মাঝারি আকারের গাছে ধরেছে থোকায় থোকায় লাল জামরুল। সবুজ পাতাদের ফাঁক দিয়ে লাল লাল ফলের এমন দারুণ উপস্থিতি হৃদয়কে নাড়া দিয়ে উঠে।
শ্রীমঙ্গল শহরের সুরভিপাড়া আবাসিক এলাকায় চট্টগ্রাম বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সহকারী পরিচালক অরিন্দম কুমার ধর এর বাসা। এখানেই রক্তবর্ণা জামরুল গাছের মাঝে নিজস্ব সৌন্দর্য বিস্তার করে রয়েছে।
অরিন্দম এবং তার স্ত্রীর বনি দত্ত চৌধুরী দু’জনেই বৃক্ষপ্রেমী। দূরদূরান্ত থেকে বৃক্ষ সংগ্রহ করে তাতে ফুল-ফল ফুটিয়ে থাকেন। তাদের এ বাসাতেই পরম মমতায় লালিত নানা প্রজাতি ফুল ও ফলের ছোটবড় বৃক্ষ। বনি দত্ত চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, ‘স্থানীয় নার্সারি থেকে এই রক্ত-জামরুলের গাছ সংগ্রহ করেছি। বিগত তিন বছর ধরে ফল ধরছে। এবার পুরো গাছে প্রায় শতাধিক জামরুল এসেছে। নিচে দাঁড়িয়ে উপরের এই ফলের দিকে তাকালেই মনটা ভালো হয়ে যায়। ’ স্বাদ প্রসঙ্গে বনি বলেন, ‘এটি দারুণ রসালো। খেতে সাদা-জামরুলের মতোই। প্রচুর পানি এবং হালকা মিষ্টি। বছরে দু’বার ফল ধরে। গাছের উচ্চতা পাঁচ থেকে ছয় ফুট হয়ে থাকে। আমরা নিজেরাই খেয়ে থাকি। ’
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. এমএ রহিম বলেন, জামরুল আমাদের দেশের পরিচিত মৌসুমী ফল। জামরুলের বৈজ্ঞানিক নাম Syzygium samarangense। ইংরেজিতে অনেক নাম রয়েছে: Water apple, Mountain apple, Cloud apple, Love apple, rose apple প্রভৃতি। এটি Myrtaceae পরিবারভুক্ত।
থাইল্যান্ড থেকে আসা জামরুলের মধ্যে এই ‘লাল জামরুল’ একটি উন্নত জাত। পাকা লাল জামরুল খুব মিষ্টি এবং স্বাদ অতুলনীয়। আকারেও বড়। বর্তমানে এই লাল জামরুল শহরের কারো কারো ছাদে বা ফলের বাগানে শোভা পাচ্ছে বলে জানান তিনি। এর উপকারীতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, জামরুলের উপকারীতা অনেক। এই ফলে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন-এ, ভিটামিট-সি ছাড়াও ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, সোডিয়ামসহ বিভিন্ন খনিজ উপাদান বিদ্যমান। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে এবং ত্বকের সুস্বাস্থ্য রক্ষায় জামরুলের খুব ভালো কাজ করে। শরীরের পানিশূন্যতা ও দাঁতের সমস্যা সমাধানে ভালো কাজ করে। বাত নিরাময়ে এবং চোখের নিচের কালো দাগ দূর করে থাকে। ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য এটি উপকারী। গ্রীষ্মকালে এ ফলটির কদর বেশি। জামরুল ফলের মিষ্টতা বেশি না হলেও এই ফলটি খেতে সুস্বাদু। জামরুলের নিজস্ব একটি মিষ্টি গন্ধ রয়েছে। জামরুলের বহিরাবরণ মোমের মতো মসৃণ বলে জানান ড. রহিম।
বাংলাদেশ সময়: ০৮০৫ ঘণ্টা, মার্চ ০২, ২০১৮
বিবিবি/এসএইচ