ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য

মেহগনি ফুলের অদেখা সৌন্দর্য

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪১১ ঘণ্টা, এপ্রিল ১১, ২০১৮
মেহগনি ফুলের অদেখা সৌন্দর্য  চোখ এড়িয়ে যাওয়া মেহগনি ফুল। ছবি: বাংলানিউজ  

মৌলভীবাজার: ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দানার মতো দেখতে ‘মেহগনি ফুল’। গাছের নিচে প্রায়ই পড়ে থাকতে দেখ যায় ফুলগুলো। দূর থেকে দেখলে মনে হয়, ধূসর মাটি যেন হঠাৎ রং বদলে হলুদাভ-সবুজে পরিণত হয়েছে।

মাটিতে মেহগনি ফুল পড়ে থাকতে দেখলে দারুণ এক ভালোলাগা জন্মে মনের ভেতর। কাছে গিয়ে স্পর্শ করে ছোট ছোট ফুলগুলোকে ভালোবাসা জানাতে ইচ্ছে করে।

কিন্তু এ ফুলটি এখনও রয়েগেছে আমাদের অনেকেরই অদেখাই।  চোখ এড়িয়ে যাওয়া মেহগনি ফুল।                                          ছবি: বাংলানিউজ  আমাদের চারপাশের ফুলের রাজ্যে মেহগনি ফুল আজও পরিচিত হয়ে উঠতে পারেনি। এর অন্যতম কারণ, বিশালাকৃতিময় একটি গাছের অতিক্ষুদ্রকায় ফুল সে। তাছাড়া গাছের উঁচুতে পাতার ভাজে ভাজে ফুটে থাকে নাকফুলের মতো ছোট্ট ফুলগুলো। ফলে তা সহজেই আমাদের চোখ এড়িয়ে যায়। ১০ মার্চ (মঙ্গলবার) সকালে শ্রীমঙ্গলের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ভিক্টোরিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের মাটিতে মেহগনি ফুলের ছড়িয়ে পড়া সৌন্দর্য দেখে হৃদয়জুড়ায়। সেখানে দেখা মেলে, গাছ থেকে ছোট্ট ফুলগুলোর আপন মনে বাতাসে ঘুরতে ঘুরতে নিচে নেমে আসার অপূর্ব দৃশ্য।  

মাটিতে ছেয়ে থাকা লাখ লাখ মেহগনি ফুলের সৌন্দর্য দেখে তা কুড়াতে ছুটে এসেছেন বেশ কয়েকজন ফুলপ্রেমী।

আরও একটি উল্লেখ্যযোগ্য বিষয় হলো, মেহগনি ফুলে রয়েছে মৃদু কিন্তু দারুণ সুগন্ধ। অনেকটা শিউলি বা শেফালি ফুলের গন্ধের মতো। বাতাসে ভেসে ভেসে সেই গন্ধ মাঝেমাঝে প্রাকৃতির মাঝে ছড়িয়ে দেয় সতেজতা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন বাংলানিউজকে মেহগনি ফুল সম্পর্কে বলেন, এ ফুলটির বৈজ্ঞানিক নাম Swietenia macrophylla এবং ইংরেজি নাম Big-leaf Mahogany বা Honduras Mahogany। এরা Meliaceae (নিম) পরিবারভুক্ত উদ্ভিদ। মেহগিনি, মেহগেনি, মেহাগিনী নামেও এর পরিচিতি রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, বসন্তের শেষের দিকে মেহগনি গাছে ফোটে ছোট ছোট অসংখ্য ফুল। তবে ফুলগুলো খুব ছোট হওয়ায় সহজে চোখ পড়ে না। ‘মেলিয়েসি’ পরিবারের ফুলগুলো খুব ছোট আকৃতিরই হয়। পাপড়ির সংখ্যা পাঁচটি এবং পাপড়িগুলো সংযুক্ত থাকে। পুংদন্তগুলো গর্ভপত্রের চারদিকে টিউব আকারে সংযুক্ত থাকে। টিউবের মাথায় পুংকেশর থাকে। পুংকেশরের রং হালকা লাল। ফুলের গর্ভমুণ্ডটা অনেকটা থালার মতো। ফুলের রং অনেকটা ফ্যাকাসে সবুজ ধরনের।  চোখ এড়িয়ে যাওয়া মেহগনি ফুল।  ছবি: বাংলানিউজ  জানা যায়, মেহগনির জন্মস্থান বাংলাদেশে দেশে নয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার দক্ষিণে এ গাছগুলো প্রাকৃতিকভাবে জন্মায়। এর আদি নিবাস উত্তর আমেরিকায়। ইউরোপিয়ান বণিকদের মাধ্যমে গাছটি ভারতসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ে।

মেহগনি আমাদের দেশের আদি গাছ না হলেও, তা এখন আর বিদেশি গাছ বলে মনে হয় না উদ্ভিদবিদ জসীম উদ্দিনের কাছে।

মেহগনি গাছের রয়েছে ভেজষ গুণাগুন। এটি ডায়াবেটিক রোগিদের সুগার নিয়ন্ত্রণসহ হজমশক্তি বৃদ্ধিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে বলেও জানা যায়।   

বাংলাদেশ সময়: ১০১১ ঘণ্টা, এপ্রিল ১১, ২০১৮
বিবিবি/এনএইচটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।