বাগেরহাট: বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলায় প্রকাশ্যে বিক্রি হচ্ছে শিকার আহরণ-মজুদ ও বিক্রি নিষিদ্ধ শাপলাপাতা মাছ। অন্যান্য প্রজাতির মাছের সঙ্গে এ মাছটি বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা।
বিভিন্ন সময় মোরেলগঞ্জ উপজেলা সদরের প্রধান বাজারে গিয়ে দেখা যায় মো. হুমায়ুন ও নজরুল ইসলাম নামের দুই ব্যবসায়ী শাপলাপাতা মাছ ফালি ফালি করে কেটে বিক্রি করছেন। ছয়শ থেকে সাতশ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে এই মাছ।
শাপলাপাতা মাছ নিষিদ্ধ তারপরও কেন বিক্রি করছেন, এমন প্রশ্নে ব্যবসায়ী মো. হুমায়ুন বাংলানিউজকে বলেন, আপনার জানায় ভুল রয়েছে। হাঙর ও কুমির বিক্রি নিষিদ্ধ, শাপলাপাতা মাছ নিষিদ্ধ নয়। এই দেখেন না, অনেক বড় মাছ সবাই কিনছেন।
মাছ ব্যবসায়ী নজরুল বাংলানিউজকে বলেন, এই মাছ আসলে এক সময় অনেক পাওয়া যেত। এখন আমাদের এলাকায় পাওয়া যায় না। পাথরঘাটা থেকে এনেছি একটি মাছ। এটির ওজন প্রায় ৪০ কেজি হবে।
এই মাছতো বিক্রি করা নিষিদ্ধ, এমন প্রশ্নে ওই ব্যবসায়ী বলেন, আমি এ তথ্য জানি না। বাজারে চাহিদা থাকায় বিক্রি করতে এনেছি।
শাপলাপাতা মাছের বৈজ্ঞানিক নাম ‘স্টিং ফিশ’। ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব নেচারে (আইইউসিএন) তালিকায় শাপলাপাতা মাছকে মহাবিপন্ন প্রজাতি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
বাংলাদেশের বণ্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন-২০১২ সালের আইনানুযায়ী দেশে শাপলাপাতা মাছ ধরা, আহরণ-মজুদ ও বিক্রি নিষিদ্ধ। এরপরেও বাগেরহাটের বিভিন্ন এলাকায় এ মাছটি বিক্রি করতে দেখা যায়।
এ বিষয়ে মোরেলগঞ্জ উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা বিনয় কুমার পাল বলেন, শাপলাপাতা মাছটি বন বিভাগের শিডিউলভুক্ত। তারাই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।
এছাড়া আমার বিষয়টি জানা ছিল না, খোঁজ-খবর নিয়ে বন বিভাগের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি।
বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ, খুলনার বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) নির্মল কুমার পাল বলেন, আইইউসিএনর তালিকাভুক্ত প্রাণী শিকার, বিক্রয় ও মজুদ রোধে আমরা খুবই তৎপর। শাপলাপাতা মাছ বিক্রির বিষয়টি আমার জানা ছিল না। খোঁজ-খবর নিয়ে অভিযান চালিয়ে, দোষী ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১২১৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০১, ২০২৪
এএটি