বাংলাদেশের প্রাকৃতিক বনগুলো থেকে যেসব বন্যপ্রাণী চিরতরে বিলীন হতে চলেছে তাদের মধ্যে কচ্ছপও অন্যতম। প্রাকৃতিক বন ধ্বংস এবং পাহাড়ি পরিবেশে বসতি স্থাপনের ফলে মারাত্মভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মূল্যবান বন্যপ্রাণী।
স্বনামধন্য সরীসৃপ গবেষক শাহরিয়ার সিজার রহমান বাংলানিউজকে বলেন, বড় পাহাড়ি কচ্ছপ পৃথিবীব্যাপীই মহাবিপন্ন প্রাণী। পৃথিবীতে বর্তমানে টিকে থাকা কচ্ছপ প্রজাতিগুলোর মধ্যে এরাই সবচেয়ে পুরনো গোত্রের। বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি অঞ্চলে একটি সংকটাপন্ন অবস্থায় এরা টিকে আছে।
তিনি আরো বলেন, ডাঙায় বিচরণের জন্য এদের পায়ের গঠন বেশ মজবুত। পাহাড়ি বন্য পরিবেশে লতাপাতা, গাছের বাকল, বাঁশের কচিপাতা ও ফল খেয়ে জীবন ধারণ করে। এই পাহাড়ি কচ্ছপটি দুই ফুট দৈর্ঘ্য বিশিষ্ট ও প্রায় পঁয়ত্রিশ কেজি ওজনের হয়ে থাকে। আইইউসিএন এর তালিকা অনুযায়ী এ কচ্ছপটি মহাবিপন্ন।
শাহরিয়ার সিজার রহমান বলেন, গাজীপুরের ভাওয়াল এলাকায় আমরা একটি কৃত্রিম প্রজনন কেন্দ্রের মাধ্যমে বিপন্ন প্রজাতিগুলোকে টিকিয়ে রাখার নিরন্তর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। তবে প্রাকৃতিক বনই যদি না থাকে তাহলে বন্যপ্রাণীগুলোকে কখনোই প্রকৃতিতে বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব হবে।
এ গবেষক কচ্ছপ প্রসঙ্গে বলেন, কচ্ছপ পৃথিবীর প্রাচীন প্রাণীদের মধ্যে অন্যতম। প্রায় তিনশ’ প্রজাতির কচ্ছপ বর্তমানে পৃথিবীতে রয়েছে বলে ধারণা করা হলেও কিছু কিছু প্রজাতি মারাত্মকভাবে বিলুপ্তির পথে।
প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশন সূত্র জানায়, সাধারণত পানিতে থাকা প্রজাতিগুলোকে কাছিম, আর ডাঙ্গায় বাস করা প্রজাতিগুলোকে কাইট্টা বা কচ্ছপ বলে। বাংলাদেশে প্রায় ২৫ প্রজাতির স্থলজ ও মিঠাপানির এবং পাঁচ প্রজাতির সামুদ্রিক কাছিম বাস করে। বাংলাদেশে কাছিমের প্রায় সব প্রজাতিই বিপন্নের তালিকায় রয়েছে।
আইইউসিএন এর রেড বুকের তথ্যানুযায়ী, এদেশের প্রায় ৩০ প্রজাতির কাছিমের মধ্যে ১৪ প্রজাতি মহাবিপন্ন অবস্থায় রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৪০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৭, ২০১৭
বিবিবি/জেডএম