মার্চের শুরুতে কলকাতার অভিনেতা অঙ্কুশ ও তার প্রেমিকা ঐন্দ্রিলার সহকারী পিন্টু দে ওরফে বাপ্পার আত্মহত্যার করেন। তিনি ব্ল্যাকমেইলের শিকার হচ্ছিলেন এবং শেষ পর্যন্ত তা সহ্য করতে না পেরে আত্মহননের পথ বেছে নিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছে তার পরিবার।
অভিযোগের ভিত্তিতে এবার সেই ব্ল্যাকমেইলারকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আয়ুব খান নামের ওই ব্যক্তিকে রাজস্থানের ভরতপুর থেকে গ্রেফতার করা হয়। ভরতপুরের কামান থানার আংগ্রাওয়ালির বাসিন্দা তিনি।
জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার (১১ মার্চ) আয়ুবকে গ্রেফতার করে ভরতপুর আদালতে তোলা হলে ট্রানজিট রিমান্ডের নির্দেশ দেওয়া হয়।
পুলিশ জানায়, হোয়াটসঅ্যাপে আসা অজ্ঞাতপরিচয় সুন্দরী মহিলাদের ছবি দেখে অনেকেই সাড়া দেন। এই ফাঁদে ফেলেই নিজেকে মহিলা বলে দাবি করে বাপ্পার সঙ্গে চ্যাট করে ব্ল্যাকমেইলার। মহিলার অশ্লীল ভিডিও পাঠিয়ে বাপ্পাকেও তার অশ্লীল ভিডিও পাঠাতে বলা হয়। সেই ভিডিওকে কেন্দ্র করেই শুরু হয় ব্ল্যাকমেইল ও ভয় দেখানো এবং অর্থ হাতিয়ে নেওয়া।
পূর্ব কলকাতার নারকেলডাঙা নর্থ রোডের একটি বাড়ির দোতলার ফ্ল্যাটে থাকতেন বাপ্পা। তার সাড়াশব্দ না পাওয়ায় বাথরুমের দরজা ভেঙে সিলিং থেকে উদ্ধার করে হয় তার ঝুলন্ত মরদেহ। পুলিশ হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়।
বাপ্পার এক আত্মীয় জানান, তার মোবাইলে হোয়াটসঅ্যাপে দুটি নম্বরে চ্যাট দেখেই মৃত্যুরহস্যের মোড় ঘোরে। চ্যাটগুলোতে তাকে ব্ল্যাকমেইল করে বলা হয়েছে, ভিডিও আপলোড করে দেওয়া হবে। বাপ্পা বারবার হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ পাঠিয়ে ভিডিওটি মুছে দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন। বলেছেন, তিনি অত্যন্ত গরিব।
বলা হচ্ছে, ভিডিও আপলোড করার ভয় দেখিয়ে অন্তত এক মাস ধরে ব্ল্যাকমেইল করা হয়েছে। কখনো দুই, কখনো তিন হাজার টাকা চাওয়া হয়। ক্রমে দুই দফায় তিনি ৫ হাজার টাকা ও এক দফায় দশ হাজার টাকা ই-ওয়ালেটের মাধ্যমে জালিয়াতদের পাঠান। এমনকি অঙ্কুশের কাছ থেকে টাকা নিয়েও জালিয়াতদের দেন বলে দাবি পরিবারের।
এরপরও তার কাছ থেকে দশ হাজার টাকা চাওয়া হয়। কিন্তু ওই টাকা দেওয়ার ক্ষমতা বাপ্পার ছিল না। তখন জালিয়াত হোয়াটস অ্যাপে এক পুলিশ কর্মকর্তার একটি ভুয়া পরিচয়পত্র পাঠায়। হুমকি দিয়ে জানায়, দুই মিনিটের মধ্যে টাকা না দিলে দুই ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতার করা হবে। পরিবারের দাবি, বাপ্পা এই চাপ নিতে পারেননি বলেই আত্মহত্যা করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১০৩৪ ঘণ্টা, মার্চ ১৪, ২০২১
জেআইএম