বাগেরহাট: বাঘে মহিষে একঘাটে জল খাওয়া পৃথিবীর বিচিত্র ঘটনার একটি। প্রাণীকূলে এমন বিচিত্র ঘটনা রয়েছে আরও।
এমন একটি বিরল ঘটনা দেখা গেছে বাগেরহাট সদর উপজেলার ছোটসিংগা গ্রামে।
নিত্যানন্দ সাধু বাড়িতে দীর্ঘদিন ধরে কুকুর পোষেন। তার বাড়ির আশপাশেও রয়েছে আরও বেশ কয়েকটি পালিত কুকুর। সাধুর বাড়ি একটি মন্দিরও রয়েছে। এ মন্দিরে প্রতিদিন শত শত ভক্ত আসেন পূজা অর্চনা করতে।
প্রায় ৫ মাস আগে বরিশালের এক ভক্ত দু’টি শিয়ালের বাচ্চা নিয়ে আসেন সাধুর মন্দিরে। ছোট্ট বাচ্চা দু’টিকে দেখে সাধুর বৃদ্ধ মা কুমোদিনী রানীর বড় মায়া হয়। তিনি বাচ্চা দু’টিকে মায়ের মমতা দিয়ে আদর যত্নে পালন করতে থাকেন। এসময় বাড়িতে থাকা কুকুরটির সাথে শিয়ালের বাচ্চা দু’টির বেশ বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
সেই বন্ধুত্বটা এখন শুধু সহাবস্থানের মধ্যে থেমে নেই, তারা একসঙ্গে খেলাধুলা করে প্রতিদিন সময় কাটায়। ছয় মাস বয়সী বাচ্চা দু’টি বেশ বড় হয়ে উঠলেও শিয়াল-কুকুরের বন্ধুত্ব কিন্তু অটুট!
শুধু তাই নয়, সাধারণ শিয়ালের মতো এরা মাংসাশীও নয়। কুকুর যা খায়, তার সবই খায় এরা। একইসঙ্গে বাড়ির আঙিনায় রাখা মাটির পাত্রে ভাত, মাছ, কাটাকুটি খেতে দেওয়া হয় তাদের। তাদের মধ্যে কোনোরকম বিরোধও কখনো দেখা যায় না। সব সময় ছাড়া থাকলেও অন্যের ক্ষতির কথাও কখনো শোনা যায়নি।
এই বিচিত্র ঘটনার সাক্ষী হতে বিভিন্ন জায়গা থেকে প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ ভিড় জমান নিত্যানন্দ সাধুর বাড়িতে।
এ ব্যাপারে নিত্যানন্দ সাধুর সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, সব প্রাণীই আদর, মমতা পেতে চায়। আর আদর, মমতা, ভালোবাসা পেলে পোষ মেনে সব প্রাণীই একসঙ্গে এভাবে বন্ধুপূর্ণ পরিবেশে থাকতে পারে। আমার বাড়ির শিয়াল-কুকুরের বন্ধুত্বের বিচিত্র ঘটনাই তার প্রমাণ।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৫ ঘণ্টা, আগস্ট ১৩, ২০১৩
সম্পাদনা: আসিফ আজিজ, নিউজরুম এডিটর/[email protected]/জুযেল মাজহার, কনসালট্যান্ট এডিটর