বানর হলেও তারা অন্য প্রজাতির বানরের মতো গাছে গাছে দৌড়ঝাপ করতে পারে না। চলতে হয় অত্যন্ত শান্তভাবে।
লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের রাস্তার পাশে গাছগুলো অনেক আগেই শেষ হয়ে গেছে। তাই এপার থেকে ওপারে যেতে হলে এখন লজ্জাবতীদের একমাত্র অবলম্বন রাতের আঁধারে হেঁটে হেঁটে রাস্তা পার হওয়া। তাদের হাঁটার গতি মন্থর বলে প্রায়ই তারা দ্রুতগামী যানবাহনের চাকার নিচে পড়ে মারা যায়।
আন্তর্জাতিক জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ সংস্থার (আইইউসিএন) লাল তালিকায় লজ্জাবতী বানর বিপদগ্রস্ত ও সংকটাপন্ন হিসেবে চিহ্নিত রয়েছে।
বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) মো. তবিবুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, প্রতি বছর প্রায় পাঁচ-ছয়টা করে লজ্জাবতী বানর মারা যাচ্ছে। রাতের আঁধারে রাস্তা অতিক্রম করতে গিয়েই তাদের অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যু ঘটে।
বহু আগেই থেকেই লাউয়াছড়ার রাস্তার পাশের গাছগুলো ধ্বংস হয়ে গেছে। ফলে লাজ্জাবতীরাও সহজভাবে গাছ ধরে ধরে বিচরণ করতে পারছে না। তাদের নিচে নেমে রাস্তা পেরুতে হয়। বন পরিদর্শনের সময় তিনি লজ্জাবতীর এ ছবিগুলো তুলেছিলেন বলে জানান।
বন্যপ্রাণী গবেষক তানিয়া খান বাংলানিউজে বলেন, লজ্জাবতী বানরের চোখগুলো পেঁচার মতো বড়। এর মাথা গোল। কান ছোট। গায়ের লোম ধূসরাভ কিংবা পীতাভ-বাদামি। এরা সুযোগসন্ধানী মাংসাশী প্রাণী। খাদ্যতালিকায় রয়েছে পোকামাকড়, পাখির ডিম ও ছোট স্তন্যপায়ী প্রাণী। এরা বছরে একবার বাচ্চা প্রসব করে।
আমরা বন্যপ্রাণী বিভাগ জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের বিভিন্ন সময় দাবি জানিয়ে আসছি যে লাউয়াছড়ার মহামূল্যবান জীববৈচিত্র্য রক্ষার স্বার্থে সন্ধ্যার পর থেকে সারা রাত লাউয়াছড়াতে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে বিকল্প পথে চালু করা হোক। এই দাবিটি বাস্তবায়িত হলে অন্তত নিশাচর প্রাণীগুলো গাড়ির চাকা পিষ্ট হয়ে মারা যেতো না বলে জানান এসিএফ তবিবুর রহমান।
বাংলাদেশ সময়: ১১০৮ ঘণ্টা, আগস্ট ০৩, ২০১৭
বিবিবি/এএ