বিশ্বকাপ ফুটবল শুরু হচ্ছে রোববার (২০ নভেম্বর)। বিশ্বকাপের জ্বরে কাঁপছেন বিশ্বের সব ফুটবলপ্রেমীরা।
সাধারণ মানুষের পাশাপাশি শোবিজের মানুষও মেতে উঠেছেন ফুটবলের উন্মাদনায়। পছন্দের দল নিয়ে সবার মধ্যে চলছে তুমুল আলোচনা। বাংলা গানের যুবেরাজ খ্যাত গায়ক আসিফ আগেই জানিয়েছেন তিনি ব্রাজিলের সমর্থক।
শনিবার (১৯ নভেম্বর) ফেসবুক স্ট্যাটাসে ব্রাজিলের সমর্থন করার স্মৃতিচারণ করেন। সেখানে এই গায়ক লেখেন, ১৯৮২ সালে ক্লাস ফোরে পড়ি। বাসায় ছয় চ্যানেলের সাদাকালো ফিলিপস টিভি। রাত জেগে খেলা নিয়ে আব্বার কোনো অবজেকশন নেই, এদিকে আম্মাও ব্রাজিল সাপোর্টার। তিনি খেলা দেখেন, সঙ্গে আমরাও। বাসায় লোকজন ভরপুর একটা উৎসবমুখর পরিবেশ।
পরিবারের কে কোন দলের সমর্থক তা জানিয়ে আসিফ লেখেন, বেগম (আসিফের স্ত্রী) জার্মানির সাপোর্টার হলেও ব্রাজিলের প্রতি দুর্বল, রণ সরাসরি ব্রাজিল। রুদ্র মেসির সাপোর্টার হলেও বেসিক ব্রাজিল। আমার মেয়ে রঙ্গন ছোট হলেও ওর ম্যাচুউরিটি বলে সেও ব্রাজিল সাপোর্টার। ভাইবোনদের মধ্যে ইতালি জার্মানি আর ইংল্যান্ডের আনকমন সাপোর্টারদের অকার্যকর উপস্থিতি সহনীয় পর্যায়েই আছে।
অন্যদিনে আর্জেন্টিনা সম্পর্কে আসিফ তার স্ট্যাটাসে লেখেন, আর্জেন্টিনার কোনো সাপোর্টার নেই ঘরে, কষ্টদায়ক ব্যাপার একটু। গতকালই খবর পেলাম বৌমা ঈশিতা আর্জেন্টিনা সমর্থক, অবশ্য এ বিষয় নিয়ে তার ব্রাজিলিয়ান হাজবেন্ডের সঙ্গে এখনো সাংঘর্ষিক কোনো কিছু দৃশ্যমান হয়নি। শ্বশুর হিসেবে আমি স্বাগত জানিয়েছি।
যোগ করে তিনি লেখেন, চার বছর পরপর ফুটবল বিশ্বকাপ ফিরে আসে গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ আখ্যা নিয়ে। ক্রিকেট খেলা শিখেছি, নিজে স্পোর্টিং মেন্টালিটির। ইদানীংকালে খেলাধুলার মূল স্পিরিট অভদ্র লেভেলের তর্কে পৌঁছে গেছে। সমর্থকদের আক্রমণ পাল্টা আক্রমণে প্রতি মুহূর্তে স্পোর্টিং স্পিরিট নিহত হচ্ছে। অথচ বিশ্বভ্রাতৃত্বের সিম্বলিক যথার্থতা খোঁজা হয় বিশ্বসেরা এসব টুর্নামেন্টে।
দল সমর্থকদের কেমন হওয়া উচিত এ সম্পর্কে আসিফ লেখেন, আমার আশপাশে আর্জেন্টাইন সাপোর্টারের সংখ্যা আশঙ্কাজনক। জার্মানি-ইতালির কিছু জেনুইন সাপোর্টারও ফসিল হিসেবে টিকে আছে। আজ আর্জেন্টাইন বন্ধুদের কাছে মুচলেকা দিয়েছি, ব্রাজিল ভালো না খেললেও তাদের সঙ্গে অসৌজন্যতা করবো না। যদি করি তাহলে তারা বাসায় খেলা দেখবে, আমাকে বয়কট করবে। এই ধরনের হুমকির মুখে আরো স্পোর্টিং হওয়ার শপথ নিতেই হয়েছে। আসুন বিনোদিত হই, খেলাকে খেলা হিসেবেই নেই, অনেক কাহিনিতে জর্জরিত বিশ্বে একটু আনন্দিত থাকি। আনন্দ করুন, সমালোচনা করুন, মজা করুন, স্মার্ট সমর্থক হিসেবে অন্য দলের সমর্থকদেরও সম্মান দিন।
আসিফ শেষের দিকে লেখেছেন, যে কোনো স্পোর্টস নিছক বিনোদন নয়, জীবনযুদ্ধের বৈশ্বিক কাঠিন্যের বিরুদ্ধে কিছুটা আনন্দ পাবার জন্য এক মহাবিদ্রোহ। পরস্পরের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা বা শত্রুতা তৈরির ক্ষেত্র নয়। তাই আর কোনো মূর্খতা নয়, বি স্পোর্টিং।
বাংলাদেশ সময়: ১৭১৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৯, ২০২২
এনএটি