ঢাকা, সোমবার, ১৭ ভাদ্র ১৪৩১, ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৭ সফর ১৪৪৬

বিনোদন

আনোয়ার হোসেন ও আলী জাকেরের জন্মদিন 

বিনোদন ডেস্ক  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২১৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ৬, ২০২১
আনোয়ার হোসেন ও আলী জাকেরের জন্মদিন  আনোয়ার হোসেন ও আলী জাকের

বাংলা চলচ্চিত্র ভুবনের মুকুটহীন সম্রাট আনোয়ার হোসেনের জন্মদিন শনিবার (৬ নভেম্বর)। একইদিনে বিশিষ্ট অভিনেতা, প্রগতিশীল সাংস্কৃতিক আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা ব্যক্তিত্ব আলী যাকেরেও জন্মদিন।

 

গুণী দুই অভিনেতাই বর্তমানে প্রয়াত। আনোয়ার হোসেন ১৯৩১ সালের ৬ নভেম্বর জামালপুর জেলার সরুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। আর ২০১৩ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন এই কিংবদন্তি। অন্যদিকে, ১৯৪৪ সালের ৬ নভেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার রতনপুর ইউনিয়নে জন্মগ্রহণ করেন আলী যাকের। ২০২০ সালের ২৭ নভেম্বর মৃত্যুবরণ করেন তিনি।  

আনোয়ার হোসেন
১৯৫৮ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘তোমার আমার’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে অভিনয় জীবন শুরু করেন আনোয়ার হোসেন। ঢাকার চলচ্চিত্রের এই প্রাণ-পুরুষ পাঁচ শতাধিক চলচ্চিত্রে কাজ করেছেন।

আনোয়ার হোসেন অভিনীত উল্লেখযোগ্য সিনেমা হলো- ‘কাঁচের দেয়াল’, ‘বন্ধন’,‘জীবন থেকে নেয়া’, ‘নবাব সিরাজউদ্দৌল্লাহ’, ‘রংবাজ’, ‘ধীরে বহে মেঘনা’, ‘রুপালী সৈকতে’, ‘নয়নমণি’, ‘নাগর দোলা’, ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’, ‘সূর্য সংগ্রাম’, ‘সূর্যস্নান’, ‘লাঠিয়াল’, ‘জোয়ার এলো’, ‘নাচঘর’, ‘দুই দিগন্ত’, ‘পালঙ্ক’, ‘অপরাজেয়’, ‘পরশমণি’, ‘শহীদ তিতুমীর’, ‘ঈশা খাঁ’, ‘অরুণ বরুণ কিরণমালা’  ইত্যাদি।

১৯৭৫ সালে প্রথম প্রদানকৃত জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার বিজয়ী অভিনেতা ছিলেন আনোয়ার হোসেন। নারায়ণ ঘোষ মিতা পরিচালিত ‘লাঠিয়াল’ চলচ্চিত্রের জন্য শ্রেষ্ঠ অভিনেতা হিসেবে পুরস্কারটি জিতে নেন তিনি। এরপর ১৯৭৮ সালে আমজাদ হোসেনের ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’ সিনেমায় সহ-অভিনেতা হিসেবে দারুণ প্রশংসা পান তিনি, একইসঙ্গে দ্বিতীয়বার পান এই রাষ্ট্রীয় পুরস্কার। এছাড়া ২০১০ সালে তাকে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার-এ আজীবন সম্মাননায় দেওয়া হয়।

আলী যাকের
বিশ্ববিদ্যালয় জীবনেই নাট্যচর্চা শুরু করেছিলেন আলী যাকের। স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে আরণ্যকের ‘কবর’ নাটকে অভিনয় করেছিলেন তিনি। এরপর নাগরিক নাট্য সম্প্রদায়ের সঙ্গে যুক্ত হন এবং মৃত্যুর আগে এই নাট্যদলের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করে গেছেন।

মঞ্চে নূরলদীন, গ্যালিলিও ও দেওয়ান গাজীর চরিত্রে আলী যাকেরের অভিনয় এখনও দর্শক মনে রেখেছে। ‘বহুব্রীহি’, ‘তথাপি পাথর’, ‘আজ রবিবার’এর মতো টিভি নাটকে অভিনয় করেও তিনি প্রশংসা পেয়েছেন।

‘অচলায়তন’, ‘বাকী ইতিহাস’, ‘সৎ মানুষের খোঁজে’, ‘তৈল সংকট’, ‘এই নিষিদ্ধ পল্লীতে’, ‘কোপেনিকের ক্যাপ্টেন’সহ বেশ কয়েকটি মঞ্চ নাটকের নির্দেশনা দিয়েছেন আলী যাকের। বেতারে অর্ধশতাধিক শ্রুতি নাটকেও কাজ করেছেন। অভিনয়, নির্দেশনার বাইরে তিনি ছিলেন একজন নাট্যসংগঠক; পাশাপাশি যুক্ত ছিলেন লেখালেখির সঙ্গে।  

দীর্ঘ কর্মজীবনে সংস্কৃতি অঙ্গনে অবদানের জন্য ১৯৯৯ সালে সরকার তাকে একুশে পদকে ভূষিত করে। এছাড়া বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি পুরস্কার, বঙ্গবন্ধু পুরস্কার, মুনীর চৌধুরী পদক, নরেন বিশ্বাস পদকসহ বিভিন্ন সম্মাননা পেয়েছেন আলী যাকের। মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের অন্যতম ট্রাস্টি আলী যাকের যুক্তরাজ্যের রয়্যাল ফটোগ্রাফিক সোসাইটিরও সদস্য ছিলেন।

আলী যাকেরের স্ত্রী সারা যাকেরও মঞ্চ আর টেলিভিশনের এক সময়ের জনপ্রিয় অভিনেত্রী। তাদের বিয়ে হয় ১৯৭৭ সালে। তাদের দুই ছেলেমেয়ে ইরেশ যাকের ও শ্রিয়া সর্বজয়াও অভিনয়শিল্পী।

বাংলাদেশ সময়: ১২১৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৬, ২০২১
এনএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।