দেশের বনজসম্পদের মাঝে চাপালিশ একটি বিলুপ্ত প্রজাতির উদ্ভিদ। এটি ‘চাম্বল’ নামেও পরিচিত।
জানা গেছে, কমলগঞ্জ উপজেলার ফুলবাড়ি চা বাগানের ৮ নম্বর সেকশন থেকে রোববার (০২ এপ্রিল) রাতে গাছটি কাটা হয়। বাগান কর্তৃপক্ষ বন বিভাগের অনুমতি ছাড়াই গাছটি বিক্রি করে দেয় মাধবপুরের মহালদার আসিদ আলীর কাছে। তিনি অবৈধভাবে এ শতবর্ষী গাছটি কর্তণ করেন।
খবর পেয়ে সোমবার (০৩ এপ্রিল) দুপুরে সরেজমিন ফুলবাড়ি চা বাগানের ৮ নম্বর সেকশনে টিলার উপর উঠে দেখা যায়, সদ্যকাটা বিশালাকৃতির চাপালিশ গাছটি মাটিতে পড়ে রয়েছে। বৃষ্টিভেজা লালমাটি উপর দিয়ে চা গাছ ধরে টিলার আরো উপরে দেখা যায় সেই চাপালিশ গাছের মোথা (গুড়ি) অতিকায় বিশাল। যা ছিল স্থানীয় ইতিহাসের প্রতীক।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাগানের এক সর্দার বলেন, গাছটি বয়স শতবর্ষের উপর। আমার বাবাও তার ছোটবেলা থেকে গাছটি দেখে এসেছেন। আমার অনেক স্মৃতি জড়িত ছিল এ গাছের সঙ্গে। এভাবে গাছটিকে কাটা একদম ঠিক হয়নি।
পাহাড় রক্ষা ও উন্নয়ন সোসাইটির সভাপতি সালাউদ্দিন আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, বিপন্ন প্রজাতির শতবর্ষ পুরনো এ চাপালিশ গাছটি ছিলো ‘মাদার-ট্রি’। এমন গাছটি সংরক্ষণ করার পরিবর্তে কর্তণ করার অর্থ আমাদের ঐতিহ্যকে ধ্বংস করার সামিল।
সিলেট বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) আরএসএম মুনিরুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আমরা অভিযান চালিয়ে ফুলবাড়ি চা বাগান থেকে রোববার রাতে অবৈধভাবে কাটা ৫টি টুকরায় ২৪০ সিএফটি (ঘনফুট) চাপালিশ কাঠ জব্দ করেছি।
তিনি আরো বলেন, এ গাছটি বিশালাকৃতির। এর বের ১২ ফুট। ২৪০ সিএফটি হতে ৫০টি গাছ লাগে। এ গাছটি স্থানান্তর করে আমাদের বন বিভাগের অফিসে আনতে হলে একাধিক হাতির প্রয়োজন। মানুষের পক্ষে তা সম্ভব নয়। এ ব্যাপারে বন আইনে আমরা মামলা দায়ের করবো।
বাংলাদেশ সময়: ২০৫৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৩, ২০১৭
বিবিবি/জেডএস