কিংবদন্তি চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায় চাইলেই বিদেশি ভাষায় সিনেমা নির্মাণ করতে পারতেন, কিন্তু তিনি তা না করে বাংলা ভাষাকেই বিশ্ব তথা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নিয়ে গেছেন বলে জানিয়েছেন উপমহাদেশের নন্দিত অভিনেত্রী শর্মিলা ঠাকুর।
বুধবার (২০ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তনে ‘সত্যজিৎ রায়: জাতীয় নাকি বৈশ্বিক’ শীর্ষক সেমিনারে ভার্চ্যুয়ালি যোগ দিয়ে একথা জানান সত্যজিতের নায়িকা।
সেমিনারে সত্যজিৎ রায়কে নিয়ে স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে শর্মিলা ঠাকুর বলেন, ‘সত্যজিৎ রায় কেবল বাংলার নয়, বাংলা ভাষার চলচ্চিত্র নির্মাতা। সেসময় রায় সাহেব অতটা অবস্থাসম্পন্ন ছিলেন না, খুব বেশি অর্থকড়ি ছিল না তার, একটা শট দুই থেকে তিনবারের বেশি নেওয়ার সুযোগ ছিল না, সেই অবস্থা থেকে বিশ্ব-দরবারে জননন্দিত হয়ে ওঠার পেছনে শ্রম ও মেধার অবদানই বেশি।
সেমিনারের সভাপতিত্ব করেন বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান নূর। তিনি বলেন, ১৯৭২ সালে যখন ঢাকার পল্টন ময়দানে সত্যজিৎ রায় এসেছিলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ওনাকে খুব সম্মান করেছিলেন।
তিনি আরও জানান, ‘পথের পাঁচালী’ তাকে এতটাই নাড়া দিয়েছিল যে, ‘মহানগর’ সিনেমা দেখার জন্য সেই বালক বয়স প্রায় ৩৩০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে নীলফামারী থেকে ঢাকা এসেছিলেন।
এছাড়া কলকাতা থেকে সেমিনারে ভার্চ্যুয়ালি যোগ দেন আরেক বর্ষীয়ান অভিনেতা ধৃতিমান চ্যাটার্জি। তিনি বলেন, ‘সত্যজিৎ রায় কোন নির্দিষ্ট জাতিসত্তার নন, তিনি সারা বিশ্বের জন্য চলচ্চিত্র অঙ্গনে এক দৃষ্টান্ত। ’
সেমিনারের মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি মফিদুল হক। প্রবন্ধে থেকে তিনি উল্লেখ করেন, ‘জীবন যে মসৃণ কোনো পথ নয়, বরং খাড়া পাহাড়ি ঢালের মতো বন্ধুর, সত্যজিৎ রায়ের চলচ্চিত্র সেই শিক্ষাই দেয়’।
সেমিনারে সত্যজিৎ রায়ের চলচ্চিত্র জীবন, জাতীয় ও বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট নিয়ে আরও কথা বলেন বিচারপতি রিফাত চৌধুরী এবং চলচ্চিত্র সমালোচক মঈনুদ্দীন খালেদ।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৫৭ ঘণ্টা জানুয়ারি ২১, ২০২১
জেআইএম