ঢাকা, সোমবার, ১৭ ভাদ্র ১৪৩১, ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৭ সফর ১৪৪৬

বিনোদন

৭৭তম জন্মদিন

‘আলী যাকেরের মন ছিল শিশুর মতন’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২০৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ৬, ২০২১
‘আলী যাকেরের মন ছিল শিশুর মতন’ আলী যাকেরকে নিয়ে কথা বলছেন আসাদুজ্জামান নূর ও ফেরদৌসী মজুমদা। ছবি: রাজীন চৌধুরী/বাংলানিউজ

ঢাকা: বাংলাদেশের নাট্যাঙ্গনের প্রবাদ পুরুষ আলী যাকের। পৃথিবী থেকে বিদায় নেওয়ার পরও নাটকের মাধ্যমে আজও তিনি অমর হয়ে আছেন শিল্পের এই আঙ্গিনায়।

 

নাটক ও আলী যাকের একে অপরের পরিপূরক। সহকর্মী, সুহৃদ ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের হৃদয়ে আলী যাকের এখনও চির ভাস্বর।

শনিবার (০৬ নভেম্বর) সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার মূল মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়েছে আলী যাকেরের ৭৭তম জন্মজয়ন্তী। এই অনুষ্ঠানে সবার প্রিয় ‘ছটলু’ ভাইকে শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় স্মরণ করলেন সহকর্মীরা।  

আলী যাকেরের জন্মদিন উপলক্ষে ‘স্মৃতিতে স্মরণে আলী যাকের’ শিরোনামে জন্মজয়ন্তীর এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে নাগরিক নাট্য সম্প্রদায়। চার পর্বের স্মৃতিচারণ,আবৃত্তি ও গান দিয়ে সাজানো ছিল বর্ণাঢ্য এই আয়োজন।

অনুষ্ঠানের শুরুতেই প্রথম পর্বের স্মৃতিচারণে আলী যাকেরকে বর্ণিল জীবনের আলোকপাত করে স্মৃতিচারণ করেন নাট্যজন আবুল হায়াত, আসাদুজ্জামান নূর, ফেরদৌসী মজুমদার ও আবদুস সেলিম। এরপর রবীন্দ্রনাথের গান ‘তুমি ডাক দিয়েছো কোন সকালে’ গেয়ে শোনান রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা এবং ‘নির্ঝরের স্বপ্নভঙ্গ’ কবিতাটি আবৃত্তি করেন আহকামউল্লাহ।

স্মৃতিচারণে ফেরদৌসী মজুমদার বলেন, ‘আলী যাকের ছিলেন বিশাল লোক কিন্তু শিশুর মতন মন ছিল তার। তার মুখে উচ্চারিত প্রতিশব্দ ও প্রতিটি সংলাপ দিয়ে খুব সহজে মানুষের মনের গভীরে ঢুকে যেতে পারতেন। তিনি আমার দেখা অন্যতম যোগ্য অভিনেতা ছিলেন। আলী যাকের এতো দ্রুত চলে যাবেন তা কখনো ভাবতে পারিনি। তাকে স্মরণ করলে আমি শান্তি পাই, মনে হয় তার আলোয় আলোকিত হই আমি।

দ্বিতীয় পর্বের স্মৃতিচারণে অংশ নেন নাট্যজন আতাউর রহমান, প্রয়াত সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হকের পত্নী আনোয়ারা সৈয়দ হক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু। এরপরে রবিঠাকুরের ‘তুমি নির্মল করো’ গানটি পরিবেশন করেন প্রিয়াংকা গোপ ও ‘আট বছর আগের একদিন’ কবিতাটি আবৃত্তি করেন শিমুল মুস্তাফা।

তৃতীয় পর্বে স্মৃতিচারণ করেন শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী, অভিনেত্রী শিমুল ইউসুফ ও নাট্যকার মাসুম রেজা। এসময় বাবার স্মৃতিচারণ করেন আলী যাকেরের ছেলে ইরেশ যাকের।
 
এ পর্ব শেষে ‘মুক্তির মন্দির সোপান তলে’ গেয়ে শোনান ফারহিন খান জয়িতা এবং আলী যাকের রচিত ‘সেই অরুণোদয়ের থেকে’ পাঠ করেন ত্রপা মজুমদার।

চতুর্থ ও শেষ পর্বের স্মৃতিচারণে অংশ নেন নাট্যাভিনেতা রামেন্দু মজুমদার ও তারিক আনাম খান। সবশেষে স্বামীর স্মৃতিচারণ করেন আলী যাকের পত্নী সারা যাকের।
সবশেষে বাপ্পা মজুমদারের কণ্ঠে ‘পূর্ব দিগন্তে সূর্য উঠেছে’ গানটির মধ্য দিয়ে আয়োজনের সমাপ্তি ঘটে।

১৯৪৪ সালের ৬ নভেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার রতনপুরে জন্মগ্রহণ করেন আলী যাকের। মঞ্চ, টেলিভিশন ও চলচ্চিত্রের এই শক্তিমান অভিনেতা দেশের বিজ্ঞাপন শিল্পের পুরোধা ব্যক্তিত্ব।  

ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২০২০ সালে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হন আলী যাকের। এরপর ২৭ নভেম্বর সকালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

বাংলাদেশ সময়: ২২০৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৬, ২০২১
জিসিজি/জেআইএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।