ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিনোদন

সৈয়দ হাসান ইমামের জন্মদিন

বয়স বাড়ে কিন্তু মন কখনো বুড়ো হয় না: সৈয়দ হাসান ইমাম

বিনোদন ডেস্ক  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৪৭ ঘণ্টা, জুলাই ২৭, ২০২২
বয়স বাড়ে কিন্তু মন কখনো বুড়ো হয় না: সৈয়দ হাসান ইমাম সৈয়দ হাসান ইমাম

স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্রের শব্দসৈনিক, অভিনেতা, আবৃত্তিকার, পরিচালক এবং ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির আহ্বায়ক সৈয়দ হাসান ইমাম। বুধবার (২৭ জুলাই) বরেণ্য এই মানুষটির ৮৭তম জন্মবার্ষিকী।

সৈয়দ হাসান ইমাম ১৯৩৫ সালের ২৭ জুলাই ভারতের বর্ধমানে মামার বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন তিনি।  

এবারের জন্মদিন নিয়ে সৈয়দ হাসান ইমাম বলেন, আমি কখনই জন্মদিন পালন করি না। আমার ছেলে থাকে ওয়াশিংটনে, ছোট মেয়ে টরেন্টোতে আর বড় মেয়ে ঢাকায়। আমার ছেলে-মেয়ে-নাতি-নাতনিরাই দিনটা উদযাপন করে।

জীবনের এই বষয়ে এসে নিজের উপলব্ধি নিয়ে সৈয়দ হাসান ইমাম বলেন, যতদিন বেঁচে আছি, প্রতিটি দিনই উদযাপন করে যেতে চাই। হাসিমুখে থাকতে চাই। সত্যি বলতে কী, বেঁচে থাকাটাই সুন্দর। বেঁচে থাকার চেয়ে সুন্দর আর কিছু হতে পারে না। জীবন নিয়ে আমার ধারণা হচ্ছে- মানুষের বয়স বাড়ে, মানুষ বুড়ো হয়, কিন্তু মন কখনো বুড়ো হয় না। মন চির যৌবনই থেকে যায়। জীবন মানে কেবল নিজের জন্য নয়, সব মানুষের হয়ে থাকার নামই জীবন।

সৈয়দ হাসান ইমাম ১৯৬০ সালে চলচ্চিত্রে এবং ১৯৬৪ সাল থেকে টেলিভিশনে অভিনয় শুরু করেন তিনি। ১৯৬১ সালে কেন্দ্রীয় উৎসবে ডামা সার্কেল প্রযোজিত ‘তাসের দেশ’, ‘রাজা ও রানী’ এবং ‘রক্তকরবী’ নাটকে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেন হাসান ইমাম।

বেতার ও বাংলাদেশ টেলিভিশনের জন্মলগ্ন থেকেই নাটকে নিয়মিত অংশ নেন সৈয়দ হাসান ইমাম। তার অভিনীত টিভি নাটকের মধ্যে উল্লেখযোগ্য মুস্তাফা মনোয়ার নির্দেশিত উইলিয়াম শেক্সপিয়ারের ‘মুখরা রমণী বশীকরণ’, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘রক্তকরবী’, মোস্তফা কামাল সৈয়দ প্রযোজিত ‘স্বপ্ন বিলাস’ ইত্যাদি।

অভিনয়ের পাশাপাশি পরিচালনাও করেছেন হাসান ইমাম। তার পরিচালিত নাটকের তালিকায় রয়েছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘রক্তকরবী’, ম্যাক্সিম গোর্কির ‘মা’, সোমেন চন্দের ‘না’ ইত্যাদি। এর মধ্যে ১৯৬৯-এর গণআন্দোলনের সময় বাংলা একাডেমির বটমূলে সংস্কৃতি সংসদ আয়োজিত প্রায় ১০ হাজার মানুষের উপস্থিতিতে ‘রক্তকরবী’ নাটকটি সাড়া ফেলেছিলো।

হাসান ইমাম অভিনীত প্রথম দিকের সিনেমার মধ্যে ‘রাজা এলো শহরে’, ‘শীত বিকেল’, ‘জানাজানি’, ‘ধারাপাত’ ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। খান আতাউর রহমানের ‘অনেকদিনের চেনা’ সিনেমায় অভিনয়ের জন্য ১৯৬৫ সালে সমগ্র পাকিস্তানের চলচ্চিত্র উৎসবে শ্রেষ্ঠ অভিনেতার সম্মান লাভ করেন হাসান ইমাম।

দেশের মুক্তিযুদ্ধসহ নানা সংগ্রামে, সংকটে তিনি ছিলেন ন্যায় আর মুক্তির পক্ষে একজন চৌকস সংগঠক ছিলেন সৈয়দ হাসান ইমাম। ১৯৬৪ সালের সাম্প্রদায়িকতাবিরোধী আন্দোলনের সক্রিয় সংগঠক ছিলেন। ১৯৬৯ সালের গণআন্দোলন ও ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ তার জীবনের এক গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এবং জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধের দাবিতে শহীদ জননী জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে গড়ে ওঠা আন্দোলনেরও অন্যতম পুরোধা ব্যক্তিত্বও তিনি।

সেরা অভিনেতা ও সেরা চলচ্চিত্র নির্মাতা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার এবং বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতি পুরস্কার পেয়েছেন সৈয়দ হাসান ইমাম। মুক্তিযুদ্ধের বিশেষ অবদানের জন্য পান সিকোয়েন্স পুরস্কার। রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ সম্মান একুশে পদকেও ভূষিত হয়েছেন তিনি। কয়েকটি আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে বিচারকের দায়িত্বও পালন করেছেন। এছাড়া ২০১৬ সালে তিনি স্বাধীনতা পুরস্কার লাভ করেন।

বাংলাদেশ সময়: ১১৪৭ ঘণ্টা, জুলাই ২৭, ২০২২
এনএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।