ঢাকা: করভিড বা কাক জাতীয় খেচর প্রজাতির মধ্যে রং ও সৌন্দর্যের দিক থেকে সবচেয়ে বৈচিত্রময় হচ্ছে ইউরেশিয়ান জে বা নীল কণ্ঠ পাখি। খাবার সংগ্রহে প্রয়োজনে অপর স্বজাতিদেরও জমানো খাবারে হানা দেয় নীলকণ্ঠ পাখিরা।
ঘন জঙ্গলে বাস করা এই পাখিরা বুদ্ধিমত্তার জন্য বিখ্যাত করভিড বা কাকজাতীয় প্রাণীর মধ্যে সবচয়ে লাজুক হিসেবে পরিচিত। তবে অন্যান্য কাক জাতীয় পাখির মত দলবদ্ধ হয়ে বসবাস না করে অনেকটা লোক চক্ষুর অন্তরালে থাকতেই পছন্দ করে তারা।
সম্প্রতি কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণায় দেখা গেছে কষ্ট করে খাবার খুঁজে বের করার থেকে প্রতিবেশীদের গোপন আস্তানা থেকেই খাবার চুরি করে আনছে পাখিগুলো।
সম্প্রতি এনিমেল বিহেভিয়ার নামের একটি সাময়িকীতে এ সংক্রান্ত গবেষণার তথ্য প্রকাশ করা হয়।
মূলত জঙ্গলে বাস করা ইউরেশীয় জে বা নীল কণ্ঠ পাখি ওক গাছের ফল ও বীজ খেয়ে বেঁচে থাকে। কেমব্রিজের তরফে পরিচালিত পূর্বের গবেষণাগুলোয় দেখা গেছে ভবিষ্যতের জন্য প্রয়োজনীয় খাবারের হিসাব বের করে তা সঞ্চয় করে রাখতে পারে এ পাখিগুলো।
তবে খাদ্য সংগ্রহ করে জমা রাখার বিষয়ে পাখিটির আচরণ আরও ভালো ভাবে বুঝতে বিজ্ঞানীরা সম্প্রতি কয়েক জোড়া জে পাখির মধ্যে পারস্পরিক আচরণ পর্যবেক্ষণ করেন। এ সময় খাবার ভরা একটি পাত্র তাদের সামনে রাখা ছিলো। যার মধ্যে ছিলো তাদের প্রিয় ওক গাছের বীজ।
গবেষক দলের প্রধান কেমব্রিজের অধ্যাপক ক্লেটন বলেন,“আমাদের পর্যবেক্ষণে থাকা পাখিগুলো প্রথমে নিজেদের জন্য খাবার সরিয়ে রেখে এবং পরে অন্য প্রতিদ্বন্দ্বী পাখি গুলোর জমানো খাবারের ওপর চড়াও হয়। কখনও কখনও বা অন্য পাখির পুরো খাবারটিই চুরি করে তারা।
তবে খাবার লুকানো এবং অন্যের খাবার চুরি করার সময় জে পাখি প্রতিদ্বন্দ্বীর দূরে সরে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করে বলে জানান প্রফেসর ক্লেটন। তিনি বলেন, পাখিগুলোর এই আচরণ নির্দেশ করে যে তারা তাৎক্ষণিকভাবে আশপাশের বদলে যাওয়া পরিস্থিতি উপলব্ধি করে সিদ্ধান্ত নিতে সক্ষম।
তিনি বলেন,‘কখনও খাবার লুকানো এবং কখনো খাবার চুরির বিষয়টিই প্রমাণ করে তাৎক্ষণিকভাবে পরিস্থিতি উপলব্ধি করতে পাখিগুলোর সক্ষমতা উপস্থিত বুদ্ধির থেকেই সৃষ্টি হয়েছে।
এদিকে এ গবেষণার ফলাফল প্রকাশের পর থেকে করভিড বা কাক জাতীয় প্রাণীর মধ্যে বুদ্ধিমত্তার প্রসারের প্রক্রিয়ার ব্যাপারে কৌতূহল সৃষ্টি হয়েছে বিজ্ঞানীদের মধ্যে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৮ ঘণ্টা,সেপ্টেম্বর ২৬, ২০১২
সম্পাদনা:রাইসুল ইসলাম, নিউজরুম এডিটর