এই উল্লুক (Hoolook Gibbon) লাউয়াছড়ার সর্বাধিক আকর্ষণীয় প্রাণি হিসেবে স্বীকৃত। একে এক ঝলক দেখতে শীত মৌসুমে পর্যটকদের ভিড় বেড়ে যায়।
সম্প্রতি লাউয়াছড়া ভ্রমণ শেষে এক বন্যপ্রাণি গবেষক উল্লুকের সংখ্যাবৃদ্ধির কথা জানান। তিনি দাবি করেন, লাউয়াছড়ার এই নিরুপদ্রব, অনুকূল পরিবেশ বজায় থাকলে উল্লুকসহ নানাপ্রজাতির বন্যপ্রাণির সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে।
বাংলানিউজের সঙ্গে আলাপচারিতায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো. কামরুল হাসান বলেন, কিছুদিন আগে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান পরিদর্শন করে ধারণা করা গেছে আগের তুলনায় উল্লুকের সংখ্যা কিছুটা বেড়েছে।
সংখ্যা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের রেকর্ড অনুযায়ী আগে ১২টি পরিবারে প্রায় চল্লিশ-বেয়াল্লিশটি উল্লুক ছিল। বর্তমানে প্রায় ১৪টি পরিবারে প্রায় অর্ধশত উল্লুক রয়েছে।
উল্লুকের জীবনযাপন সম্পর্কে অধ্যাপক ড. কামরুল বলেন, ‘এরা লেজবিহীন মাঝারি আকারের স্তন্যপায়ী প্রাণি। পুরুষ প্রাণিটি কালো এবং নারী প্রাণিটি হলদে ধূসর। এরা দিবাচর এবং পুরোপুরি বৃক্ষচারী। অতি উচ্চৈ:স্বরে ডাকে। জোড়া অথবা পরিবারিক দল নিয়ে ঘুরে বেড়ায়। একেকটি দলের সদস্যসংখ্যা ৩ থেকে ৫টি।
‘আমরা লাউয়াছড়ার ভেতর ঘুরে দেখেছি এখন আর লাউয়াছড়ায় গাছ কাটা নেই। ন্যাচারাল ফরেস্টে যদি শুধু প্রটেকশন থাকে,(তাহলে প্লান্টেশন দরকার নাই) ন্যাচারেলি যে গাছগুলো আছে সেগুলোই কয়েক বছরের মধ্যে বড় হয়ে প্রমাণ সাইজের গাছে রূপান্তিত হবে। ’
উল্লুক প্রসঙ্গে তিনি আরো বলেন, ‘উল্লুকের জন্য এখন মেইনলি যেটা দরকার তা হলো ফুডট্রি। অর্থাৎ এদের খাবারের উৎস ফলের গাছ। এগুলোই বেশি বেশি থাকতে হবে। লাউয়াছড়া ঘুরে দেখলাম ডুমুর গাছগুলো এখনো ভালোই আছে। পাশাপাশি চাপালিশ, জাম প্রভৃতিও রয়েছে। এই কন্ডিশনগুলো ভালো থাকলেই উল্লুকের সংখ্যা বাড়বে।
অন্য ফরেস্টগুলোর অবস্থা তো আমরা জানি। সব দিক বিবেচনায় এখনো এ বনটি বেশ সমৃদ্ধই রয়েছে। এই ভালোর পর্বগুলো চলতে থাকলে দেশের মধ্যে বায়ো-ডাইভারসিটি কনজারভেশনে (জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে) অচিরেই লাউয়াছড়া হয়ে উঠবে অনন্য । ’
বাংলাদেশ সময়: ০৬৫৪ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৫, ২০১৮
বিবিবি/ জেএম