দেশীয় চলচ্চিত্রের আশি ও নব্বই দশকের জনপ্রিয় অভিনেতা জসিম। ঢাকাই সিনেমার অ্যাকশনধর্মী চলচ্চিত্রের অন্যতম পথ-প্রদর্শক ছিলেন কিংবদন্তি এই অভিনেতা।
তবে সিনেমার দৃশ্যে লটারি জেতার জুড়ি ছিল না নায়ক জসিমের। লটারি বিষয়ক কথা লিখে মাঝেমধ্যেই সামাজিকমাধ্যমে অনেকেই তার ছবি পোস্ট করেন। কারণ অনেক সিনেমায় লটারি জিতেছেন তিনি। আবার গুন্ডাদের কাছে লটারির টাকা হারিয়ে নিঃস্বও হয়েছেন। সেই ‘লটারি জেতা’ নায়ক জসিমের জন্মদিন আজ।
১৯৫০ সালের ১৪ আগস্ট ঢাকার কেরানীগঞ্জের বক্সনগর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন জসিম। দেশের দুর্দিনে ১৯৭১ সালে রণাঙ্গনে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে অস্ত্র হাতে ঝাঁপিয়েও পড়েছিলেন তিনি।
খলনায়ক হিসেবে অভিনয় শুরু করলেও জসিম জনপ্রিয়তা পান নায়ক হিসেবে। তার বড় পর্দায় অভিষেক হয় ১৯৭৩ সালে শেখ লতিফ পরিচালিত ‘দেবর’ সিনেমার মাধ্যমে। তবে জনপ্রিয়তা পান বলিউডের ‘শোলে’ সিনেমার রিমেক ‘দোস্ত দুশমন’-এ অভিনয়ের মাধ্যমে। এরপর একের পর এক সিনেমায় অভিনয় করে সিনেপ্রেমীদের মনে জায়গা করে নেন তিনি।
প্রায় তিন শতাধিক সিনেমায় অভিনয় করেছেন জসিম। আশি ও নব্বই দশকের প্রায় সব জনপ্রিয় নায়িকাদের সঙ্গেই জুটি বেঁধেছেন। তবে শাবানা আর রোজিনার সঙ্গে তার জুটি দর্শক মহলে বেশি সমাদৃত ছিল।
জসিম অভিনীত উল্লেখযোগ্য সিনেমার মধ্যে রয়েছে ‘তুফান’, ‘জবাব’, ‘নাগ নাগিনী’, ‘বদলা’, ‘বারুদ’, ‘সুন্দরী’, ‘কসাই’, ‘লালু মাস্তান’, ‘নবাবজাদা’, ‘অভিযান’, ‘কালিয়া’, ‘বাংলার নায়ক’, ‘গরিবের ওস্তাদ’, ‘ভাইবোন’, ‘মেয়েরাও মানুষ’, ‘পরিবার’, ‘রাজা বাবু’, ‘বুকের ধন’, ‘স্বামী কেন আসামী’, ‘লাল গোলাপ’, ‘দাগী’, ‘টাইগার’, ‘হাবিলদার’, ‘ভালোবাসার ঘর’ প্রভৃতি।
ঢাকাই সিনেমার নায়কদের মধ্যে জসিমই একমাত্র নায়ক, যার নামে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন সংস্থা (বিএফডিসি)তে একটি ফ্লোরের নামকরণ করা হয়েছে।
মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণজনিত কারণে ১৯৯৮ সালের ৮ অক্টোবর পৃথিবী থেকে বিদায় নেন জসিম। ব্যক্তি জীবরে দুই বিয়ে করেছিলেন তিনি। তার প্রথম স্ত্রী ছিলেন নায়িকা সুচরিতা। পরবর্তীতে ঢাকার প্রথম সবাক সিনেমার নায়িকা পূর্ণিমা সেনগুপ্তার মেয়ে নাসরিনকে বিয়ে করেন এই চিত্রনায়ক।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৬ ঘণ্টা, আগস্ট ১৪, ২০২২
এনএটি