ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য

প্রাণ গেলো বিলুপ্তপ্রায় শতবর্ষী চাপালিশের

বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বাপন, ডিভিশনাল সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০০ ঘণ্টা, এপ্রিল ৩, ২০১৭
প্রাণ গেলো বিলুপ্তপ্রায় শতবর্ষী চাপালিশের করাতের আঘাতে প্রাণহীন শতবর্ষী চাপালিশ। ছবি- বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বাপন

কমলগঞ্জ থেকে ফিরে: অবশেষে প্রাণ হারালো শতবর্ষী চাপালিশ। ফুলবাড়ি চা বাগান থেকে অবৈধভাবে কাটা এ গাছটি জব্দ করেছে স্থানীয় বন বিভাগ।

দেশের বনজসম্পদের মাঝে চাপালিশ একটি বিলুপ্ত প্রজাতির উদ্ভিদ। এটি ‘চাম্বল’ নামেও পরিচিত।

গাছটি শতবর্ষী হওয়ায় জেলার একটি প্রাচীন ঐতিহ্য হয়েও দাঁড়িয়েছিল।

জানা গেছে, কমলগঞ্জ উপজেলার ফুলবাড়ি চা বাগানের ৮ নম্বর সেকশন থেকে রোববার (০২ এপ্রিল) রাতে গাছটি কাটা হয়। বাগান কর্তৃপক্ষ বন বিভাগের অনুমতি ছাড়াই গাছটি বিক্রি করে দেয় মাধবপুরের মহালদার আসিদ আলীর কাছে। তিনি অবৈধভাবে এ শতবর্ষী গাছটি কর্তণ করেন।
খবর পেয়ে সোমবার (০৩ এপ্রিল) দুপুরে সরেজমিন ফুলবাড়ি চা বাগানের ৮ নম্বর সেকশনে টিলার উপর উঠে দেখা যায়, সদ্যকাটা বিশালাকৃতির চাপালিশ গাছটি মাটিতে পড়ে রয়েছে। বৃষ্টিভেজা লালমাটি উপর দিয়ে চা গাছ ধরে টিলার আরো উপরে দেখা যায় সেই চাপালিশ গাছের মোথা (গুড়ি) অতিকায় বিশাল। যা ছিল স্থানীয় ইতিহাসের প্রতীক।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাগানের এক সর্দার বলেন, গাছটি বয়স শতবর্ষের উপর। আমার বাবাও তার ছোটবেলা থেকে গাছটি দেখে এসেছেন। আমার অনেক স্মৃতি জড়িত ছিল এ গাছের সঙ্গে। এভাবে গাছটিকে কাটা একদম ঠিক হয়নি।
করাতের আঘাতে প্রাণহীন শতবর্ষী চাপালিশ।  ছবি- বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বাপন
পাহাড় রক্ষা ও উন্নয়ন সোসাইটির সভাপতি সালাউদ্দিন আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, বিপন্ন প্রজাতির শতবর্ষ পুরনো এ চাপালিশ গাছটি ছিলো ‘মাদার-ট্রি’। এমন গাছটি সংরক্ষণ করার পরিবর্তে কর্তণ করার অর্থ আমাদের ঐতিহ্যকে ধ্বংস করার সামিল।

সিলেট বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) আরএসএম মুনিরুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আমরা অভিযান চালিয়ে ফুলবাড়ি চা বাগান থেকে রোববার রাতে অবৈধভাবে কাটা ৫টি টুকরায় ২৪০ সিএফটি (ঘনফুট) চাপালিশ কাঠ জব্দ করেছি।

তিনি আরো বলেন, এ গাছটি বিশালাকৃতির। এর বের ১২ ফুট। ২৪০ সিএফটি হতে ৫০টি গাছ লাগে। এ গাছটি স্থানান্তর করে আমাদের বন বিভাগের অফিসে আনতে হলে একাধিক হাতির প্রয়োজন। মানুষের পক্ষে তা সম্ভব নয়। এ ব্যাপারে বন আইনে আমরা মামলা দায়ের করবো।

বাংলাদেশ সময়: ২০৫৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৩, ২০১৭
বিবিবি/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।