ঢাকা, মঙ্গলবার, ৮ আশ্বিন ১৪৩২, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০০ রবিউস সানি ১৪৪৭

পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য

বৈদ্যুতিক তারে মরে ঝুলছিল লজ্জাবতী বানর

ডিভিশনাল সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫:০২, সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২৫
বৈদ্যুতিক তারে মরে ঝুলছিল লজ্জাবতী বানর তারে মরে ঝুলছে লজ্জাবতী বানর।

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার নোয়াগাও এলাকার সাইটুলা খামার প্রজেক্ট–২-এ আবারও বৈদ্যুতিক তারে জড়িয়ে আরেকটি বিপদাপন্ন বন্যপ্রাণী লজ্জাবতী বানর প্রাণ হারিয়েছে।

মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বিষয়টি বাংলানিউজকে জানিয়েছেন স্থানীয় বন্যপ্রাণী উদ্ধার ও সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ বন্যপ্রাণী সেবা ফাউন্ডেশনের পরিচালক স্বপন দেব সজল।

 

তিনি বলেন, সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় শ্রীমঙ্গল নোয়াগাও সাইটুলা খামার প্রজেক্ট–২ এর ম্যানেজার বাংলাদেশ বন্যপ্রাণী সেবা ফাউন্ডেশনকে জানান যে, একটি লজ্জাবতী বানর বৈদ্যুতিক তারে আটকে গেছে।

খবর পেয়ে আমি পরিবেশকর্মী রাজদীপ দেব দীপ ও লিটন দেবকে নিয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হই। সেখাসে গিয়ে দেখি যে লজ্জাবতী বানরটি বৈদ্যুতিক তারে ঝুলে আছে। এরপর ফোনে স্থানীয় পল্লী বিদ্যুৎ বিভাগকে অবহিত করলে তারা প্রায় ১০ মিনিটের জন্য বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করে দেয়। এরপর বানরটিকে নিচে নামানো হলে দেখা যায়, দুঃখজনকভাবে বানরটি মারা গেছে। তার শরীরে একটি গতিবিধি পর্যবেক্ষণ যন্ত্র (ট্র্যাকিং ডিভাইস) গলায় ঝোলানো ছিল। পরবর্তীতে মৃত লজ্জাবতী বানরটিকে শ্রীমঙ্গল বন বিভাগের রেঞ্জ কার্যালয়ে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানান তিনি।  

বাংলাদেশ বন্যপ্রাণী সেবা ফাউন্ডেশনের পরিচালক স্বপন দেব সজল আরও জানান যে, ১৮ সেপ্টেম্বর শ্রীমঙ্গল উপজেলার পশ্চিম ভাড়াউড়া এলাকায় অনুরূপভাবে বৈদ্যুতিক তারে জড়িয়ে আরেকটি বিপদাপন্ন প্রজাতির লজ্জাবতী বানর প্রাণ হারিয়েছিল।

মঙ্গলবার বন্যপ্রাণী গবেষণামূলক সংস্থা প্লামলরিসের সাবেক ফিল্ড-সুপারভাইজার এবং বন্যপ্রাণী উদ্ধারকারী চঞ্চল গোয়ালা চার দিনের ব্যবধানে দুটি লজ্জাবতী বানর মারা যাওয়ার সম্ভাব্য কারণ হিসেবে বাংলানিউজকে বলেন, এই নিশাচর প্রাণীগুলো ঘাসফড়িং, মথ, প্রজাপতি প্রভৃতি ধরে ধরে খায়। জঙ্গলের চেয়ে আলোময় স্থানে শিকার ধরে খাওয়া সহজ হয় বলে হয়তো খাদ্যের সন্ধানে তারা বন থেকে বনসংলগ্ন শহরের দিকে অগ্রসর হয়েছিল এবং এই পথ হিসেবে তারা বৈদ্যুতিক খুঁটি এবং তার বেছে নিয়েছে। ওরা বৃক্ষচারী, গাছে গাছেই মূলত চরে বেড়ায়। ফলে তাদের শিকার ধরার যাত্রাপথে পর্যন্ত গাছ না থাকায় বৈদ্যুতিক খুঁটির মধ্য দিয়ে যেতে গিয়েই ওরা নির্মমভাবে মারা গেছে।  

ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব নেচার (আইইউসিএন), বাংলাদেশের রেড লিস্টে লজ্জাবতী বানর প্রজাতিকে ‘বিপদাপন্ন বন্যপ্রাণী’ হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।

বিবিবি/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।