ঢাকা, সোমবার, ২৯ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ মে ২০২৪, ০৪ জিলকদ ১৪৪৫

বিনোদন

শিল্পকলায় প্রাচ্যনাটের শিক্ষার্থীদের ‘আন্তেগনি’

নিউজরুম এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১১১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১১, ২০২০
শিল্পকলায় প্রাচ্যনাটের শিক্ষার্থীদের ‘আন্তেগনি’ শিল্পকলায় প্রাচ্যনাটের শিক্ষার্থীদের ‘আন্তেগনি’

বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির পরীক্ষণ থিয়েটার হলে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে প্রাচ্যনাট স্কুল অব অ্যাকটিং অ্যান্ড ডিজাইন’র ৩৭তম ব্যাচের সনদপত্র বিতরণ অনুষ্ঠান।

শুক্রবার (১১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৭টায় ৩৭তম ব্যাচ তাদের সমাপনী প্রযোজনা হিসেবে সফোক্লিস’র ‘আন্তেগনি’ উপস্থাপন করবে।

নাটকটি রূপান্তর এবং নির্দেশনা দিয়েছেন নীল কামরুল। এই আয়োজনে অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন কামাল উদ্দিন কবির এবং নাট্যজন আমিনুর রহমান মুকুল।

এর গল্পে দেখা যায়, আন্তেগনি ইডিপাসের কন্যা। আন্তেগনি, রাজশক্তির অন্যায় আদেশের বিরুদ্ধে মাথা তুলে দাঁড়ানো একজন ‘অরাজনৈতিক’ শক্তির নাম। তিনি প্রায় আড়াই হাজার বছর আগে সত্যাগ্রহের পথ দেখানো একজন মানবী, একজন নারী। তার ভাই পলিনিসেসের রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের দায়ে, পলিনিসেসের মৃত্যু পরে তার শেষকৃত্যের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে স্বেচ্ছাচারী রাজা ক্রেয়ন।

পলিনিসেসের শবদেহ শেয়াল-শকুনের খাদ্য হোক- এই শাস্তিধার্য করে রাজা। ভাইয়ের মরদেহের প্রতি এই অসম্মানকে এক প্রচণ্ড অন্যায় বলে মনে হয় আন্তেগনির। রাজ আদেশ অমান্য করে পলিনিসেসের মরদেহকে সসম্মানে সমাধিস্থ করেন তিনি।  

এই সংবাদ রাজার কানে পৌঁছলে, আন্তেগনিকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করে রাজা ক্রেয়ন। ক্ষমা প্রার্থনা করলে হয়তো পেয়ে যেত প্রাণ-ভিক্ষা; কিন্তু আন্তেগনি তার আদর্শে অটল। রাজা তাকে বন্দি রাখেন শহর থেকে দূরে এক নির্জন গুহায়। রাজ-পরিবারের সদস্যদের অনুরোধ এবং শুভাকাঙ্ক্ষীদের উপদেশে শেষ পর্যন্ত মত পরিবর্তন করে রাজা ক্রেয়ন। কিন্তু ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে কি?

আইনের শাসন প্রতিষ্ঠাকে ‘ন্যায়’ প্রতিষ্ঠার পূর্বশর্ত বলে মনে করা হয়। কিন্তু আইন নিজেই যদি অন্যায় হয়? ‘সার্বভৌমের আদেশই আইন’, এটিই আইনের সবচেয়ে স্বীকৃত সংজ্ঞা। রাজনৈতিক পালাবদলে সার্বভৌমশক্তির পরিবর্তন হলে আইনও পরিবর্তন হয়। কিন্তু ‘ন্যায়’ তো রাজশক্তির মত পরিবর্তনশীল নয়! ‘ন্যায়’র সিংহাসন রাজ সিংহাসনের অনেক ওপরে! এই সহজ সত্যটাকে আন্তেগনি মনে-প্রাণে বিশ্বাস করেছে। আন্তেগনি কোনও রাজনৈতিক চরিত্র নয়। একজন সাধারণ নাগরিক হয়েও জীবনের ঝুঁকি উপেক্ষা করে এই বিশ্বাসকে অটল রাখে আন্তেগনি।  

মহাত্মা গান্ধীর সত্যাগ্রহেরও আড়াই হাজার বছর আগে লেখা নাটকের একজন নারী চরিত্র পথে ‘আইন অমান্য’ আন্দোলনের পথ দেখিয়ে দিয়ে গেছে। একজন অরাজনৈতিক নারী’র এই দৃপ্ত অবস্থান, তার সত্যনির্ভর সাহস তখনকার রাজশক্তি সহ্য করতে পারেনি। আড়াই হাজার বছর পরে আজকের এই একবিংশ শতাব্দীতে এসে কতটুকু বদলেছে আমাদের বাস্তবতা? - নাটকটি তৈরি করবে এমন আরও অনেক জিজ্ঞাসা।

বাংলাদেশ সময়: ১১১১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১১, ২০২০
ওএফবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।