কর্মরত অফিসারদের খোঁজ করি। তাদের কাছ থেকে সুন্দরবন জলদস্যুমুক্ত করার বিভিন্ন গল্প ছাড়াও স্থানীয় জেলে, সেখানে বসবাস করা পরিবার ও দস্যুদের মাধ্যমে নির্যাতিত অনেকের সঙ্গে কথা বলি। এরপরই সিনেমাটির কাজ শুরু হয়।  

তিনি বলেন, এরই মধ্যে ৩৩ দিনের শুটিং শেষ হয়েছে। সিনেমাটিতে র‍্যাবের উদ্ধর্তন কর্মকর্তারা জড়িত আছেন। সিনেমায় অভিনয় করছেন, চিত্রনায়ক রিয়াজ, সিয়াম আহমেদ, রাইসুল ইসলাম আসাদ, রৌশান, নুসরাত ফারিয়া, শতাব্দী ওয়াদুদ, সামিনা বাশারসহ আরো অনেকে। এছাড়া প্রায় ১৩শ আর্টিস্ট সিনেমাটিতে কাজ করছেন। এটি একটি ব্যয়বহুল সিনেমা। এখানে অসাধারণ কিছু দৃশ্যের পাশাপাশি উন্নত কারিগরি ছোঁয়া আছে।  

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সুন্দরবনের দস্যুমুক্ত করার গল্প শুধুমাত্র একটি চলচ্চিত্রের মাধ্যমে তুলে আনা সম্ভব নয়। আমরা চলচ্চিত্রে যে সময়ের ঘটনা তুলে ধরছি, সে সময়টাতে র‌্যাব কেবলমাত্র টাস্ক-ফোর্স গঠন করছে সুন্দরবনকে দস্যুমুক্ত করার জন্য। র‌্যাব বিভিন্ন অভিযান পরিচালনা করছে। গণমাধ্যমের প্রতিবেদন দেখে সরকার অনুধাবন করে যে, এ বিষয়ে সরাসরি কাজ করা প্রয়োজন। র‌্যাবকে দস্যুমুক্ত করার জন্য দায়িত্ব দেওয়ার পেছনে সংবাদকর্মীদের ভূমিকা আছে।  

তিনি বলেন, সুন্দরবন জলদস্যুমুক্ত হওয়ায় বাঘ, হরিণের সংখ্যা সেখানে বেড়েছে। সেই সঙ্গে সাধারণ মানুষের জীবন-যাপন অনেকটা স্বাভাবিক হয়েছে। আশা করছি স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে ২৬ মার্চে চলচ্চিত্রটি মুক্তি দিতে পারব।  

বাংলাদেশ সময়: ২০১৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩১, ২০২০
এমএমআই/এমকেআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।