কিন্তু রাজধানীর কয়েকটি সড়ক ঘুরলেই এই আন্দোলন-উদ্যোগ মূল্যহীন বলে প্রতীয়মান হবে। কারও আহ্বান, কোনো আইন-কানুনের তোয়াক্কা না করে গাছে গাছে পেরেক আর তারকাঁটা ঠুকে বিজ্ঞাপন প্রচারের প্রতিযোগিতা দেখা যাবে এসব সড়কে।
যে গাছ-গাছালি নগরবাসীকে শুদ্ধ বাতাস তথা অক্সিজেন দিয়ে বাঁচিয়ে রেখেছে, সেই প্রকৃতির ওপর এমন ‘অবিচার’ সম্প্রতি ক্যামেরাবন্দি হয়েছে বাংলানিউজের। রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকার ৭ নম্বর রোডের গাছে গাছে পেরেক ঠুকে সেঁটে দেওয়া হয়েছে ‘কাজী অফিস’, ‘টিউটর দিচ্ছি/নিচ্ছি’, ‘বাসা/অফিস ভাড়া’, ‘ড্রাইভিং শিখুন’ ইত্যাদি জাতীয় লিফলেট, ব্যানার ও সাইনবোর্ড। বনানী হয়ে গুলশান ২ নম্বর দিয়ে ঢোকার সময় চোখে পড়ে ঠিক একই ধরনের কিছু বিজ্ঞাপন। দেখা যাবে জাতীয় সংসদ ভবন এলাকার মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ, নিউমার্কেট, আজিমপুর এবং ইডেন কলেজ সংলগ্ন রাস্তাগুলোতেও। এসব লিফলেটের বেশিরভাগই ‘শিক্ষাদানের’ আগ্রহ দেখিয়ে দেওয়া। আইন-কানুনের তোয়াক্কা না করে প্রকৃতির ওপর অবিচার করা এই ‘শিক্ষাদানে আগ্রহী’রা আসলে কী শিক্ষা দেবেন? প্রশ্নটা স্বভাবতই আসে সচেতন মহলের তরফ থেকে। স্থানীয় কয়েকজনের দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তারা বলেন, এসব বিজ্ঞাপনদাতারা কারও তোয়াক্কা করে না। কিন্তু ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে স্বল্পসংখ্যক গাছগুলোর। গায়ে পেরেক মারার কারণে গাছে ছিদ্র তৈরি হয়। তা দিয়ে পানি ও এর সঙ্গে বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক ও অণুজীব ঢোকে। এতে গাছের ওই জায়গায় দ্রুত পচন ধরে। হয়তো একসময় গাছটি মরেও যায়। সচেতন নাগরিকরা মনে করেন, এভাবে গাছের গায়ে পেরেক ঠুকে বিজ্ঞাপন দেওয়া থেকে সব মহলকে বিরত থাকতে হবে। আর কর্তৃপক্ষকে নিশ্চিত করতে হবে, যেন নগরের গাছপালা জীবন্ত সাইনবোর্ড না হয়ে পড়ে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ২২, ২০১৭
এইচএ