ভারতে সম্প্রতি পেট্রোলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় ক্ষুব্ধ বিরোধী দলগুলো। এমন পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে মুখ না খুললে অমিতাভ বচ্চন ও অক্ষয় কুমারের শুটিং বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিলেন মহারাষ্ট্রের কংগ্রেস প্রধান নানাভাউ পটোলে।
ভারতে বাকস্বাধীনতা ও নিজস্ব মতামত প্রকাশের অধিকারের প্রশ্নে একমত সব তারকাই। তবে জোর করে সমর্থন আদায়ের হুমকি বাকস্বাধীনতাকে রীতিমতো প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে বারবার। ইতোপূর্বে শ্রীদেবীকন্যা জাহ্নবী কাপুরের শুটিং স্পটে হানা দিয়ে কৃষক বিক্ষোভকে সমর্থন দিতে শ্লোগান দেয় আন্দোলনকারীরা। বাধ্য হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে টুইটার পোস্ট দেন জাহ্নবী। কঙ্গনার শুটিংয়েও সম্প্রতি হানা দিয়েছিলেন বিক্ষোভকারীরা। কঙ্গনা বাধ্য হয়ে শুটিং ভেন্যু ত্যাগ করেন।
এবার বলিউড মেগাস্টার অমিতাভ বচ্চন এবং সুপারস্টার অক্ষয় কুমারকে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার দাবি জানিয়েছেন মহারাষ্ট্রের কংগ্রেস প্রধান নানাভাউ পটোলে। তারকা অভিনেতারা মোদীর বিরুদ্ধে কথা না বললে মহারাষ্ট্রে তাদের শুটিং বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে হুমকি দিয়েছেন ওই নেতা।
নানাভাউ’র অভিযোগ, এই তারকারা পক্ষপাতদুষ্ট। কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে তাদের সুসম্পর্ক। মহারাষ্ট্র সরকারে উদ্ধব ঠাকরের শিবসেনার সঙ্গে অন্যতম জোট শরিক কংগ্রেস। ফলে তাদের এই হুমকি বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
নানার বক্তব্য, ‘যেভাবে পেট্রোলের দাম বৃদ্ধি হচ্ছে, তাতে সাধারণ মানুষ বিপদে পড়েছেন। মনমোহন সিংয়ের সরকার থাকাকালীন যখন পেট্রোলের দাম বেড়েছিল, তখন তো অমিতাভ বচ্চন ও অক্ষয় কুমারের মতো তারকারা এক চুল জায়গা ছাড়েননি। তখন তো খুব টুইট করতেন। আজ তারা নীরব। ’
এরপর সোজাসুজি বলিউডের দুই প্রভাবশালী তারকাকে হুমকি দিয়ে বসলেন নানা। তোপ দেগে তিনি বলেন, ‘যে সিনেমাগুলোতে অমিতাভ বচ্চন ও অক্ষয় কুমার রয়েছেন, মহারাষ্ট্রে সেই সিনেমার শুটিং বন্ধ করে দেওয়া হবে। হয় নরেন্দ্র মোদী সরকারের দেশদ্রোহী নীতিগুলোর বিরুদ্ধে কথা বলুন, নয়তো আমরা শুটিং বন্ধ করে দেব। ’
এক সময় কংগ্রেসের খুব কাছের মানুষ ছিলেন অমিতাভ বচ্চন। স্কুলের বন্ধু প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীর প্রস্তাবে ১৯৮৪ সালে অভিনয় থেকে সংক্ষিপ্ত বিরতি নিয়ে রাজনীতিতে যোগ দেন অমিতাভ। এলাহাবাদ লোকসভা আসনে উত্তর প্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী হেম্মতি নন্দন বহুগুণা-র বিরুদ্ধে নির্বাচনে দাঁড়ান তিনি। রেকর্ড ভোটপার্থক্যে জেতেনও। এর কিছুদিন পর রাজীবের নাম বোফর্স কেলেঙ্কারিতে জড়ানোয় অমিতাভ রাজনীতি থেকে সরে আসেন। সেই কংগ্রেসের থেকেই এমন হুমকি অমিতাভের কাছে খানিক অপ্রত্যাশিত লাগতেই পারে।
অন্যদিকে, অক্ষয় কুমার বর্তমান শাসকদলের ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত। সম্প্রতি রামমন্দির নির্মাণের জন্য অর্থ দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে ভিডিও পোস্ট করেন আন্তর্জালে। সরকারি বিভিন্ন বিজ্ঞাপনেও তাকে নিয়মিত দেখা যায়। ফলে তিনি যে মহারাষ্ট্রে কংগ্রেসের নিশানা হবেন, তাতে আশ্চর্যের কিছু নেই।
ইতোমধ্যেই কংগ্রেস নেতার মন্তব্যের বিরোধিতায় সরব বিজেপি। বিজেপি নেতা রাম কদম বলেন, ‘এত প্রতিভাধর মানুষদের হুমকি দেওয়াটা অন্যায়। ’ তবে এসব নিয়ে এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া দেখাননি দুই তারকা অভিনেতা।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৫০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০২১
এমকেআর