ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য

কাঁঠালীচাঁপার গন্ধে আকুল

মীম নোশিন নাওয়াল খান, নিউজরুম এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ২১, ২০১৩
কাঁঠালীচাঁপার গন্ধে আকুল

কাঁঠালীচাঁপা। কড়া সুবাসযুক্ত এ ফুলটি চিনি আমরা কম-বেশি সবাই।

বর্ষাকালে কাঁঠালের গন্ধ ছড়িয়ে মানুষকে দ্বিধান্বিত করাই এ ফুলের কাজ!

ফুল কাঁঠালীচাঁপা কাঁঠালচাঁপা নামেও পরিচিত। বৈজ্ঞানিক নাম Artabotrys odoratissimus। পরিবার Annonaceae, রাজ্য Plantae। আদি নিবাস ইন্দো-মালয়।  

কাঁঠালের মতো সুবাস ছড়ানোর কারণেই সবুজাভ হলুদ রঙের এই ফুলটির নাম হয়েছে কাঁঠালীচাঁপা।

কাঁঠালীচাঁপা লতানো গুল্ম। আকারে হয় বিশাল। নিয়মিত ছেঁটে রাখতে হয়। ছোট বাগানের জন্য উপযোগী নয় কাঁঠালচাঁপা, তবে সুন্দর করে ছেঁটে রাখলে ছোট বাগানেও লাগানো যায়। গাছ বড় হলে নুয়ে পড়ে, তবে ছোট করে ছেঁটে রাখলে দাঁড়িয়ে থাকতে পারে। ছোট ডালগুলো কাঁটায় রূপান্তরিত হতে পারে।  

কাঁঠালচাঁপার পাতা সবুজ। অপরিণত অবস্থায় সবুজাভ রং থাকে কাঁঠালীচাঁপা ফুলের। পরিণত হলে রং হয় স্বর্ণালী হলুদ। ফুলের পাপড়ি ৬টি, বোঁটা বাঁকা, গড়ন আঁকশির মতো।

ফল গুচ্ছবদ্ধ ও গোলাকার। দেখতে দেখায় আঙুরের থোকার মতো। পাকলে খেতে মিষ্টি হয়। পাখির প্রিয় খাদ্য কাঁঠালীচাঁপার ফল।

কাঁঠালীচাঁপা কষ্টসহিষ্ণু গাছ। সেজন্য রোদ-বৃষ্টি ছাড়াও বেঁচে থাকতে পারে। তাই ঘরের ভেতরে টবেও লাগানো হয় এ গাছ। বনসাই করার জন্য উপযুক্ত গাছ কাঁঠালচাঁপা। লতানো উদ্ভিদ বলে ইচ্ছেমতো আকার দেওয়া যায়। ঘরের ভেতরে ছায়ায় বেঁচে থাকতে পারলেও সেভাবে রাখলে ফুল ফোটে না কাঁঠালচাঁপায়। ফুল ফোটার জন্য বৃষ্টির প্রয়োজন হয়।

বাংলাদেশের প্রায় সব অঞ্চলেই পাওয়া যায় কাঁঠালীচাঁপা। তবে এদেশে এই উদ্ভিদটি অবহেলিত। গাছ সহজলভ্য হলেও ফুল সহজে চোখে পড়ে না। মূলত বর্ষার ফুল কাঁঠালীচাঁপা। গ্রীষ্ম ও বর্ষা দুই ঋতুতেই পাওয়া যায়। তবে অন্যান্য সময়েও দু-একটি কাঁঠালীচাঁপার দেখা মেলে।

কাঁঠালচাঁপার ওষুধি গুণাগুণও রয়েছে। এর শুকনো ফুল চীনা ওষুধ ‘ইয়া হোম’ তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। রক্ত ও হৃদজনিত রোগের টনিক হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এছাড়া আরও উপকারিতা রয়েছে কাঁঠালচাঁপার।

মিষ্টি গন্ধ আর হলুদ সৌন্দর্যে মন কাড়ে কাঁঠালচাঁপা ফুল। বাংলাদেশে এই ফুলের কদর কম হলেও সবাই তার সৌন্দর্য আর বিভ্রম তৈরির দক্ষতায় মুগ্ধ হন। কবি-সাহিত্যিকরাও তাদের সাহিত্যে কাঁঠালচাঁপাকে তুলে এনেছেন বারবার। আর সেসব সাহিত্যের কথা এলেই প্রথমে আসে আল মাহমুদের সেই কবিতার কথা:   

আম্মা বলেন পড়রে সোনা, আব্বা বলেন মন দে,
পড়ায় আমার মন বসে না কাঁঠালচাঁপার গন্ধে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬২১ ঘণ্টা, অক্টোবর ২১, ২০১৩
এমএনএনকে/এএ/জেসিকে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।