টবের মাটিতে মুকুলসহ আম, বাতাবি লেবু গাছ সাজানো। তাকালেই সৌন্দর্য দেখে চোখ জুড়িয়ে যায়।
ইট-পাথরের কর্মব্যস্ত এ শহরে সুবজের ছোঁয়া পেতে বাসার সামনে ও বারান্দায় ফুল-ফলের গাছ লাগান রাজধানীবাসী। এ প্রবণতা বাড়ছে প্রতিনিয়ত।
রাজধানীর বিভিন্ন রাস্তা দিয়ে চলাচল করলে যে কারও চোখে পড়বে এ দৃশ্য। রাজধানীর আগারগাঁও রাস্তার পাশ। এখানে নগরীর বৃক্ষপ্রেমীদের চাহিদা মেটাতে রাস্তার পাশেই গড়ে উঠেছে ছোট-ছোট ১২টি নার্সারি। শুধু আগারগাঁও নয়, রাজধানীতে কমপক্ষে ৩০টির বেশি রাস্তার পাশে এমন নার্সারি গড়ে উঠেছে।
সরকারের বিশেষ অনুমতি ও স্থানীয় নেতাদের ম্যানেজ করে নগরবাসীর ফুল-ফলের চাহিদা পূরণ, পরিবেশ রক্ষা ও পুরো ঢাকা শহরকে সবুজে ভরে দিতেই গড়ে উঠেছে এসব নার্সারি। নার্সারির জন্য নির্দিষ্ট স্থান না থাকায় প্রায়ই ‘কখন উঠে যেতে হয়’-এই আতঙ্কে ভুগতে হচ্ছে বলে জানান নার্সারি ব্যবসায়ীরা।
আগারগাঁও, শ্যামলী, নিউমার্কেট, দোয়েল চত্বর ও বুয়েটসহ কয়েকটি রাস্তার পাশে নার্সারি ঘুরে ব্যবসায়ীদের ব্যস্ততার প্রমাণও পাওয়া গেলো।
নার্সারিগুলোতে দেশি-বিদেশি উন্নত ফলজ, বনজ শোভাবর্ধনকারী ফুল ও ফল এবং ওষুধি গাছ পাওয়া যায়। এছাড়া ফুল-ফলের বীজ ও কীটনাশক, উৎকৃষ্ট মাটি, সার ও টবও পাওয়া যাচ্ছে।
দীর্ঘদিন থেকে নার্সারি ব্যবসায় জড়িত আগারগাঁওয়ের গ্রিন অর্কিড অ্যান্ড ক্যাকটাস নার্সারি মালিক মো. শাহ আলম।
এই ব্যবসায়ী বাংলানিউজকে বলেন, অনেক চড়াই-উৎরাই দেখেছি এ ব্যবসার। খরচ দিয়ে লাভ তেমন নেই। আমাদের জন্য একটা নির্দিষ্ট মার্কেট থাকলে সবচেয়ে ভালো হতো। এখন মানুষের মধ্যে বাগান করার চাহিদা বেশ বেড়েছে। হাতের কাছে চারা পেলে মানুষ বেশি কিনতে চায়। দূর থেকে আনতে গেলে খরচে পোষায় না, তাই শখ তুলে রাখে।
মৌসুম অনুযায়ী চারার চাহিদা নির্ভর করে। যেমন-শীতের মৌসুমে ফুল গাছের চাহিদা বেশি। আবার বর্ষায় ফলের গাছের চারার চাহিদা বেশি বলে জানান শাহ আলম।
নার্সারিগুলোতে ফুলের চারা বিক্রি হয় একশো টাকা থেকে শুরু করে হাজার টাকায়। ফলসহ গাছ দুই হাজার টাকা থেকে ছয় হাজার টাকা, ক্যাকটাস একশো টাকা থেকে এক হাজার টাকা, পাতা বাহারের চারা ৫০ টাকা থেকে পাঁচশো টাকার মধ্যে এবং বিভিন্ন দেশি অর্কিডের চারা দুইশো টাকা থেকে চারহাজার টাকা পর্যন্ত পাওয়া যায়। এছাড়া কাঁচা মরিচের চারা ৫০ থেকে তিনশো টাকার মধ্যে পাওয়া যায়। টবসহ চারা বা গাছ নিলে প্রায় দ্বিগুণ দামে নিতে হবে। কি ধরনের গাছের চাহিদা বেশি জানতে চাইলে মাগুরা নার্সারির বিক্রেতা বাবুল হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, কেউ গাছ চিনুক আর না চিনুক সবাই বিদেশি গাছ চায়। ফুল-ফল দুইটার ক্ষেত্রেই বিদেশি গাছের চাহিদা বেশি। ভারত ও থাইল্যান্ডের অর্কিডের চাহিদাও কম নয়।
পরিবেশের জন্য কাজ করছি বলে সরকার ফুটপাতে নার্সারি দিতে দিয়েছে। যদি সরকারের জায়গার দরকার হয় তাহলে আমরা সমস্যায় পড়বো বলে জানান এ বিক্রেতা।
পান্থপথ থেকে গাড়ি নিয়ে নার্সারিতে চারা কিনতে এসেছেন শারমিন আক্তার। তিনি বলেন, বাগান করা প্রচণ্ড শখ আমার। ঢাকায় ছোট ফ্ল্যাটে থাকি, তাই বারান্দায় লাগাবো বলে মরিচ ও ফুলের চারা কিনেছি।
বাংলাদেশ সময়: ১২১৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১২, ২০১৭
এএটি/এএ