নাক ফুল যেভাবে তার শিল্পশৈলীময় রূপটির উপর ভিত্তি করে সৌন্দর্য ছড়ায়, বরই ফুলের ক্ষুদ্র পাপড়িগুলোও তেমনি। ‘বরই ফুল’ যে দেখতে অবিকল মেয়েদের নাক ফুলের মতো এটা অনেকেই হয়তো জানেন না।
প্রথমত, একে তো প্রতিদিন বৃক্ষশূন্য হচ্ছে আমাদের প্রকৃতি। কারণে-অকারণে কেটে ফেলা হচ্ছে নানা প্রকারের উপকারী বৃক্ষগুলো। কেটে ফেলা এই বৃক্ষগুলোর মাঝে থেকে যায় বরই গাছও। এভাবেই ফুল ফুটার পূর্বে গাছগুলো বিদায় নেয় পৃথিবী থেকে।
দ্বিতীয়ত, বরই গাছ সাধারণত উঁচু এবং মাঝারি আকারের হয়। আর ফুলগুলোও অনেক ছোট। ফুলগুলো পরস্পরের সঙ্গে সম্মিলিতভাবে প্রকাশিত হয়। নিচ থেকে ক্ষুদ্র এই ফুলগুলোকে দেখার কোনো সুযোগ থাকে না। ফলে অনেকেই ভালো করে পরখ করে দেখার সুযোগ পাননি একে।
কখনোই বরই গাছের অসংখ্য ফুলের ভেতর থেকে কোনো একটি ফুল উজ্জ্বল প্রতিবিম্ব হয়ে দৃষ্টি কাড়ে না পথচারির। অজানাই থেকে যায় এই ফুলটির এমন দৃষ্টিনন্দনগুণের কথা!
তবে আমাদের ক্যামেরার লেন্স বলে দেয় এর গোপন কথা! লেন্সটিকে সেই ফুলগুলোর মাঝে প্রতিস্থাপন করে সুস্পষ্ট নিশানায় নিয়ে ছবিটি ধারণ করলেই চমকে উঠা যায়! ‘বাহ! ফুলটি এতো সুন্দর!’ এমন অনুভূতিতে ভরে যায় মন!
নারীদের নাসিকাসজ্জার একটি বিশেষ অলংকারের নাম ‘নাক ফুল’। অনেক নারীরাই এটি পড়ে তার নাকের সৌন্দর্য প্রকাশ করে থাকেন। এই নাক-ফুলের মতোই বরই-ফুল; ছোট্ট ফুল আর ছোট্ট ছোট্ট পাপড়িতে মেলে ধরে তার অদেখা বিমুগ্ধ রূপ।
বরই এর অপর একটি বাংলা নাম কুল। এর ইংরেজি নাম Indian Plum এবং বৈজ্ঞানিক নাম Ziziphus mauritiana। এই গাছটি কাটাপূর্ণ। পাতার আড়ালে, ডালের ফাঁকে ফাঁকে ছড়ানো থাকে কাটা। গাছটি উচ্চতা ১২ থেকে ১৫ মিটার হয়ে থাকে। বৎসরের সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মৌসুমে গাছে ফুল আসে। ফল ধরে শীতে। শীতকালে পাতা ঝরে, বসন্তে নতুন পাতা আসে।
বরই ফল গোলাকার। আকারে ছোট। প্রায় ২ দশমিক ৫ সেন্টিমিটার হয়ে থাকে। ফলগুলো পাকলে হলুদ বর্ণ থেকে লাল বর্ণ ধারণ করে। কাচা ও পাঁকা উভয় ফলই খাওয়া যায়। এর স্বাদ টক। কখনো কাঁচামিঠা। দুপুর রোদের উত্তাপে রেখে শুকিয়ে বরই সংরক্ষণ করা হয় সুস্বাদু চাটনি প্রস্তুতের জন্য।
বাংলাদেশ সময়: ১২৪৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৬, ২০১৭
বিবিবি/বিএস