তবে এক ধরনের ফলের নামও যে ‘ড্রাগন’ এটাও জানেন অনেকেই। এটি একটি সুস্বাদু বিদেশি ফল।
মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার আলীনগর ইউনিয়ন। এই ইউনিয়নের গাছ-গাছালিপূর্ণ যোগীবিল গ্রাম। সম্প্রতি এই গ্রামের সিদ্দিকীবাদ ফ্রুটস ভ্যালিতে গিয়ে খুঁজে পাওয়া গেল ড্রাগন ফুলের হাসি। নিজের অসংখ্য ঝুটি ভর্তি মাথাটি আকাশের দিকে উঁচু করে মেলে ধরে রয়েছে ড্রাগন।
যোগীবিল গ্রামের সিদ্দিকীবাদের ওই বাগানে গিয়ে মনে হয়েছে, নানা জাতের ফুল-ফল ও দুর্লভ বৃক্ষের সমাহারে ছড়িয়ে দিচ্ছে প্রাকৃতিক হাসি। এই বাগানের মালি ইউসুফ আলী। তার কাছে জানতে চাইলেই বেশ গর্বের সঙ্গে জানালেন, এটি ড্রাগন ফল।
ড্রাগন প্রসঙ্গে সিদ্দিকীবাদ ফ্রুটস ভ্যালির সত্ত্বাধিকারী মুনিম সিদ্দিকী বাংলানিউজকে বলেন, এটি থাইল্যান্ডের ড্রাগন। এটি ফল যেহেতু আমাদের দেশে নতুন, তাই তার স্বাদ নিয়ে বেশ বিভ্রান্তিকর মন্তব্য শোনা যাচ্ছে। আমাদের দেশে যখন নতুন ফসল ফলে তখন নতুনত্বের কারণে এই ফলের হারভেস্টের সঠিক সময় নির্ধারণ করতে পারেননি নতুন চাষিরা।
এর চাষাবাদ সম্পর্কে বৃক্ষপ্রেমী এই ব্যক্তি বলেন, ড্রাগন ফল যখন বাইরের আবরণ লাল হয়ে যায় তখন চাষিরা ফল পেকে গেছে মনে করে বাজারজাত করে ফেলেন। আসলে ফলটি তখনও পাকেনি। বাজারজাতকরণের ফলে কাঁচা ফল ক্রেতারা বিপুল উৎসাহে অনেক দাম দিয়ে কিনে ঘরে নিয়ে খেতে পারেন না। কোনো স্বাদ নেই পানসে আবার বুনো গন্ধ লাগে। ফলে এই ফল সম্পর্কে ভুল ধারণা জন্মে।
‘আসলে গাছ পাকা ড্রাগনের বাজারজাতকরণ খুব সহজ নয়, পাকা ফল চাপে পড়ে নষ্ট হবার সম্ভাবনা বেশি। বাগানিরা কাঁচা থাকতেই হারভেস্ট করার কারণে এই ফল দোকানে এসে শুকিয়ে বাসি হয়ে যায়। আর এ ফল দেখলেই চিনতে পারবেন, ফলের তরতাজা ভাব থাকে না। কেমন যেন অনুজ্জ্বল ভাব দেখায়। ’
ড্রাগন ফলের পরিপক্কতার বিষয়ে তিনি বলেন, ড্রাগন ফল পুরো পেকেছে কিনা বুঝতে হলে ফলের বোটাতে টান দিন, বোটা যদি সহজে ফলের শরীর থেকে বের হয়ে আসে তাহলে বুঝতে হবে ফলটি যথার্থভাবেই পেকেছে। আর না আসলে বুঝা যাবে ফলটি কাঁচা রয়েছে।
ড্রাগনের প্রকারভেদ সম্পর্কে মুনিম সিদ্দিকী বলেন, ড্রাগন ফল সাধারণত তিন প্রকার পাওয়া যায়। একটি বাইরের খোসা লাল ও ভিতরে অংশ সাদা, আরেক প্রকার বাইরের ও ভিতরের অংশ লাল এবং তৃতীয়টি হলো বাইরের খোসা হলুদ ও ভিতরের অংশ সাদা। তবে সাদার চেয়ে লাল ড্রাগনের স্বাদ বেশি বলেই আমার কাছে মনে হয়।
ড্রাগনের চাষাবাদ সম্পর্কে এ বৃক্ষপ্রেমী বলেন, আসলে ড্রাগনের স্বাদ নির্ভর করে তার মাটির প্রকৃতি আর রোদ্রগ্রহণের ক্ষমতার উপর। যে মাটি উর্বর এবং রোদের কিরণ বেশি সেখানের ড্রাগন মিষ্টি হয় বেশি। ড্রাগনের আকার বড় ছোট হয় তার খাদ্যগ্রহণের উপর নির্ভর করে।
নতুন ড্রাগন চাষিদের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যারা নতুন করে ড্রাগনের চাষ করবেন, তারা ফলবতী ড্রাগন গা কাটিং নিতে পারেন। ফলবতী ছাড়া গাছ থেকে কাটিং নিলে ফল আসতে দেরি হতে পারে, এমনকি ফল নাও ধরতে পারে। তাই ফলের গাছ লাগানোর আগে কাটিং নিলে পুরানো ডাল থেকে নিতে হবে এবং এর দৈর্ঘ্য কমপক্ষে একহাত হতে হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭০১ ঘণ্টা, আগস্ট ১১, ২০১৭
বিবিবি/জিপি/এমএ