মধুময় বসন্ত আসার আগেই তার জেগে ওঠা। প্রকৃতিতে প্রাণের সজীবতা নিয়ে ফোটে এ ফুলটি।
সকালের শীতল স্নিগ্ধতায় মধুলোভী ছোট পাখি ও পতঙ্গদের দল এ ফুলের মাঝে ঠোঁট গুজে সুধা সংগ্রহে ব্যস্ত। ধীরে ধীরে রোদের উত্তাপ প্রখর হলে এ সংগ্রহকার্য সমাপ্ত হয় – সেদিনের মতো।
এর ফুলে প্রধান আকর্ষণ ঝুলন্ত পুষ্পমঞ্জরি। হাওয়ার পরশে এর থোকাগুলো দুলতে থাকে, ঠিক যেন রমনীদের কানের দুলের মতো। আর কমলা সৌন্দর্যে মাতোয়ারা করে রাখে চারপাশ। ফুলটিকে দেখে চোখ জুড়িয়ে যায়। অনুভূতিতে অসাধারণ আবেদন তৈরি করে।
এটি মূলত লতাগাছ এবং এর নাম ‘সোনাঝুরি লতা’। একে ‘কমলা সুন্দরী’ও বলা হয়। বহু শাখাযুক্ত, বহুপত্রী ও গাঢ় সবুজ। ফুল ফোটার প্রথমদিকে হয় হালকা কমলা রঙের এবং ধীরে ধীরে গাঢ় ও উজ্জ্বল লালচে-কমলা রঙ ধারণ করে। উজ্জ্বল অথচ কোমল ও মিষ্টি রঙ সহজেই নজর কেড়ে নেয়।
লেখক ও নিসর্গবিদ দ্বিজেন শর্মা তার এটি প্রবন্ধে উল্লেখ করেন, গোল্ডেন শাওয়ারের বৈজ্ঞানিক নাম Pyrostegia venusta। এগুলো লতা জাতীয় বর্ষজীবীউদ্ভিদ। কাণ্ড দুর্বল বিধায় নিজেই কিংবা আঁকশি, কাঁটা ইত্যাদি উপাঙ্গের সাহায্যে আশ্রয় জড়িয়ে উপরে ওঠে। এগুলি মাটিতে তেমন জায়গা দখল করে না বলে ছোট বাগানেও বেশি সংখ্যায় লাগানো যায়।
কৃষিবিদ সুকল্প দাস বলেন, এ প্রজাতিটির ইংরেজি নাম ফ্লেম ভাইন (flame vine)। তবে অধিকাংশ মানুষ তাকে ‘গোল্ডেন শাওয়ার’ হিসেবে চেনেন। একে ‘সোনাঝুরি লতা’ বলা হয়। তবে গোল্ডেন শাওয়ার নামে ফুলটি বহুল পরিচিত। এটি শীত ও বসন্তের ফুল। এটি ঝুলন্ত শাখাবহুল ও লম্বা লতা। ফুলটি অনেক দূর থেকে সহজে দৃষ্টি কাড়ে।
প্রাপ্তিস্থান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, রমনা পার্ক, মিরপুর জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যান, বলধা গার্ডেন রাজধানীর প্রভৃতি স্থানে এই ফুলটি রয়েছে। আবার কারো কারো নিকট ব্যক্তিগত সংগ্রহেও রয়েছে এই বিশেষ ফুলটি।
ফুলের গঠন সম্পর্কে তিনি বলেন, এ ফুলটি উজ্জ্বল কমলা রঙের। এ গাছের লতাটি ৭৫ মিটার পর্যন্ত লম্বা হতে পারে। ঝুলন্ত মঞ্জরির ফুলগুলো নলাকার এবং ৫ সেন্টিমিটার লম্বা। এটি গন্ধহীন পুষ্প।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৩০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০১৮
বিবিবি/এমজেএফ