ঢাকা, শুক্রবার, ২৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১১ অক্টোবর ২০২৪, ০৭ রবিউস সানি ১৪৪৬

পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য

যশোরে ঝড়ে সহস্রাধিক পাখির মৃত্যু

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ৬, ২০১৬
যশোরে ঝড়ে সহস্রাধিক পাখির মৃত্যু ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

যশোর: যশোরে ঝড়ের কবলে পড়ে কমপক্ষে সহস্রাধিক পাখির মৃত্যু হয়েছে।

 

মঙ্গলবার (০৬ এপ্রিল) রাতে সদর উপজেলার তীরেরহাট গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

একত্রে এতো বিপুল সংখ্যক পাখির মৃত্যুতে পরিবেশের উপরে অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে বলে মন্তব্য বিশেষজ্ঞদের। মৃত পাখির মধ্যে বিলুপ্ত প্রায় জাতীয় পাখি দোয়েল, শালিক, মাছরাঙ্গা, ঘুঘু, দোয়েল ও বুলবুলি পাখির সংখ্যা বেশি।

সরেজমিন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, তীরেরহাট গ্রামের পশ্চিমপাড়ার খলিল, এলাহী বক্স, কালাম ও বালিয়াঘাটের লিয়াকত মাস্টারের মেহগনি বাগানে শত’ শত’ মৃত পাখির ছড়াছড়ি। এছাড়াও কুকুরে অর্ধশত মৃত পাখি খেয়ে ফেলেছে বলেও জানান স্থানীয়রা।

তীরেরহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আলম বিশ্বাস বাংলানিউজকে বলেন, একসঙ্গে এতো পাখির মৃত্যু এই এলাকার মানুষকে অনেক কষ্ট দিয়েছে। এমনকি, স্কুলে পাঠদানের সময় ক্লাস রুমে শিশু শিক্ষার্থীদের মুখেও একই বিষয়ে আক্ষেপ শুনেছেন তিনি।

তিনি আরও জানান, সকালে এলাকার বাগানে হাজার হাজার মৃত পাখি পড়ে থাকতে উৎসুক মানুষের ভিড় জমে। পরে মৃত পাখির ছড়াছড়াতি পরিবেশ নষ্টের আশঙ্কায় মিন্টু নামের স্থানীয় এক সার ব্যবসায়ী মৃত পাখিগুলো জড়ো করে মাটিচাপা দেওয়ার ব্যবস্থা করেন।   |

তীরেরহাট বাজারের সার ব্যবসায়ী মিন্টু বাংলানিউজকে বলেন, আধা ঘণ্টার ঝড়ে এতো পাখির মৃত্যু জীবনে এই প্রথম দেখলাম। এরপর মৃত পাখির কারণে যেন পরিবেশের ক্ষতি না হয় এজন্য গর্ত খুঁড়ে মাটিচাপা দিয়েছি। তার মতে, সব মিলিয়ে কমপক্ষে ৫ হাজার মৃত পাখি মাটিচাপা দিয়েছেন তিনি।

তীরেরহাট গ্রামের প্রবীণ ব্যক্তি আতরআলী দফাদার, নিজাম উদ্দিন, জাকির হোসেনসহ অনেকেই বাংলানিউজকে বলেন, প্রতিদিন ভোরে ও সন্ধ্যায় এলাকার বাগানগুলো পাখির কিচির মিচির ডাকে  মুখরিত হয়ে উঠতো। এতো পাখির মৃত্যুর পর এলাকার বাগানে আর পাখি থাকলো বললেই চলে। আজ থেকে হয়তো বাগানগুলোতে শোনা যাবে না আর পাখির কলতান।

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের ডিন ড. সাইবুর রহমান মোল্যা বাংলানিউজকে বলেন, পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় পাখির অপরিসীম অবদান  রয়েছে। এছাড়াও ফসল খেতের ক্ষতিকারক পোকামাকড় খেয়ে কৃষকের অনেক উপকার করে পাখি।

তিনি বলেন, ঝড়ে বিভিন্ন ধরনের ক্ষতি হয়েছে। যা পরবর্তীতে পুষিয়ে নেওয়া সম্ভব হবে। তবে এতো সংখ্যক পাখির মৃত্যুতে পরিবেশের উপর যে প্রভাব পড়বে তা কোনভাবেই পুষিয়ে নেওয়া সম্ভব নয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৯০০ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৬, ২০১৬
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।