জীবনের আরেকটি বসন্ত পার করলেন বলিউড সুপারস্টার আমির খান। রোববার (১৪ মার্চ) ৫৬ বছরে পদার্পণ করেছেন তিনি।
মাত্র পাঁচ ফুট ছয় ইঞ্চি উচ্চতার এই জনপ্রিয় বলিউড অভিনেতা নিজ গুণে ছাড়িয়ে গেছেন অনেককে। খুব বেশি সিনেমায় অভিনয় করেননি। কিন্তু যতবার পর্দায় হাজির হয়েছেন, ততবারই নিজের জাত চিনিয়েছেন ‘মিস্টার পারফেকশনিস্ট’।
অভিনয়, প্রযোজনা, পরিচালনা ও টিভি উপস্থাপনাসহ বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে লাখো ভক্তের হৃদয়ের মণিকোঠায় স্থান করে নিয়েছেন তিনি। জন্মদিনে প্রিয় অভিনেতাকে শুভেচ্ছা জানিয়ে তার কাছ থেকে এরকম আরও অনেক চমৎকার কাজ প্রত্যাশা করে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন ভক্তরা।
আমির খানের জন্ম ১৯৬৫ সালে। তার বাবা তাহির হোসেন ছিলেন চলচ্চিত্র প্রযোজক। চাচা নাসির হুসেন ছিলেন প্রযোজক ও পরিচালক। তার আত্মীয়দের মধ্যেও অনেকে বলিউডের সঙ্গে সম্পৃক্ত। তবে সবাইকে ছাড়িয়ে তিনিই হয়ে উঠেছেন বলিউডের ‘আমির’।
আমির খানের শুরুটা শিশুশিল্পী হিসেবে। মাত্র আট বছর বয়সে নাসির হোসেন পরিচালিত ‘ইয়াদো কি বারাত’ (১৯৭৩) সিনেমায় একটি তুমুল জনপ্রিয় গানে প্রথমবার বড় পর্দায় দেখা যায় তাকে। এরপর বাবা ও চাচার হাত ধরে বিভিন্ন সিনেমায় অংশ নেন তিনি।
১৬ বছর বয়সে বন্ধু আদিত্য ভট্টাচার্যের ৪০ মিনিটের মৌন চলচ্চিত্র ‘পরনোইয়া’ কাজ করার অভিজ্ঞতা আমিরকে চলচ্চিত্রেই ক্যারিয়ার গড়ার জন্য উৎসাহিত করে। ‘অবান্তর’ নামের একটি থিয়েটারে কাজ করার সুবাদে মঞ্চেও তার অভিষেক ঘটে। চাচা নাসির হুসাইনের সঙ্গে সহকারী পরিচালক হিসেবে ‘মঞ্জিল মঞ্জিল’ (১৯৮৪) এবং ‘জবরদস্ত’ (১৯৮৫) সিনেমায় কাজ করেছেন তিনি।
আমির খান অভিনীত প্রথম সিনেমা ‘হোলি’ (১৯৮৪) ব্যবসায়িক সাফল্য পায়নি। এর চার বছর পর তাকে বড় পর্দায় আনেন চাচাতো ভাই মনসুর। মনসুর পরিচালিত প্রথম সিনেমা ছিল ‘কেয়ামত সে কেয়ামত তক’ (১৯৮৮)। জুহি চাওলার বিপরীতে আমির খানের এই সিনেমাটি দারুণ সাফল্য পায়। এর মধ্য দিয়েই তারকা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন আমির খান ও জুহি চাওলা দু’জনেই।
১৯৯০ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত দুর্দান্ত সফল ক্যারিয়ার ছিল আমির খানের। এ সময়ে তার উল্লেখযোগ্য সিনেমার মধ্যে রয়েছে ‘দিল’, ‘দিল হ্যায় কি মন্ত নেহিঁ’, ‘রঙ্গীলা’, ‘আন্দাজ আপনা আপনা’, ‘রাজা হিন্দুস্তানি’, ‘লগান’, ‘দিল চাহতা হ্যায়’ ইত্যাদি।
২০০১ সালে স্ত্রী রীনা দত্তের সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদের পর চলচ্চিত্র থেকে কিছুকালের বিরতি নেন আমির খান। ২০০৫ সালে ‘মঙ্গল পাণ্ডে’ সিনেমার মধ্য দিয়ে আবার বড় পর্দায় ফেরেন তিনি। ২০০৬ সালে বিখ্যাত ‘রঙ দে বাসন্তি’ অনেক পুরস্কার এনে দেয় তাকে। একই বছর সাফল্য আনে ‘ফানা’ও। এরপর ‘তারে জমিন পর’ (২০০৭) পুরস্কারে পুরস্কারে ঝুলি ভরে দেয় আমিরের। রঙ দে বাসন্তি ও তেরে জামিন পর দু’টি সিনেমাই অস্কারের প্রাথমিক মনোনয়ন পেয়েছিল।
২০০৮ সাল থেকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন আমির খান। ‘ঘজিনি’র পর ‘থ্রি ইডিয়টস’ সিনেমা বিশ্বজুড়ে সমাদৃত হয়।
বলিউডের সর্বকালের সবচেয়ে বড় ব্লকবাস্টার ‘দঙ্গল’র পর ‘সিক্রেট সুপারস্টার’ (২০১৭) এবং ‘থাগস অব হিন্দুস্তান’ (২০১৮) অপ্রত্যাশিতভাবে ভালো ব্যবসা করতে পারেনি।
আমির খানে পরবর্তী সিনেমা ‘লাল সিং চাড্ডা’। এটি হলিউডের বিখ্যাত ‘ফরেস্ট গাম্প’ সিনেমার অফিসিয়াল রিমেক। গত বছর মুক্তি পাওয়ার কথা থাকলেও করোনার জন্য সিনেমাটি আটকে যায়।
বাংলাদেশ সময়: ১৩২৩ ঘণ্টা, মার্চ ১৪, ২০২১
জেআইএম